আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহাপতনের ভোরে

বাস্তবতা ফেরী করে বেড়াচ্ছে আমার সহজ শর্তের সময়গুলোকে

কেন জানি নয় দশ বছরের মেয়েরা রজব আলীকে দেখলেই ভয়ে সেঁধিয়ে যায়। সত্তর বছর বয়স্ক একজনকে দেখে নয় দশ বছরের মেয়েরা এতো ভয় পাবে কেন, এটি ঠিক বোধগম্য নয়। অবশ্য রজব আলীর বয়স সত্তর হলেও শরীর এখনো ভেঙ্গে পড়েনি। এখনো বেশ শক্তি সামর্থ্য নিয়েই গ্রামে চষে বেড়ান। রজব আলী নিজেও বুঝতে পারেন না, কেন নয় দশ বছরের মেয়েরা তাকে এতোটা ভয় পায়।

এ নিয়ে প্রায়শই তাকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। গ্রামের মাতব্বর হিসেবে বিভিন্ন বাড়িতে নিয়মিত আসা যাওয়া করতে হয় তাকে। সেসব বাড়ি নয় দশ বছরের মেয়ে থাকলেই সমস্যা। হয়তো উঠানে বসে খেলছে। তাকে দেখলেই ভয় পেয়ে ভিতর বাড়িতে পালাবে।

এ নিয়ে রজব আলীর সামনে কেউ কোন কথা না বললেও আড়ালে আবডালে অনেকেই অনেক রকম কথা বলে। কিছুটা ব্যতিক্রম অবশ্য রজব আলীর নয় বছর বয়স্কা নাতনী। রজব আলীর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন বেশ আগেই। ছোট ছেলে বাউন্ডুলের মতো গ্রামের ভিতর ঘুরে বেড়ায়।

কাজ কর্ম নেই তেমন। রজব আলীও এতে তেমন গা করেন না। বড় ছেলেকে পাশের গ্রামেই অবস্থাপূর্ণ পরিবারে বিয়ে করিয়েছেন। বিয়ের আগে রজব আলী নিজে বেশ কয়েকদফা পাত্রীকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখেই তবে বিয়ে ঠিক করেছেন। চোখ, কান, নাক, চুল এসব কিছুই বাদ যায়নি দেখা থেকে।

সেই বড় ছেলেরই একমাত্র মেয়ে সিন্থি। এইসব সিন্থি ফিন্থি নাম নিয়ে রজব আলীর বেশ আপত্তি। কিসব বেদায়াতি নাম! নাম রাখতে হবে সুন্দর দেখে, ধর্মীয় নিয়ম কানুন মেনে। নয় বছরের সিন্থি তাকে দেখলেই দুর থেকে ভেংচি কাটে। মোটেও কাছে ভিড়তে চায় না।

এই ভেংচি কাটার কারণটা ঠিক বের করতে পারে না রজব আলী। নাতনীকে খুশি করার জন্য গঞ্জের হাট থেকে অনেকবার বিস্কিট, মোয়াসহ নানা সুস্বাদু খাবার নিয়ে এসেছে। তারপরও একমাত্র নাতনী তার কাছেই ভিড়ে না। উল্টো দেখলেই ভেংচি কাটে। গ্রামের ভিতর রজব আলীর আলাদা একটা প্রভাব আছে।

যেকোন গ্রাম্য সালিশে রজব আলীর উপস্থিতি অনেকটা বাধ্যতামূলক। এজন্যই গ্রামের ভিতর কোন ধরনের ঝগড়া ফ্যাসাদ হলেই তার খবর সবার আগে রজব আলীর কাছে পৌছায়। সন্ধ্যা রাতে দাওয়াখানায় প্রায়শই তাকে বিভিন্ন পক্ষের সাথে শলা-পরামর্শ করতে দেখা যায়। ঝগড়ার দুই পক্ষের সাথেই সে তাল মিলিয়ে চলে। কেউ কেউ অবশ্য রটিয়েছে- রজব আলী সালিশ করার নামে দুই পক্ষের কাছ থেকেই টাকা খায়।

রজব আলী অবশ্য এসব নেতিবাচক প্রচারণায় পাত্তা দেয় না। এসব কেবলই দুর্জনদের প্রচারণা। আরে! টাকা কি খাওয়ার জিনিষ নাকি? এই যে নিজের সময় নষ্ট করে দুই পক্ষের ঝামেলা মিটিয়ে দিচ্ছি, এর কি কোন মূল্য নেই? সময়ের একটা দাম আছে না? রজব আলীর ভাবনা এমনটাই। গ্রামের বিচার সালিশে মাতব্বর হিসাবে রজব আলীর নিয়মিত উপস্থিতি থাকলেও তার অতীত ভূমিকা নিয়ে কেউ কেউ আড়ালে আবডালে নানা কথা বলে। অবশ্য রজব আলীর প্রতিপত্তির কারনে সামনাসামনি এসব কথা বলতে কেউ সাহস পায় না।

ব্যতিক্রম কেবল ইয়াকুব। বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে প্রায়। এখনো রিক্সা চালিয়ে দিন কাটাতে হয় তাকে। সারদিন রিক্সা চালিয়ে যা কিছু উপার্জন হয় তাই নিয়ে ঘরে ফিরে নিজেকেই রান্না বান্না করে খেতে হয়। ঘরের মানুষ বলতে কেবল তিনিই।

১৯৭১ সালেই পাকিস্থানী বাহিনীর নির্মম নির্যাতনে মারা যায় তার স্ত্রী। রজব আলীই সেদিন তার স্ত্রীকে পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিল কৌশল করে। সেই কথা এখনো ভুলতে পারেন না ইয়াকুব। তাই রজব আলী যে রাজাকার ছিল, পাকিস্থানী বাহিনীর দালাল ছিল তা প্রায় প্রকাশ্যেই বলে বেড়ায় সে। অবশ্য এ নিয়ে তাকে প্রায়শই বিপদের মধ্যে পড়তে।

গ্রামে রজব আলীর প্রভাব প্রতিপত্তি অকল্পনীয়। এখন আর কেউ তাকে রাগিয়ে দিয়ে বিপদে পড়তে চায় না। তাছাড়া সাধারণ একজন রিক্সাচালকের কথায় উল্টা পাল্টা কিছু বলে রাজব আলীর শত্রু হতে চায় না কেউ। তাই বলে ইয়াকুব দমে যায় না । রজব আলীকে ঘৃণা করে যায় সবসময়।

গ্রামের বিয়ের অনুষ্ঠান, পাত্র-পাত্রী দেখার অনুষ্ঠানগুলোতেও রজব আলীর ডাক পড়ে। শেখ বাড়ির রহিম শেখের বড় মেয়েকে পাত্র পক্ষ দেখতে আসবে। রহিম শেখ বেশ কয়েকবার তার বাড়িতে এসে অনুরোধ করে গেছে পাত্র পক্ষ যেদিন আসবে সেদিন উপস্থিত থাকতে। প্রথমে একটু ভাব দেখালেও শেষ পর্যন্ত রাজি হয়েছে রজব আলী। কিন্তু বিপদটা হয়েছে ভরা অনুষ্ঠানের ভিতরে।

পাত্রপক্ষের সঙ্গে পাত্রের বড় ভাইয়ের দশ বছরের মেয়েটা এসেছিলো। রজব আলীকে ঘরে প্রবেশ করতে দেখেই ভয়ে মায়ের কাছে চলে গেল মেয়েটি। সে আর কোন মতেই এই ঘরে থাকবে না। অবশেষে মাকে নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। ততক্ষণে পাত্রপক্ষের সবাই অবাক।

শেখবাড়ির লোকজনেরা আগে থেকেই রজব আলীর এই ব্যাপারটা জানতো। ততক্ষণে রজব আলীর মাথা কাটা যায় অবস্থা। কোন মতো কথাবার্তা শেষ করে, না খেয়েই বাসার দিকে রওনা হলো সে। অথচ খাবারের প্রতি বরাবরই অতিমাত্রায় লোভ তার। পোলাও আর গরুর গোশত একসাথে হলেতো কথাই নেই।

আজকে সব আয়োজনই ছিল। কিন্তু খেতে পারলেন না। বাড়ির উঠানে ফিরতেই দেখলেন নয় বছরের নাতনী সিন্থিকে। সিন্থি তাকে দেখেই ভেংচি কেটে পালিয়ে গেল। রজব আলীর মেজাজ তখন চরম রকমের খারাপ।

“এর একটা বিহিত আজকে করতেই হইবে। পাইছে কি মেয়েটা? মুরুব্বীদের সম্মান করতে শিখবে না! মেয়ের মা তাইলে কি শিখাচ্ছে! আজকে এইটা নিয়া কথা বলতেই হবে। ” রাগে গজগজ করতে করতে ঘরে প্রবেশ করলো রজব আলী। ঘরে ঢুকে ঠান্ডা পানি খেয়ে অবশ্য মেজাজ কিছুটা ঠান্ডা হলো। সে ভাবলো বিষয়টার সমাধান অন্যভাবে করতে হবে।

কৌশল আর বুদ্ধির কোনকালেই কমতি ছিলো না তার। বুদ্ধিবলেই পাকিস্থানী বাহিনীর দালাল থাকা সত্ত্বেও এখন সে গ্রামের মাতব্বর হয়ে উঠেছে। রজব আলীর এখনো মনে আছে পাকিস্তানী মেজর ক্যাপ্টেনরা তার বুদ্ধির খুব তারিফ করতো। বুদ্ধি করেই গ্রামের নব বিবাহিতা এক তরুণীকে পাকিস্তানী বাহিনীর ক্যাম্পে তুলে দিতে পেরেছিলেন। মেয়েটির বিয়ের সময় উকিল বাপ হয়েছিলেন রজব আলী।

কিন্তু তাতে কি? পাকিস্তানী বাহিনীর এক মেজর সুন্দরী মেয়েটাকে দেখে এক রাত সঙ্গে কাটানোর ইরাদা করেছে। ছেলেগুলো দেশ বাচানোর যুদ্ধ করছে, ধর্ম বাচানোর যুদ্ধ করছে। এদের ইরাদা পূরণ করতে না পারলে বেশুমার গুনা লেখা হবে আমলনামায়! রজব আলীর এবারের বুদ্ধিটা কিছুটা অন্যরকম। নয় দশ বছরের মেয়েরা তাকে দেখলেই যেহেতু ভয় পায় তাই তিনি ভাবলেন এই ভয় ভাঙ্গাতে হবে। এর জন্য মোক্ষম উপায় হচ্ছে গ্রামের ওই বয়সের সব মেয়েদের নিয়ে একটা অনুষ্ঠান করা।

পড়ালেখায় উৎসাহ দিতে পুরস্কার থাকবে, ভালো খাবারদাবারের ব্যবস্থা থাকবে। নিজের বুদ্ধি দেখে নিজেই অবাক হলেন রজব আলী। নিজের হাতে মুখমন্ডল কয়েকবার মুছে নিয়ে তৃপ্তির হাসি হাসলেন। পরবর্তী কয়েকটা দিন খাতিরের লোকদের নিয়ে বেশ কয়েকদফা বৈঠক করলেন তিনি। বেশ কয়েকবার মাইকিং করা হলো।

এতে করে গ্রামের নয় দশ বছরের মেয়েদের মধ্যে যতোটা না সাড়া পড়লো এর চেয়ে বয়স্ক লোকদের মধ্যেই সাড়া পড়লো বেশি। অনেকটা উৎসব উৎসব ভাব। অনুষ্ঠানের আগের রাতে বেশ রাত পর্যন্ত সব ঠিকঠাক করে দেরি করে ঘুমালেন। ঘরে তিনি একা। বিবি গেছে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে।

বেশ কয়েকদিন হয়ে গেল ফিরে আসার কোন নামগন্ধ নেই! আশ্চর্য বয়স হয়েছেতো কি হইছে! একসাথে বিবি থাকলে অন্তত জড়িয়ে ধরে গল্প টল্প করা যায়। রজব আলী ভাবে। ঘুম আসে না চোখে। বিছানার এপাশ ওপাশ করে। একসময় চোখ কিছুটা বুজে আসে।

নাতনীর মতোই হুবহু চেহারার নয় দশ বছরের একটা মেয়ে তার সামনে হাজির হয়। আশ্চর্য মেয়েটার সাথে নাতনী সিন্থির খুব মিল। কিন্তু সিন্থিতো তাকে দেখলেই ভেংচি কেটে দুরে চলে যায়। আজকে এতো সামনে কেন! অবাক হওয়া না কাটতেই মেয়েটা জিজ্ঞেস করে বসলো- “চিনতে পারছেন আমাকে?” “না মানে ..তুমি কে?” “ওহ! এখন চিনতে খুব কষ্ট হচ্ছে, তাই না? মনে করে দেখেনতো ১৯৭১ সালে সন্ধ্যা নামের নয় বছরের কোন মেয়েকে আপনি চিনতেন কিনা? মনে করে দেখেনতো তাকে আপনি কিভাবে বর্বর পাকিস্থানী বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কি মনে পড়ে?” এবার রজব আলীর গলা শুকিয়ে আসে।

দরদর করে ঘামতে লাগলো। গলা দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছে না। কেমন যেন একটা ফ্যাসফ্যাস শব্দ। “কি কথা বলছেন না যে? খুব পানির তেষ্টা পেয়েছে? মনে আছে আপনার ১৯৭১ সালে পাকিস্থানী বর্বর বাহিনীর ক্যাম্পে যখন আমাকে অমানবিক নির্যাতন করা হচ্ছিল আমি তখন বারবার পানি পানি বলে কেঁদেছি। আপনি চাইলেই তখন পানি দিতে পারতেন।

আপনি নিজেও তখন সেই ক্যাম্পে ছিলেন। কিন্তু আপনার মনে ন্যুনতম মায়া হয় নি তখন। ” রজব আলী ভয়ে সাদা হয়ে গেছেন। পুরানো সব কথা আস্তে আস্তে মনে পড়ছে স্পষ্ট করে। এতোদিন এসব ভুলে ছিলেন।

সন্ধ্যা নামের মেয়েটা দেখতেও একদম নিজের নাতনী সিন্থির মতো। আশ্চর্য! এতো মিল কিভাবে? “কি ভাবছেন এতো? এতোদিন খুব প্রভাব নিয়ে চলেছেন। আর পারবেন না। সময় অনেক বয়ে গেলেও আপনার বিচার হবেই। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে আমার উপর নির্মম নির্যাতন করা হয়েছিল, তারচেয়ে অনেক কষ্ট পেয়ে আপনি মারা যাবেন? আপনার বিচার হবেই।

” ভয়ে কথা বন্ধ হয়ে রজব আলীর। তা দেখে হেসে উঠলো সন্ধ্যা নামের মেয়েটি। “এখন বেঁচে থাকতে খুব ইচ্ছা হচ্ছে তাই না? মনে করে দেখেনতো, ১৯৭১ সালে আমিও অনেক আকুতি মিনতি করেছিলাম বেঁচে থাকতে। অনেক কেঁদেছি। কিন্তু আপনার কোন মায়া হয়নি।

আপনি বললেই সেদিন পাকিস্তানী বাহিনী আমার উপর পাশবিক নির্যাতন করতো না। আপনি চাইলে সেই ক্যাম্প থেকে আমাকে উদ্ধার করতে পারতেন। ” নয় বছরের মেয়ে সন্ধ্যার কথার সামনে অসহায় হয়ে গেল গ্রামের মাতব্বর রজব আলী। যে কিনা গ্রাম্য সালিশগুলো দাবড়িয়ে বেড়ায় তার মুখ দিয়ে কোন কথাই বের হচ্ছে না! কিন্তু সন্ধ্যার কথা থামে না। “খুব ইচ্ছা করছে আমিই আপনার উপর প্রতিশোধ নেই।

কি বীভৎস নির্যাতন আমার উপর করা হয়েছিল, কতোটা কষ্ট পেয়ে আমি ১৯৭১ সালে মারা গিয়েছিলাম আপনি কোনদিন চিন্তাও করতে পারবেন না। ” হঠাৎ রজব আলী খেয়াল করলো নয় বছরের সন্ধ্যার দুটি হাত নিজের গলার দিকে এগিয়ে আসছে। দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তার। ঠিক তখনই ঘুমটা ভেঙ্গে গেল। ততক্ষণে সকাল হয়ে গেছে।

সারা শরীর ঘেমে একাকার। রজব আলীর দুঃস্বপ্ন তখনো তার পিছু ছাড়লো না। ভয়ে বিছানা থেকে উঠার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে সে। একরাতেই অসুস্থ্য হয়ে পড়লো রজব আলী। সেই খবর অবশ্য লোকজন জানলো বেশ কিছুক্ষণ পরে।

সেদিনই গ্রামের নয় দশ বছরের মেয়েদের নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজনের তারিখ ছিল। অনুষ্ঠান বাতিল করা হলো। মাইকিং করা হলো – ভাইসব, ভাইসব, অনিবার্য কারণবশত রজব আলীর সাহেবের উদ্যোগে আয়োজিত আজকের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। ভাইসব...ভাইসব...। মাইকিংয়ের কথাগুলো রজব আলী ঘরে শুয়ে শুনলো।

ততক্ষণে তিনি হিসাব মিলিয়ে ফেলেছেন কেন নয় দশ বছরের মেয়েরা তাকে এতোটা ভয় পায়! অসুস্থ্য শরীর নিয়ে বিছানা থেকে একা উঠার শক্তি পাচ্ছেন না। তখনই ঘরের দরজায় উকি দিলো নাতনী সিন্থি। মা তাকে জোর করে দাদাকে দেখতে পাঠিয়েছে। নাতনী সিন্থিকে দেখেই রজব আলীর নয় বছরের সন্ধ্যার কথা মনে পড়ে গেল। চিৎকার করে সিন্থিকে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বললো।

সিন্থি তখন ভেংচি কেটে ঘর থেকে বের হয়ে গেল। পূনশ্চ : পাকিদের বীভৎস পাশবিক লালসা থেকে ন’বছরের শিশু সন্ধ্যাও রেহাই পায়নি। একাত্তরের জুন মাসে ঝালকাঠির কুড়িয়ানা আক্রমণ করে পাকিরা। সন্ধ্যা তার মা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে ছুটে পালাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁরা সবাই ধরা পড়ে আটক হন কুড়িয়ানা স্কুলে পাকিদের ক্যাম্পে।

তাঁরা চারদিন ঐ ক্যাম্পে আটক ছিলেন। কিন্তু পাকিদের নির্মম নির্যাতন থেকে কেউই রক্ষা পাননি। ঐ জানোয়াররা শিশু সন্ধ্যার ওপর এমন বীভৎস নির্যাতন চালিয়েছিল যে, কষ্ট, যন্ত্রনা আর বিরামহীন রক্তপাতে সে নির্জীব ও ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছিল। এর ক’দিন পরে সে মারা যায়। ” (বাংলাদেশের অভ্যুদয়ঃযুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যা, ডা. এম এ হাসান, পৃষ্টা ১২-১৩)


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.