বেশ্যা শব্দটি যে কেউ অশ্লীল বলে বসতে পারেন। আভিধানিক অর্থ নিয়েও ব্যাখ্যা করে লাভ নেই। কারণ, এখানে এই বিষয়টি মূখ্য নয়। তবে সাম্প্রতিককালে যারা যৌনকর্মী শব্দটি ব্যবহার করছে কেবল তারাই সঠিক কাজটি করছে। অবশ্য বাংলাদেশের আইনে এখনো বেশ্যা শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
আর মুক্তবাজার বলতে খোলাবাজার বা উন্মুক্ত বাজারকে (open market, free market) বুঝিয়ে থাকে।
বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে, আবার অনেক পেশাজীবিরা প্রায়ই একটি বাক্য ব্যবহার করে থাকে, বেশ্যার কাছে বড় ছোট বলে কোন বিষয় নাই। বিষয়টি একান্তই খদ্দেরের আর্থিক অবস্থা এবং .... অন্য আরো কিছুকে ইঙ্গিত করে বৈকি। প্রাপ্ত বয়স্ক যে কেউ বিষয়টি যথাযথ আন্দাজে বুঝে নেয়। আমাদের মুক্তবাজার অর্থনীতির ধারণাটি তুলনা করার জন্য বেশ্যার নীতির চেয়ে ভাল কোন দৃষ্টান্ত হতে পারে বলে মনে করিনা।
সপ্তাহ খানেক আগে বাকপটু বাণিজ্যমন্ত্রি ফারুক খান ব্যবসায়িদের সাথে ভোজ্য তেলের দাম নির্ধারনী সভায় বলেই ফেলেছেন মুক্তবাজার ব্যবস্থায় পন্যের দাম নির্ধারন করা যায় না, আর করলেও কোন লাভ নাই। বেশ্যাকেও নিয়ন্ত্রন করা যায়না সে যাকে খুশি খদ্দের হিসাবে নিতে পারে কারো কিছু বলার নাই। এই সত্য কথাটি বলার জন্য মন্ত্রিকে ধন্যবাদ জানিয়ে সৌজন্যবোধ দেখানো যায় তবে আসল ব্যাপারটিকে পাশ কাটানো যায়না। কারণ, মুক্তবাজার হচ্ছে বেশ্যার মত প্রতিযোগিতার বাজার এখানে সবাই সমান প্রতিযোগিতা করবে। ফলত প্রতিযোগিতা হয়ে উঠে অসম আর লাগামহীন, অস্থিতিশীল।
নিয়ন্ত্রন বলে কোন ধারণা এখানে নিতান্তই অর্থহীন। বাংলাদেশের বাজারও তাই হয়েছে।
ধান ভানতে শিবের গীত মনে হলেও কিছু কথা না বললে চলেই না। বাজার অর্থনীতির তল্পিবাহক মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্রে এখন মন্দা চলছে, আর সেই মন্দা বিশ্বমন্দায় রুপ নিচ্ছে, ফলত বাংলাদেশ সরকার ৩৪৯২ হাজার কোটি টাকার জোড়াতালি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। একেই বলে একজনের পাপে দশজনকে ধরে।
এই কৃতিত্বপূর্ণ কাজটির যাত্রা শুরু করেছিল স্বৈরাচার এরশাদ তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছেন যথাক্রমে খালেদা জিয়া, শেখ হাসিনা আবার খালেদা, হাসিনা। তাদের সহচর হয়েছেন মুহিত, কিবরিয়া ও সবচেয়ে বেশি বাজেট পেশ করার অহংকার সাইফুর এবং যে সবচেয়ে বেশি বারোটা বাজানোর কারিগর। এই সময়ে এশিয়ার বৃহত্তম পাটকল আদমজীসহ বেশ কিছু পাটকল বন্ধ করা হয়েছে আর ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ১৭টি পাটকল স্থাপন করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক ও বাজার অর্থনীতি এই কল্যাণটি আমাদের করে দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের আরেক দালাল ভারতের প্রধানমন্ত্রি মনমোহন সিং চলতি সপ্তাহে বললেন বিশ্বমন্দার জন্য উন্নত বিশ্বই দায়ী।
এরই মধ্যে জাপানে রাজনৈতিক মোড় নিতে শুরু করেছে, বাজার অর্থনীতির ধারক বাহকেরা পিছুটান আর নিয়ন্ত্রিত অর্থনীতির অনুসারিরা আগ্রগামী। এটাই সাড়া বিশ্বে শেষ পর্যন্ত হওয়ার কথা। বেঈমান মিখাইল গর্বাচেভর কারণে সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ও পূর্ব ইউরোপের ধসের পর ফ্রান্সিস ফুকুয়ামা “দি ইন্ড অব দ্যা হিস্ট্রি” লিখে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন কিন্তু পরে সেটি ধোপে টিকেনি। সিয়াটল ভেঙ্গে পড়েছে অনেক আগে তারপর আরও কতকিছু। এসব তো বেশ্যাবাজার অর্থনীতির ফলেই ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।