শ্রদ্ধা আর মমতাই তোমাকে জয়ী করতে পারে; তুমি তোমার জ্ঞান প্রয়োগ কর।
সাইপ্রাসের সিটিয়াম নগরের ব্যবসায়ী জেনো (Zeno), মনঃস্থির করলেন দর্শন শিখবেন। বাইশ বছর বয়সে তাই সমুদ্র যাত্রা করলেন এথেন্সের উদ্দেশ্যে। কিন্তু পথে হলো জাহাজডুবি, সব হারিয়ে ভবঘুরের মত এথেন্সের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে থাকেন বেচারা জেনো।
এভাবে একদিন দেখা হয়ে যায় নৈরাশ্যবাদী (cynic) দার্শনিক ক্রেইটসের (Crates) সাথে।
ক্রেইটস তাকে সান্ত্বনা দেন, টাকা-পয়সা কখনো সুখ আনে না, হে। জেনো তাতে এতই অভিভূত হয়ে পড়েন যে নিজেই একটি দার্শনিক স্কুল খুলে ফেলেন, এবং এথেন্সের প্রাচীন উন্মুক্ত মিলনায়তনের (agora) উত্তর পাশের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দর্শন প্রচার শুরু করে দেন। বিখ্যাত এই বারান্দার নাম Stoa Poikile, বাংলায় এর মানে, চিত্রাঙ্কিত বারান্দা।
বারান্দার বিভিন্ন গম্বুজের ফাঁকে দাঁড়িয়ে জেনো ও তার শিষ্যরা যে শিক্ষা প্রচার করেন, তার মূল হলো: মানুষকে ক্রমাগত আত্মিক উন্নয়ন সাধন করে যেতে হবে, আর এ উন্নয়নের জন্য মনোযোগ বিক্ষিপ্তকারী যাবতীয় আবেগকে দমন করতে হবে, কারণ আবেগ হলো সকল অশুভের উৎস। সুখ কিংবা দুঃখের, কোনো অনুভূতিতেই বিচলিত হওয়া চলবে না, জগতের সব কিছু গ্রহণ করতে হবে নিরাসক্ত, শান্তভাবে।
স্টোয়া (Stoa) বা বারান্দা থেকে প্রচারিত হবার কারণে দর্শনটির নাম হয় স্টয়িসিজম (Stoicism), আর এর দার্শনিকদের বলা হয় স্টয়িক (Stoic)। হেলেনীয় যুগে যে দুটি প্রধান গ্রিক দর্শন চালু ছিল, তার একটি স্টয়িসিজম, অন্যটি এপিকিউরিয়ানিজম (এ ব্যাপারে পরে কথা হবে)।
১৪ শতকের মধ্যে ইংরেজিভাষী লোকেরা stoic বিশেষণটি সাধারণভাবে এমন লোকের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে থাকেন "যিনি যেকোনো প্রতিকূলতাকে নিরাসক্তভাবে গ্রহণ করেন—উল্লাস, কষ্ট, সুখের ব্যাপারে যিনি উদাসীন। "
stoic এর সমার্থক: apathetic, calm, dispassionate, impassive, imperturbable, indifferent, self-controlled, unconcerned, unemotional, unmoved
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।