আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জুন নাগাদ নতুন ঝড় সতর্কীকরণ সংকেত[/sb


সরকার আগামী জুন নাগাদ ঘূর্ণিঝড় সতর্কীকরণ সংকেত ব্যবস্থা পুনর্বিন্যাস করতে যাচ্ছে। শনিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব মো. সুলতান উল ইসলাম চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নতুন সতর্ক সংকেত পদ্ধতি অনুমোদন করেছে। ৩০ এপ্রিল থেকে তা চালুর কথা থাকলেও সম্ভব হবে না। তবে সারাদেশে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শেষ করে জুনের মধ্যে নতুন পদ্ধতির এই সংকেত ব্যবস্থা প্রবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে।

" সংকেত আধুনিকায়ন বিষয়ে ১৯৯২ সাল থেকে কথাবার্তা হচ্ছে। যুগোপযোগী ও সহজবোধ্য সংকেত পদ্ধতি চালু হয়নি গত দেড় দশকেও। ২০০৭ সালের সিডর পরবর্তী সময়ে সরকার এ বিষয়ে মনোযোগ দেয়। ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি কমিটি সমন্বিত সংকেত ব্যবস্থা প্রবর্তনের সুপারিশ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ড. ফখরুদ্দীন আহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বিন্যস্ত সংকেত ব্যবস্থা অনুমোদন করে।

সুলতান উল ইসলাম জানান, সতর্কীকরণ সংকেত যুগোপযোগী করে সমুদ্র ও নৌবন্দরের জন্য সমন্বিত একটি ব্যবস্থা প্রবর্তন হবে। সমুদ্রবন্দরের জন্য প্রচলিত ১০টি সংকেতের মধ্যে ৫ ও ৭ নম্বর বাদ দেওয়া হচ্ছে। নতুন ব্যবস্থায় ৮টি সংকেত হলÑ ১ নং দূরবর্তী সতর্ক সংকেত, ২ নং দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত, ৩ নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত, ৪ নং স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত, ৬ নং বিপদ সংকেত, ৮, ৯ ও ১০ নং মহা বিপদ সংকেত। এছাড়া নৌবন্দরের জন্যও সমন্বিত সতর্ক সংকেত প্রবর্তন হচ্ছে। তা হলো ৩ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত, ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত, ৬ নম্বর বিপদ সংকেত, ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত, ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ও ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, দেশে বর্তমানে সমুদ্রবন্দরের জন্য ১০টি এবং নৌবন্দরের জন্যে চারটি সংকেত চালু রয়েছে। এতে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অবকাশ রয়েছে। সমুদ্রবন্দরের জন্য ঝড় সতর্কীকরণের অনেকগুলো সংকেত থাকায় জনসাধারণের কাছে বিপদের সর্বোচ্চ পর্যায়টি জানাতে অনেকগুলো ধাপ পার হতে হয়। সাধারণ মানুষও সংখ্যানুক্রমিক সংকেত বাড়ার অপেক্ষায় থাকে। ফলে দ্রুততম সময়ে বিপদ সম্পর্কে সচেতন করার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়।

বাংলাদেশে সমুদ্রবন্দরে ঝড় সতর্কীকরণের জন্য ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত, ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত, ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত, ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত, ৫ নম্বর বিপদ সংকেত, ৬ নম্বর বিপদ সংকেত, ৭ নম্বর বিপদ সংকেত, ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত, ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ও ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়। সর্বশেষ ১১ নম্বর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেতও রয়েছে সমুদ্রবন্দরের জন্য। পাশাপশি অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের জন্যে ১ নম্বর নৌ সতর্ক সংকেত, ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত, ৩ নম্বর নৌ বিপদ সংকেত ও ৪ নম্বর নৌ মহাবিপদ সংকেত চালু রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, "সরকারের নির্দেশনা পেলে নতুন সংকেত দিয়ে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেবে অধিদপ্তর। পুনর্বিন্যস্ত সংকেত অনুযায়ী সমুদ্র বন্দরের জন্য ৮টি ও নৌ বন্দরের জন্য ৬টি সতর্ক সংকেত জনগণের কাছে পরিচিত করতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো প্রচারণা চালাবে।

" তিনি জানান, সংকেত পরিবর্তন হয় নি। তবে বাতাসের গতিবেগ অনুযায়ী সমুদ্র ও নৌবন্দরের সংকেত ব্যবস্থায় সমন্বয় সাধন করা হয়েছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপ (ইকনমিক অ্যান্ড সায়েন্টিফিক কমিশন ফর এশিয়া প্যাসিফিক) এর নিয়ম মেনেই তা করা হয়। শনিবার ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বর্তমান পদ্ধতিতে বেশ কয়েকটি সংকেত ঝড়ের তীব্রতাকে না বুঝিয়ে বন্দর থেকে এর দূরত্বকে বোঝায়। জনসাধারণের জানমাল রক্ষার চেয়ে বন্দরের নিরাপত্তা রক্ষাই এ ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব পায়।

সংকেতের মাত্রা পরিবর্তনের জন্য ঝড়টি বন্দরের বাম কিংবা ডান দিক দিয়ে যাচ্ছে কি না, বা সরাসরি বন্দরের ওপর আঘাত হানবে কি না সেটাই বিবেচিত হয়। "যত তাড়াতাড়ি নতুন পদ্ধতি চালু হবে ততই মঙ্গল। আগামী ঝড় মৌসুমের আগে তথা সেপ্টেম্বরের আগে দেশের ৪২ সহস্রাধিক স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষিত করে তুলতে পারলে জনগণ দ্রুত এ বিষয়ে সচেতন হবে" বললেন ব্য্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। ১৯৯২-৯৩ সালে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে মাস্টার প্ল্যান তৈরির সময় সমুদ্রবন্দর ও নৌবন্দরের জন্যে একীভূত সতর্কীকরণ সংকেত প্রণয়নের সুপারিশ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। এছাড়া, সংকেত ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করে একে জনমুখী ও সহজ করতে প্রায় বছর আড়াই আগে আবহাওয়া অধিদপ্তর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো, পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্পার্সো ও ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের প্রধানদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে সরকার।

ওই কমিটির একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী সুপারিশ বাস্তবায়ন হচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. ফরহাদ উদ্দিন বলেন, "শুধু যুগোপযোগী সংকেত পদ্ধতি নয়, ব্যাপক জনসচেতনতাই জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পারে। এজন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। " ---------------বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে আমরা স্বাগত জানাই কিন্তু এটা যতো তাড়াতাড়ি প্রয়োগ হবে জনগনের ততোই মঙ্গল।

যদি কোন কারনে কেউ বিপদ সংকেত এর স্থলে সতর্ক সংকেত মনে করে তাহলে কি বিপদ হতে পারে তা আপ্নারাই একটু অনুধাবন করুন। তাই আমি মনে করি যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব এটাকে প্রয়োগ করুন।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।