আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইনফো এক্টিভিজম ক্যাম্পের ১ম ৩দিন



তথ্য কীভাবে অধিকার আন্দোলনকে কার্যকর, ফলমুখী এবং বৈশ্বিক করে তুলেত পারে। আমাদের বিভিন্ন ধরনের ক্যাম্পেইন, অ্যাডভোকেসিতে আমরা কিভাবে ডিজিটাল মিডিয়া ব্যবহার করতে পারি; সারা পৃথিবী জুড়ে অধিকার ও সামাজিক ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় ভিডিও, ইন্টারনেট, ম্যাপ, ব্লগ, গুগুল ম্যাপ ব্যবহার করা হয় তা শেয়ার করা; একই সাথে আগামি সময়ে দেশে দেশে কিধরনের ক্যাম্পেইনের প্রয়োজন রয়েছে- কিকরে তা বৈশ্বিক রূপ দেয়া যেতে পারে তা বিনিময় করা এবং দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বসেছে ‘ইনফো এক্টিভিজম ক্যাম্প ২০০৯’ অংশগ্রহণকারীদের দিক থেকে এটা দারুন। মিডিয়া ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে এমন অনেক এক্টিভিস্ট, সেনাশসিত হচ্ছে বার্মা, তিউনেশিয়া, আবার ল্যটিন আমেরিকার অঞ্চলের কয়েকটি দেশ, ফিলিস্তিন, লেবানন এবং দেশীয় যারা কাজ করছে সামাজিক ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে, একই সাথে আফ্রিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন জায়গা থেকে ‘উন্নয়ন কর্মী’রা এসেছে এ ক্যাম্পে। অন্য একদল অংশগ্রহণকারী হচ্ছে যারা জিপিএস, মোবাইল ফোনের বহুমাত্রিক ব্যবহার ও ভিওআইপি, সিএমএস, ইন্টারনেট নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে। এদের সাথে রয়েছে কিছু ওয়েব ডেভেলপার ও ফিল্ম মেকার।

সারা দুনিয়া থেকে প্রায় ১৪০ জনের সম্মিলন। ট্রেনিং, কনফারেন্সের মত এখানে কোন কাগজ, কলম, টেবিল চেয়ারের বালাই নেই। সবার হাতে ক্যামেরা, ল্যাপটপ। বেঙ্গেলোর শহর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে একটা দুর্গম এলাকায় বসেছে এ ক্যাম্প। বসানো হয়েছে একটা ভিসেট সাথে লোকাল সার্ভার।

ক্যাম্পের সকল কার্যক্রম, তথ্য, সূচি যাবতীয় জিনিসই রয়েছে উইকি’ তে; এ জন্য তৈরি করা হয়েছে ক্যাম্প উইকি। ভেন্যু হিসেবেও এটা দারুন- ১৯৯৬ সালে মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় এ ভেন্যু ‘গ্রিন ভ্যালি রিসোর্ট’ কে ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রোগ্রামের দিক থেকেও এটা একটা দারুন জিনিস। প্রতিদিন অনেকগুলো সেশন হচ্ছে, সহায়করা কোন সেশনে কী জ্ঞান/ দক্ষতা শেয়ার করা হবে এটার ব্যবহার কী তা প্রথমে একটি বড় দলের আলোচনায় উস্থাপন করে পরবর্তীতে অংশগ্রহণকারীরা তাদের চাহিদা মোতাবেক সে সেশনে যোগ দিচ্ছে। প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে অনুরোধ করা হয়েছে তাদের চাহিদা কী, কোন ধরণের বিষয় তাদের জানা দরকার সে মোতাবেক সেশন প্রস্তাব করার জন্য।

পরবর্তীতে প্রস্তাবিত সেশনগুলো আলোচনা করা হচ্ছে। প্রতিটি সেশন শেষে একটি প্যানারি সেশন হচ্ছে সেখানে পরবর্তীতে সেশনগুলো কী হবে তার একটি ব্রিফ দেয়া হয়। ব্রিফের পর আমার সাথে যে সেশনটি ফিট হচ্ছে আমি সেখানেই যাচ্ছি। ক্যাম্পটি যারা পরিচালনা করছে তারাও খুবই মজার,এবং এখানে ব্যবহৃত প্রতিটি মেথডটি খুবই অংশগ্রহণমূলক এবং শিখনীয়। এখানে এসে দেখা হলো গ্লোবাল ভয়েসের অপর্ণা এবং সামি’র সাথে।

অপর্না সামহয়ারইন ব্লগের বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। তিনি সা.ইন ব্লগ নিয়ে খুবই উৎসাহী। পাশাপাশি এখানে কিভাবে দু’বাংলা সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অধিকার বিষয়ক আলোচনা করা যায় সেগুলো নিয়ে কথা বললেন। প্রতিদিনই এখানে ডিজিটাল মিডিয়া’র সেশন হচ্ছে। আমি এবং অপর্না আলোচনা করছি সামহয়ারইন ব্লগকে একটি সেশনে কেসস্টাডি হিসেবে উপস্থাপন করার জন্য।

সিডর, বন্যা, যুদ্ধাপরাধী বিচারের দাবিতে সামহয়ারইন ব্লগ কিভাবে কাজ করেছে; কিভাবে যুবকরা এ জনসাংবাদিকতা চর্চায় সম্পৃক্ত হয়েছে তা তুলে ধরাই হবে আমাদের সেশনের উদ্দেশ্য। রাতে আলাপ হচ্ছিল, ইন্টারনেট জকি খ্যাত ফ্যাডরিক ও জার্মান একটি মেয়ের সাথে তারা দুজনে বাংলাদেশের নাগরিক সাংবাদিকতার অগ্রসরতার কথা শুনে অভিভূত হয়েছে। ফ্রেডরিক অবশ্য সামহয়ারইন, আমার ব্লগ ইত্যাদি সম্পর্কে জানেন। এখানে থাকতেই ২১ ফেব্র“য়ারি এলো। প্রতিদিন ক্যাম্প থেকে একটি নিউজ লেটার বের হয়।

২১ তারিখে সেখানে আমি একটি সংবাদ দিয়েছি ‘আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ এবং আমরাই একমাত্র জাতি যারা তাদের ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে। পরে অনেকেই এসে আমাদের সাথে এ বিষয়টি জানতে চাচ্ছিলেন। অঞ্জলি এসেছেন কানাডা থেকে, থরথর করে ইংরেজি বলেন। গতরাতে আমার কাছে এসে আস্তে করে বললেন, আপনি কী বাংলা জানেন? আমি তো শুনেই থ। আমি বললাম হাঁ, সাথে সাথে সে বল্লো, আপনি ধীরে ধীরে বাংলা বলেন আমি বাংলায় বলতে-শুনতে চাই।

অঞ্জলি কানাডিয়ান মেয়ে, কাজ করে ফিলিপিনে। তার মা আসলে কলকাতার- সে কারণেই তা বাংলা জানাশোনা এবং সে বাংলা পছন্দ করে। ক্যাম্পে সেশনের সময় ইন্টারনেট ব্যবহার না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এজন্য পরে বিস্তারিত লিখতে হবে। ধন্যবাদ


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।