আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফরগিভ আস, মি. জর্জ হ্যারিসন



ফরগিভ আস, মি. জর্জ হ্যারিসন ফকির ইলিয়াস ========================================= স্বাধীন স্বদেশ অর্জনে আমাদের অনন্ত গৌরব, মহান মুক্তিযুদ্ধ। সেই মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অজস্র ঘটনাবলী। BANGLADESH, BANGLADESH WHERE SO MANY PEOPLE ARE DYING FAST AND IT SURE LOOKS LIKE A MESS I’VE NEVER SEEN SUCH DISTRESS NOW WON’T YOU LEND YOUR HAND AND UNDERSTAND RELIVE THE PEOPLE OF BANGLADESH. ১৯৭১ সালের ১ আগস্ট নিউইয়র্কের প্রখ্যাত ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’-এর উপরোক্ত গানের বাণীগুলো জাগিয়েছিল গোটা বিশ্বকে। আর এই গানের অমর শিল্পী ছিলেন জর্জ হ্যারিসন। যাকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সেদিন দাঁড়াতে হয়েছিল অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে।

জর্জ হ্যারিসন তার বিবেকী শিল্পী সত্তাকে মানবতার কল্যাণে, মুক্তিসংগ্রামের স্বপক্ষে নিবেদিত করেছিলেন সকল রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে। স্বয়ং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন সেদিন বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের বিপক্ষে ছিল, সেখানে বিশ্ববরেণ্য সঙ্গীতজ্ঞ পন্ডিত রবি শংকরের পৃষ্ঠপোষকতায় জর্জ হ্যারিসন এগিয়ে এসেছিলেন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের সাহায্যার্থে। শুধু তাই নয়, মার্কিনী জনমতও সেদিন এই কনসার্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছিল সে নৃশংস হত্যাযজ্ঞের কথা। একটি দেশকে না দেখেই সে দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসার যে হাত প্রশস্ত করেছিলেন জর্জ হ্যারিসন- তা একটি বিরল ঘটনা। সেই গণশিল্পী জর্জ হ্যারিসন ২৯ নভেম্বর ২০০১ চলে যান পরপারে।

তিনি মিশে গেছেন পরম সত্তার সঙ্গে। তার মৃত্যু সংবাদ যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়াগুলোতে প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বারবার এসেছিল ‘বাংলাদেশ’-এর কথা। টিভির সংবাদ পাঠকরা সেই ঐতিহাসিক ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’-এর কথা উল্লেখ করেছেন। আবারো মার্কিনী টিভির পর্দায় দেখানো হয়েছে কনসার্টের অংশ বিশেষ। মর্মান্তিক কথা হচ্ছে, যে জর্জ হ্যারিসন একটি দেশ, একটি জাতির অভ্যুদ্বয়ের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে ছিলেন, সেই জর্জ হ্যারিসনের বাংলাদেশ সফরের সৌভাগ্যটুকু হয়নি।

আওয়ামী লীগ সরকার ’৯৬ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর বিজয়ের রজতজয়ন্তী যাপন করেছিল। এর ঠিক আগে বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ নিউইয়র্ক সফরে এসেছিলেন। এস্টোরিয়া ওয়ার্ল্ড ম্যানরে তার সম্মানে সংবর্ধনার আয়োজন করেছিলেন বৃহত্তর সিলেটবাসীরা। আমি সেখানে সামাদ আজাদের কাছে প্রস্তাব করেছিলাম রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে জর্জ হ্যারিসন এবং পন্ডিত রবি শংকরকে আমন্ত্রণ জানিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হোক। সামাদ আজাদ আমার প্রস্তাবকে ‘চমৎকার’ বর্ণনা করে কথা দিয়েছিলেন, উদ্যোগ নেবেন।

একই প্রস্তাব আমি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও করেছিলাম নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের একটি অনুষ্ঠানে। তিনি তাৎক্ষণিক তৎকালীন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীকে নোট করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি। রজতজয়ন্তী পালন অনুষ্ঠানে বরেণ্য কাউকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আমরা জানি এবং দেখেছি, বাংলাদেশে অনেক রাজাকার, শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান, মৌলবাদী দালালরা স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক পেয়েছে।

কিন্তু আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়েও জর্জ হ্যারিসন কিংবা রবি শংকরের মতো ব্যক্তিত্ব, যারা বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের ভূমিকা পালন করেছিলেন- তাদের সম্মানিত করতে না পারার দুঃখ এবং ক্ষোভ ঢাকবো কিভাবে? জর্জ হ্যারিসনকে রাষ্ট্রীয় খরচে বাংলাদেশে নিয়ে যেতে কত খরচ হতো? বড়জোর দশ হাজার ডলার। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি কেন এই বদান্যতাটুকু দেখাতে পারলো না? বাঙালিরা কি শুধু পেতে জানে-দিতে জানে না? ------------------------------------------------------------------- দৈনিক ডেসটিনি । ঢাকা । ২৬ মার্চ ২০০৯ বৃহস্পতিবার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.