কাঙাল জানিয়া বাবা দিও দরিশন, অধম জানিয়া বাবা দিও দরিশন.....
বাংলাদেশের অর্থনিতির অন্যতম চালিকা শক্তি হলো প্রবাসী রেমিটেন্স। প্রবাসী অধ্যুসিত সিলেট অঞ্চলের গড় প্রবৃত্তি অন্যান্য অনেক এলাকা থেকে বেশী। যদিও এই প্রবাসী অধ্যুসিত অঞ্চল শিক্ষা ও কৃষি কাজে অনেক পিছিয়ে আছে। তদপুরি অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে এই মানুষগুলোর অবলম্বনে গড়ে উঠেছে এক নতুন শক্তিশালী ধনীক গোষ্টি। তাদের চাহিদা মোতাবেক আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা অত্র অঞ্চলের অনেক ব্যাবসায়ীদের পক্ষে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তাদের বাড়তি চাহিদার মধ্যে আছে আধুনিক অব-কাঠামো গত বহুতল ভবন নির্মান বিলাসবহূল গৃহ নির্মান পর্যাপ্ত আধুনিক বিনোদনের জন্য সুযোগ সুবিধা। এই প্রবাসীরা এখন এমনী যে তারা পারলে প্রতিটি বাড়ীতে সুইমিং পুল নির্মান করতে চায়। এই চাহিদা কি আমাদের মতো একটি ঘন জন বহূল নিবিড় কৃষি নির্ভর দেশে কি করে সম্ভব। তারা যদি পারতো এই দেশে ক্যাসিনো বসাতো।
এই অঞ্চলের সাবেক বিলাত প্রবাসীরা তাদের কষ্টার্জিত অর্থ উৎপাদন খাতে বিনিয়োগ না করে।
তৈরী করেছে বিলাস বহুল বাড়ী এবং সীমানা প্রাচীর মার্বেল পাথরের পুকুর ঘাট ও সু-সজ্জিত টয়লেট বাথরুম বানানোর কাজে ব্যায় করেছে। তাদের এই অলস অর্থ দিয়ে কৃষি জমি কিনেছে এবং মূল্য বৃদ্ধিতে সহায়োতা করেছে । প্রকাশ করতেই হয় যে সিলেটের বিভিন্ন ব্যাংকে এই প্রবাসীদের প্রায় ৬০০০হাজার কোটি টাকারও অধিক অলস টাকা পড়ে আছে। যা দিয়ে অনেক শিল্প কল কারখানা স্থাপন করা যেত। এই অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির কারনে প্রান্তিক কৃষকরা তাদের জমি হারিয়েছে।
অনেকে জমি বিক্রি করে উন্নত জীবন যাপনের আশায় মধ্যপ্রাচ্য গেছে। নতুন মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীরাও এই একই ধারায় শুধু ধানী জমি কিনেছে পর্যাপ্ত খাদ্য পন্যের সংস্থান করতে অথবা বাড়ী কিনেছে। কেউ কিনতে পেরেছে কেউ পারেনী। এক ধরনের দালালের খপ্পড়ে পড়ে বা ভূমিখোর অর্থ লোভি আত্বিয় স্বজনেরা বিভিন্ন কুট কৌশল প্রয়োগ করে সেই টাকায় হাত বসায়। বঞ্চিত হয় তার স্ত্রী ও সন্তানেরা ।
তাদের অধিকার রক্ষায় এখন পর্যন্ত কোন ব্যাবস্থা গড়ে উঠেনি বরং অনেক সময় কুট-কৌশল প্রয়োগকারীরা নিজের টাকায় টেলিফোন করে বিভিন্ন দূর্নাম তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের সম্পর্কে স্বামীর কাছে করতে থাকে। প্রবাসী রেমীটেন্স আমাদের দেশের অর্থনিতিতে যে অবদান রাখছে তার চেয়েও ভয়ংকর ভাবে সামাজিক অস্থিরতার সৃষ্টি করছে। এমন অনেক ঘটনা আছে। জমি কেনার টাকায় তার বাবা জমি না কেনে বরং আরেকটি বিয়ে করে। পুত্র বধুর চিকিৎসার টাকায় তার চিকিৎসা হয় না।
দেশে ফেরে সেই প্রবাসী ব্যাক্তিকে সব কিছু হারাতে হয় । স্ত্রী সন্তান জমি জমা কিছুই তার থাকেনা। প্রেরিত অর্থ তার পরিবারের প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্তই বটে।
আমাদের কৃষি নির্ভর সামাজিক ব্যাবস্থাকে পুরোপুরি অবহেলা করে। টাটকা মাছ,টাটকা সবজি,টাটকা ডিম ফল ফলাদির স্বাদকে উপেক্ষা করে নগর মুখি হচ্ছেন।
এই নগর মুখি প্রবাসী পরিবার গুলো একেকটি ছোট মফস্বল শহরকে গড়ে তুলেছে মেগাসিটি যার জন্য মফস্বল শহর গুলো প্রস্তুত ছিল না। আমাদের এই মফস্বল শহর গুলোর এখন প্রতিটি গ্রামই হয়ে উঠেছে একেকটি আবাসিক এলাকা। যেখানে আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান। বিদ্যুৎ না থাকলে আছে সোলার পাওয়ার। গ্যাস না থাকলে আছে বায়োগ্যাস।
টি ভি প্রিজ তো আছেই । সব খাদ্য দ্রব্য তার ভিতরে। (বিছরা গুলো পতিত) রবি শস্যর জন্য চাষাবাদ হয় না। সব বাজার থেকে কিনে খায়। কিন্তু গ্রামে থাকে চারিদিকে চাষ উপযোগ্য জমি।
প্রতিটি গ্রাম তার জৈলুষ হারিয়েছে। ঢেকি দিয়ে ধানকুটা হয় না। হাস মুরগীর ডাক শোনা যায় না। শীতের পিঠা স্বপ্নের মতো। ছোট মফস্বল শহরে গড়ে উঠেছে ফার্ষ্ট ফুডের দোকান ।
ঢাকায় যা পাওয়া যায় আমাদের এখানে তাই পাওয়া যায়।
অতিরিক্ত টাকার প্রভাবে গ্রামকে করে তুলেছে বিলাস বহুল কটেজ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।