আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনুগল্প-০১: মা হাওয়ার সুখ

ভালো কিছুর অপেক্ষায়......

মা হাওয়ার সুখ ক. একদিন, কোলে আর বাহুর নিচে আট ও এগারো বছরের দুই সন্তানকে নিয়ে হাবিল-কাবিলের মা রেললাইনে জবুথবু হয়ে বসেছিলো। সেই মুহূর্তে সন্তানের প্রতি আপাত্য স্নেহও তাকে দমিয়ে রাখতে পারছিলোনা। সিদ্ধান্তে সে ছিলো দৃঢ়। তার কাছে জীবণ মানেই ছিলো দুঃখ। তবে এই দুঃখকে সে এইভাবে চিহ্নিত করতে পারেনি, যে- তার কাছে বেঁচে থাকাটাই দায় হয়েছিলো।

এবং মৃত্যুই ছিলো একমাত্র কাম্য। খ. হঠাৎ ক্ষীণদেহের এক দেবদূত হাজির হয়। যার মুখ বিশিষ্ট স্মৃতি হয়ে থাকবার মতো একটি বিষয়। এহেন ফেরেশতা আপাতত রক্ষা করে মা হাওয়াকে। গ. এরপর হাবিলের কুড়ি বছর বয়সে, দেবদূতের স্ত্রী হিসেবে মা হাওয়া দাদী হন।

তারও পূর্বে হাবিল রং মিস্ত্রির জোগাল হয়ে পৃথক বাস শুরু করে, তারও বেশ কয়েক বছর পূর্বে কাবিল একদিন পুটুস করে মরে যায়। ক্ষীণকায় দেবদূত তার হায়াত কয়েক বছর বৃদ্ধি করতে পেরেছিলো মাত্র। ক্ষীণ দেবদূতের চোখ এখন ঘোলা দেখে। বটতলায় শ্রমিক অফিসের বারান্দায় তার জংধরা সেলাই মেশিনে এখন আর তেমন কেই মশারী বা বালিশের ওয়ার বানাতে আসেনা। বোবিনে সুতা জড়ানো তার কাছে কষ্টের কাজ, তার চোখ ভুলে গেছে সুঁইয়ের ছিদ্রপথ, সে ভুলে গেছে একযুগ আগে সে আদম রূপ ধারণ করেছিলো।

ঘ. এহেনকালে মা হাওয়ার উপজেলা পরিষদের অফিস ঘর ঝাট দেয়ার কাজ আর নাই। কারণ অফিস ঘর ঝাট দেবার সময় তার বুক আর উছলায় না। তেঁতুলের মত টসটসে রস জোগায় না সাহেবদের মুখে। সন্তান ছাড়া, যৌবন ছাড়া অন্ন জোটেনা তার। দেবদূত সরে গেছে নিদানকালে।

ঙ. এইকালে আমরা মিথ্যা বলেও নির্দ্বিধায় কসম করি, দুপুরে ভাত ঘুম দেই, ধুমায়িত চা পান করি, শখ করে পান খাই আর ভাবি এই গরমে আজ বৃষ্টি হয়েছে রাতে বেশ আয়েশ করে ঘুম দেয়া যাবে। চ. ঘটনা সত্যি, হাওয়া আমাদের বিমাতা না হলে এমন কি করে সম্ভব।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।