''দোস্ত তুই আমারে আগে কবি না, আগে জানলে বিয়া করতাম না'' সদ্য বিবাহিত আমার বন্ধুর এহেন কথা শুনে আমার চোখ কপালে উঠে গেল, অবশ্য আর ওঠারও সুযোগ ছিল না কারন ওপর্যন্তই ওটার দৌড়।
আরে ঘটনা কি খুলে বল ? বিজ্ঞের মত প্রশ্নে বন্ধুর যা বর্ননা তা অনেকটা এরকম:
বিয়ের পর থেকেই নানা সমস্যা। পাত্রীদের বাসার অবস্থা অনেক ভাল। তার দাবী দাওয়া অনুযায়ী বন্ধুকে যে শাড়ী কিনে দিতে হবে তার মূল্য ১২০০০ টাকা, যেখানে আমার বন্ধুর বেতন প্রতি মাসে ৭০০০। এর পর নানান চিন্তা তো লেগেই আছে।
রাতে ঘুমাতে পারেনা ঠিকমত। আমার দোস্তের সুন্দর ভুড়িখানা সমেত তার চর্বিময় মুখখান এখন আর তেলে চকচক করেনা। দু:শ্চিন্তায় ওজন কমে যাচ্ছে আর সবচেয়ে প্যাথেটিক যে বিষয় তা হল আজ সকালে ও যথারীতি দাত ব্রাশ করতে গেছে। তো পেষ্ট লাগিয়ে ব্রাশ করছে কিন্তু কোন কাজ হচ্ছেনা। কিছুক্ষন আরও চেষ্টা করল না ফেনা বের হচ্ছে না।
এমন তো হবার কথা নয় নামি দামী ক্লোজ আপ টুটপেষ্ট বলে কথা। কিছুক্ষন পর সবেধন নিলমনি বুঝতে পারল ও যেটা টুথপেষ্ট মনে করে ব্রাশ করা হচ্ছিল ওটা আসলে তিব্বত স্নো। বিয়ের পর বেচারার এমনি অবস্থা। বন্ধু দু:খ পেলেও হাসলাম প্রানখুলে। তিব্বত স্নো দিয়ে দাত ব্রাশ এমন কথা জীবনেও শুনিনি।
জীবনের কথাই বা আবার কি বলব। আরেক বন্ধুর অনেক শখের বৌ নিয়ে যা কান্ড হল তা না বললেই নয়। বেচার বিয়ে করেছে, খুব এক্সাইটেড। মধু রাতে গাদা ফুলের মালা নিয়ে আমাদের গাধাটা ঢুকেছে বাসর ঘরে। বৌ দেখে কি করবে একেবারে দিশাহারা অবস্থা।
ওমা যেই না বউকে ফুলের মালা পড়াতে গেছে বউএর তো নিশ্বাস বন্ধ হয়ে নাভিশ্বাস উঠে গেল। বউ এর ফুলে এলার্জি আছে। সেই রাতে পাড়ার ডিসপেনসারীতে গিয়ে রক্ষা হলেও দুদিন পর আমাদের গাধাকে সেই হাসপাতালে দৌড়াতে হল। কদিন বাদে শহরের কোন ডাক্তারও আর বাকি রইল না। বউ এর কেবল এলার্জি নয় হেন রোগ নেই, যে তার নেই।
বেচারা ভেবেছিল বউ আসলে কিছুটা কাজ কর্মে সহায়তা হবে। সহয়তা হয়েছে ঠিকই আগে নিজের কাপর ধুতে হত এখন বউএর টাও ধুতে হয়, শখের বউ কিনা। বউ বেশীরভাগ সময় শুয়েই কাটায়, রোমান্টিক আলাপ বলতে তার বাল্যকালের নানানরোগের সুললিত বর্ননা। বেচারার কিছু না হলে কি হবে এই বউ আসার পর পাড়ার লোকের ডাক্তারের খরচ বেচে গেছে। ঔষধ আনতে আনতে আমার দোস্তর হাজার রোগের উপসর্গ এবং তার দাওয়াই জানা।
এলাকার লোকজন এখন তার কাছেই রোগ শোকের পরামর্শ নেই। পাড়ার দুটো ডাক্তারের চেম্বারে এখন রোগীরা আর ভীর করেনা। এহেন অবস্থায় একদিন গাধাটাকে দেখার প্রয়াসে আমি ওর বাড়িতে গেলাম।
তাকাতেই দেখি একটা সবুজ রঙ্গা পেটিকোট। ভাল করে চোখ রগরে তাকাতেই দেখি দোস্ত ওর ভিতরেই আছে।
ভূল দেখলাম বলে মনে হল।
না সত্যি গাধাটা ওর মধ্যেই আছে, কিন্তু পেটিকোট পরে কেন ? নিজেকেই প্রশ্ন করলাম। ব্যাটা আবার কাপড় আয়রন করছে। জোরে হাঁক দিলাম
'' কিহে দোস্ত তুমি মনে হয় লিঙ্গ ভূল করে পেটিকোট পড়ে রয়েছ ?''
'' তাইতো বলি পাজামার তো দুটো পা থাকে এটার আরেকটা পা সেই সকাল থেকেই খুজে পাচ্ছিনা। '' বন্ধুর উত্তর
ব্যাটার জন্য খুব মায়া লাগল।
আহা বেচারার সেই মধু চন্দ্রিমার রাত থেকেই এই অবস্থা।
মধুচন্দ্রিমার কথা আসতেই মধূরাতের এক গল্পের কথা মনে পরে গেল
'' এক মুরগী আর এক মশার বিবাহ হয়েছে। তো মধূরাতে দুজন দুজনকে চুমু খেয়েছে সকালে উঠে দেখা গেল মশাটা বার্ড ফ্লুতে আর মুরগীটা ম্যালেরিয়ায় মরে গেছে। ''
তো বিয়ে তো দিল্লকা লাড্ডু কদিন আগে খেয়েছি, এখনো পস্তাইনি তবে ভবিষ্যত পস্তাবো কিনা জানিনা। তো বিয়ে করার পর এলাকার সবচেয়ে বোকা হিসেবে পরিচিত কাইংষ্টাইন ( ও নিজেকে আইনষ্টাইন হিসেবে মনে করলেও এটা এলাকায় ওর নিক নেম ) এসে আমাকে জানাল সেও বিয়ে করবে।
''বিয়ে তো ছেলে খেলা নয় যে করবি যখন তখন'' ওকে বোঝালাম যদিও নিজে মাত্র ২৬ বছর বয়সে বিয়ে করেছি।
উত্তরে ব্যাটা বলে কিনা ''ছেলে মেয়ের জন্যইতো ওই খেলা, খেলা হয় দাদা''
বুঝতে পারলাম ব্যাটার ঘাড়ে আরেকটা মাথা গজিয়েছে। বিনা বাক্য ব্যায়ে প্রস্থান করলাম ব্যাটা আবার না কি বলে ফেলে।
বি: দ্র: চরিত্র সমূহ নারায়নগঞ্জ গাবতলী, খানকা শরীফ সংলগ্ন এলাকা থেকে সংগৃহীত ইচ্ছে করলে কেউ দেখা করে আসতে পারেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।