যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
আর্টগ্যালারিতে গিয়া ছবি দেখা আমার রুচির মধ্যে নাই। মাঝেমাঝে তো মনে হয় এইসব বালছাল আইকা কি হয়, হইছে! রুচির প্রশ্ন বইলা একটু অফ যাই, স্মরণকালে আমার রুচি নিয়া জনৈকের রুচিজ্ঞান দেইখা আমি নিজেই এইসব টাঙানো আর্টের দিকে একটু বিশেষ দৃষ্টিতে তাকাই। যদি কিছু বুঝতে পারি। খুটিয়ে খুটিয়ে দেখি।
একটা ছবি দেখলাম বামাল সাইজের।
মানুষের মত একটা ডাইনোসর। তার পিঠের উপরে টাইম লাইন। মানে সৃষ্টি থেকে এখন পর্যন্ত সভ্যতার যাত্রা। শেষ মাথায় আইসা সেই ডাইনোসর মানব কাটাচামচ দিয়ে পনির খাচ্ছে। ছবির নাম "কলাকারের কর্মযজ্ঞ"।
একটু আগে আর্টিস্ট মহোদয়ের সাথে পরিচয় হইছে, নাম মোস্তফা জামান। আমি একটু ছবিটা দেইখা তার চেহারাটা আবার দেখার চেষ্টা করলাম। বেঙ্গল গ্যালারীর ভেতরে শিল্পরসিক, দর্শকদের চেহারার মধ্যে অন্যরকম শৈল্পিক আভিজাত্য আছে। আর এমন পেইন্টিং এর বোদ্ধা দর্শকের সিড়িতে আমি পা রাখার সাহস করি না। কিন্তু আমার বন্ধু যিনি আর্টগ্যালারী দেখে বেড়ান - নিজেও একজন ভালো শিল্পী, ছবিগুলো খুটিয়ে দেখলেন।
ছবির কোন ধরণ, প্রকৃতি, মেকিং ম্যাটেরিয়ালস সম্বন্ধে আমার কোন ধারণা না থাকায় আমি ছবি দেখে বোঝার চেষ্টা করি ইহা কি, দেখতে কেমন লাগলো এবং অবশেষে তার পাশে খোদাই করা ছবির নাম, তৈরীর পদ্ধতি। সবিশেষে বিশাল ফ্রেম, রঙতুলি ও রঙের খরচ নিয়ে কিঞ্চিত উৎসুক্য প্রদর্শন করি।
একজনকে জিজ্ঞেস করলাম, কতটাকা খরচ পরে ফ্রেম, রঙ আর ক্যানভাস বানাতে! সে জানালো এই একটা ছবির সর্বনিম্ন দাম পচিশ হাজার টাকা। তারমধ্যে কেবল ছবি বানাবার লজিস্টিকসের দাম হতে পারে ক্ষেত্রবিশেষে পাঁচ থেকে দশ হাজার। নিজের মানিব্যাগ আর ড্রইংরুম দুটোই ক্ষুদ্র বলে আমি কলাকারের কর্মযজ্ঞ কেবল দেখে যেতে মনোনিবিষ্ট হলাম।
যা বলতে চাই তা হলো, ছবিটা আমার ভালই লেগেছে। এটা আমাদের সভ্যতার আদি থেকে বর্তমান এক লহমায় দেখে নেয়ার মত। মিঃ বিনের "আমেরিকান মাদার" বলে খ্যাতি কুড়ানো উক্তির মত "কলাকারের কর্মযজ্ঞ" দেখে বলতে পারি এটা "মাদারবোর্ড অব দ্যা আর্থ"। হাত তালি দেন...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।