একমুখাপেক্ষি না হয়ে যা কিছু ভাল তা গ্রহন করা উচিৎ...
অনেক দাবিইতো অনেকেই করলো। বন্ধ করে দেয়া হোক ছাত্ররাজনীতি। গালিব সাহেব প্রশ্ন করলেন কেন ছাত্রদল, ছাত্রলীগ, ছাত্র শিবির?
উত্তরটা আমিসহ অনেকেই জানেন. . .
রনজু সিগারেট টানছে আর চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছে . . . .
মানিক তার ঘনিষ্ট বন্ধু। কয়েকদিন আগে গ্রাম থেকে এসেছে বন্ধুকে দেখতে। এখানে এসে সে বুঝতে পেরেছে রনজু বেশ ভালই আছে।
তার দল এখন ক্ষমতায়। ’আচ্ছা রনজু, তুই হঠাৎ কেন রাজনীতিতে আসলি? তুই যখন প্রথম বর্ষে ছিলি তখন তোর একটাই লক্ষ ছিল, ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হওয়া. . কিন্তু . . .’ রনজু মানিককে থামিয়ে দিয়ে বলল, ’আমি জানি যে আমি খুব ভাল একটা বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করছি, কিন্তু এখান থেকে আমি যদি ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েও বের হই আমার বেতন আর কতইবা হবে?’ লেখাপড়াটা কিসের জন্য? ভালো একটা চাকুরী, ভালোভাবে চলার জন্যইতো, তাইনা? মানিক বলে ’তা ঠিক, কিন্তু ভালোভাবে চলার জন্য কত টাকাইবা লাগে?’
রনজু হাসে. . . হাঁ হাঁ হাঁ. . .
আমি এখন সহ-সভাপতি, বছরখানেকের মধ্যে সভাপতি হয়ে যাব। আমাকে এখন যে টাকা দেওয়া হয় তা আমি আমার এলাকার কাজে লাগাই, যতখানি পারি উন্নয়ন করি। আমার এলাকার মানুষ জানে যে আমি স্বার্থ ছাড়াই এলাকার উন্নয়ন করছি। পাঁচ বছর পর যে নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে আমি এমপি পদে দাঁড়াবো।
একবার এমপি হতে পারলে আমার এলাকাকে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসাবো. . . খালি টাকা আর টাকা. . . ৫০% এলাকার, ৫০% আমার। পড়াশুনা করে সৎ পথে থেকে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করা এত সহজ না!’ এই বলে রনজু তার হাতের কাপটি দেয়ালে ছুঁড়ে মারলো। টং দোকানদার রহমত মিয়া এই দৃশ্য দেখে অভ্যস্থ। সে ভয়ে কখনো রনজুর কাছে কখনোই চা-সিগারেটের দাম চায়না!এই হচ্ছে আমাদের ছাত্র নেতাদের (ছাত্রদল, ছাত্রলীগ, ছাত্রশিবির) আদর্শ চিত্র।
এটা সবারই জানা যে, যারা ছাত্ররাজনীতি করছে তাদের বেশীরভাগই স্বার্থসিদ্ধির জন্য রাজনীতি করছে।
সাধারন ছাত্রদের অনেকেই নিরূপায় হয়ে রাজনীতি করে। বছরখানেকের মধ্যে সে সাধারণ থেকে অসাধারণ হওয়া শুরু করে। সে বুঝতে শিখে এটা এক ধরনের ক্ষমতা। এই ক্ষমতাকে কাজে লাগানো উচিৎ। সেও সুযোগ পেলে চড়-থাপ্পর মারে।
তাকে ব্যাক-আপ দেয় তার বন্ধুরা ও বড়ভাইরা। ’আরে কালাম, তুমিতো বেশ সাহসী হয়ে উঠেছো। ’ সে উৎসাহ পেয়ে আরও সাহসী হয়ে উঠে. . . রিক্সাওয়ালাকে সে ভাড়া না দিয়ে হলের ভেতর ঢুকে যায়। ভাড়া চাইলে চোখ বড় বড় করে তাকায় তার দিকে। রিক্সাওয়ালা অপরাধীর মতো চোখ নামিয়ে নেয় এবং সে বুঝতে পারে ভাড়া চাওয়াটা অপরাধের মধ্যে পরে।
কয়েক বছর পর . . .
কি কইলি, রুম্মনরে মারছে? সবাইরে ফোন দে. . কালামের নেতৃত্বে ছুটে চলে ছাত্ররা. . . রুম্মনকে যারা মারছে তাদের শিক্ষা দিতে হবে. . . রহিম তখন সাধারণ ছাত্র, সে যেতে চাইছিলোনা! তাকে জোড় করে নিয়ে যাওয়া হলো. . . বছর খানেকের মধেই হয়তো রহিম-ই হবে আরেক ছাত্রনেতা. . .
আমাদের ছাত্র নেতাদের মধ্যে আমি সালাম-রফিক-জব্বারকে খুঁজে পাইনা। ’কেন পাইনা?’ কেন পত্রিকায় দেখিনা ’ছাত্রদল, ছাত্রলীগ, ছাত্রশিবিরের ছেলেরা বন্যার্তদের/শীতবস্ত্রহীনদের সাহায্যের জন্য কাজ করছে’? কেন পত্রিকায় দেখিনা ’উপমার জীবন বাঁচানোর ছাত্রনেতারা রাস্তায় নেমে পথিকের কাছ থেকে টাকা তুলছে’ কেন পত্রিকায় দেখিনা ’মায়ের জীবন বাচাঁনোর জন্য তারা টিএসসি তে কনসার্টের আয়োজন করেছে’? কেন? কেন? শুধুই প্রতিধ্বনি হয়, কেন? কেন? কিন্তু কোনো উত্তরই আসেনা।
বুধবারে পল্টনে ছাত্রলীগের পূর্ণমিলনে অনেকটা নিশ্চিত যে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের বিলুপ্তি চাননা। আমরা দেশের মানুষ কি চাই? দেশের মানুষ চায় শান্তি। প্রধানমন্ত্রী এবং আমাদের মন্ত্রীরাও তাই চান কিন্তু ছাত্রলীগকে বাদ দিয়ে নয়. . .
তাহলে, কি করা যেতে পারে?
ছাত্রদের আমার খুব চেনা আছে।
তারা কারণে অকারণে দেশের সম্পদ নষ্ট করে, ভাংচুর করে (সব ছাত্ররা না)! বেটা, এন্টিরপো. . এটা কি তোর নিজের সম্পদ, নাকি তোর বাপের সম্পদ? কার টাকায় পড়াশুনা করোছ? সরকারের টাকায়? নাকি জনগনের টাকায়? তোদের জন্য যদি সাধারন মানুষ মারা যায়, তোদের জন্য যদি সাধারন মানুষের গাড়ী ভাংচুর হয় তবে সাধারণ মানুষ কেন তোদেরকে টাকা দিয়ে পড়াবে? সরকার কেন তোদের পেছনে কোটি কোটি টাকার বাজেট পাশ করাবে?
যখন ছাত্ররাজনীতি বন্ধই করা হবেনা, তখন আমি একটা প্রস্তাব দিতে চাই. . .
চিহ্নিত দশ থেকে একশো জন ছাত্র সন্ত্রাসীকে খুঁজে বের করা হোক. . .
জনসম্মুখে এবং সাধারন ছাত্রদের সামনে তাদের দু’পা কেটে ফেলা হোক। এরপর তাদের দায়ভার সরকার বহন করুক। তারা বসে বসেই খাবে, তাদেরকে কিছু হাতের কাজ করতে দেওয়া হবে. . .
অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া হলে দেশের মানুষ কোনো প্রতিবাদ করবেনা। হয়তো কিছু প্রতিবাদ আসবে ছাত্রসন্ত্রাসীদের সমর্থকদের কাছ থেকে। হয়তো আমাদের মধ্যেঅনেকেই মায়া দেখাবেন।
আমার ভেতরেও মায়া আছে। কিন্তু মায়া দিয়েতো আর দেশ চলেনা।
আমার চাই সুন্দর দেশ, সুস্থ দেশ. . . . যারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, যারা পরিবেশটাকে বদলে দিচ্ছে, নষ্ট করছে, আমি তাদেরকে কখনোই ক্ষমা করবোনা. . এক্ষেত্রে আমি অবশ্যই ভুলে যাব যে ’ক্ষমাই মহৎ গুন’। '
বিঃ দ্রঃ ছাত্ররা ক্ষমতার অপব্যবহার করবেই. . .
---------------------------------------------------------------------------------
---------------------------------------------------------------------------------
৭ এপ্রিল, ২০০৯
যাদের পা কেটে ফেলা হবে, তাদের সমস্ত দায়ভার সরকারকে বহন করতে হবে। পঙ্গুত্বকে বরণ করে বেচে থাকতে হবে সেসব ছাত্রকে।
তারা স্বাধীন থাকবেনা। আজীবন তাদেরকে কারাগারে থাকতে হবে। এটাই তাদের শাস্তি। এরুপ শাস্তি ছাত্রসন্ত্রাসীদের দিলে তাদের অপরাধ করার প্রবণতা কমে যাবে। আর এ ব্যাপারগুলো যাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে তাদের হাতে থাকবে সর্বোচ্চ ক্ষমতা থাকবে তাদের হাতে।
সর্বোচ্চ ক্ষমতা যাদের হাতে থাকবে তারা যদি অপরাধ করে তবে দেশের সর্বোচ্চ শাস্তি তারা পাবে।
(বিঃ দ্রঃ রাজনৈতিক ইস্যুতে এসব আইনের অনেক বিরুপ প্রতিক্রিয়া থাকবে। তবে কিভাবে এসব আইন প্রয়োগ করা যেতে পারে তার জন্য অনেক চিন্তা ভাবনার প্রয়োজন রয়েছে। )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।