আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

Anatomy of জামাতে ইসলামী ও কিছু সোজা-সাপটা কথা (সংযোজন)

নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!!

বেশ কিছু পীরের দরবারে ভ্রমনের অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। কমন একটি ব্যাপার পেলাম- প্রত্যেক পীরই বাকি সবাইকে ভন্ড বলতে পছন্দ করে। মোটামুটি এটা প্রচার করে যে, হক্কানী পীরের মুরীদ না হলে বেহেস্ত পাবার কোনই উপায় নাই এবং বলাবাহূল্য তিনিই সে 'হক্কানী'! পীর ছাড়া অপরাপর ইসলামী মতবাদের অনুসারীরা ও মনে করে তাদের বাইরে সবাই কাফের, ফেরকাবাজ ইত্যাদি ইত্যাদি। মিলাদ বসে বা দাড়িয়ে পড়া নিয়েও এধরনের রায় দেয়া, মারামারি, কাটাকাটি হয়। কিছুটা শিক্ষিত হয়েও জামাত (জামাত বলতে শিবির সহ) এ ধরনের মনোরোগ থেকে মুক্ত নয়।

তাদের বাইরে তাবৎ বাংলাদেশ কে 'তাগুত' উপাধি দিয়ে রীতিমত অমুসলিম হিসেবে ঠাউরাতে দেখা যায়। ভাবখানা এমন- ১৯৪১ সালের আগে এদেশে সবাই অমুসলিম ছিল। সদ্য নবম শ্রেনী উত্তীর্ন কিশোরটিও শিবিরের সমর্থক ফরম ফিলাপ করা মাত্র নিজেকে বিরাট ইসলামী চিন্তাবিদ মনে করা শুরু করে। তার দলের বাইরে সবাইকে আপথে কুপথে আছে বলে মনে করে। কিছুটা বেয়াদব হয়ে যায় এবং ইসলাম নিয়ে স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনা না করে লেকচার দিয়ে ফেলে।

তার স্টকে বড়জোর তখনো কিছু লিফলেট, স্টিকার এবং চটি বই! যেহেতু নাবালক কিশোররাই একদিন বড় হয় সেহেতু বৃহত্তর পরিসরে দল জামাতের মানসও কিছুটা এরকম। ব্যক্তি জীবনে বেশীরভাগ জামাত-সমর্থক ইসলামী ব্যাংক, ইবনে সিনা ট্রাস্ট, নিজেদের প্রতিস্টিত স্কুল, কলেজ, ক্লিনিক, ব্যবসাপ্রতিস্টানে চাকরী করেন বিধায় আবদ্ধ ও সীমিত চিন্তার কুহেলিকাতে ঘুরপাক খেতে থাকেন। দলীয় মায়াপুরীর বাইরে এসে ভিন্ন এসপেক্ট বা এরিয়াল ভিউতে দুনিয়াটাকে দেখার আর সৌভাগ্য হয়না বেশিরভাগের। এটা একটা দুর্ভাগ্য প্লাস একটা রোগ। অথচ লাখে ১/২ জন নাস্তিক ছাড়া এদেশের মানুষ ধর্মভীরু মুসলিম।

জামাতের জন্মের হাজার বছর আগেই ইসলাম এখানে এসেছে। চর্চাগত মাত্রার পার্থক্য থাকতে পারে মাত্র। পার্থক্য আছে ইসলামের মর্মাথ অনুধাবনে। সেটার বড় কারন লেখাপড়ার অভাব, অতি নিম্ন মেধার মৌলভিদের ধর্মীয় নেতৃত্ব, ঐতিহাসিক ভাবেই পীর-ফকির ধাচেরঁ উৎস থেকে ইসলামের প্রচার ও প্রসার, গাঙ্গেয় ব-দ্বীপের দুর্বল মানবিক নৃতত্ব ইত্যাদি। সে চর্চার মাত্রাটা বাড়ানোর অভিপ্রায়ে একটি সংগঠন আবশ্যক- যারা তৃনমূল পর্যায়ে মানুষকে আজে বাজে, কুসংস্কার, কূপমন্ডুকতা থেকে বের করে আনবে।

প্রকৃত ধর্ম তুলে ধরবে। শিক্ষিত করে তুলবে। উদারতা, মানবিকতা শেখাবে। রাস্ট্রীয় লেভেলে চুরি, ডাকাতির প্রতিবাদ করবে। আইনের শাসন, নাগরিকের অধিকারের পক্ষে আওয়াজ তুলবে।

সারাবিশ্বে একটি মাত্র ইসলামী রাস্ট্র গড়ে তোলার যে মৌলিক মহা-সপ্নের উপর জামাতের ভিত্তি, তৎপরিবর্তে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, উপজাতি, নাস্তিক সমেত মুসলিম প্রধান বাংলাদেশকে নিয়ে নিজস্ব ভূগোল, অর্থনীতির সমন্বয়ে ইসলামী রাস্ট্র ও সংগঠনের পথে এগোবে। কাজটিতে জামাতের অমিত সম্ভাবনা থাকলেও ১৯৭১ এর কলংক একে চিরস্থায়ীভাবে কালিমালিপ্ত করেছে এবং সমাজবিরোধী, দুর্নীতিবাজ লোকদের সাথে আতাতঁ, যেনতেন ভাবে ক্ষমতারোহনের লিপ্সা সাধারন মানুষের মাঝেও এটাকে স্থির চরিত্রের ধৈর্যশীল ইসলামী দল হিসেবে ব্র্যন্ডেড হতে ব্যহত করেছে। জামাত পরিচয় অনেক যায়গায় লজ্জার ব্যাপারও বটে! যেমনটি বর্তমানে বিডিআরের অবস্থা। সুতরাং দলটির বিলুপ্তি ঘোষনা দিয়ে, ১৯৭১ এর রাজাকারদের আইনের হাতে সোপর্দ করাপূর্বক নতুন ভাবে নতুন কিছু করার সময় এসেছে। সবাইকে ধন্যবাদ।

(আগামী পর্বে পড়ুন বিএনপি)।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।