জামাত-শিবির দূরে গিয়া মর!
রিমান্ড মুলত দুই ধরনের। একটা অফিসিয়াল আরেকটা আন-অফিসিয়াল। অফিসিয়াল রিমান্ড মানে আইনগতভাবে আদালত থেকে যে রিমান্ড নেয়া হয়, আর আন-অফিসিয়াল হলো ধর তক্তা মার পেরেক টাইপ। অপু তানভীর বর্তমানে আন-অফিসিয়াল রিমান্ডে আছেন।
কদিন আগেও অপু ভাই রাস্তার ধারে, ডাষ্টবিনের সামনে, দেয়ালের পিছনে পিপি করতো।
কিন্তু পরিবেশ বন্ধু তার এই পরিবেশ নষ্ট করা দেখতে না পেরে তাকে মডু সাবধান করে দিয়েছে। থ্রেট দিয়েছে ভদ্র হও নাই তোমার ইন্টারন্যাট সুবিধা উঠায়া নিব। এই থ্রেট খেয়ে অপু ভাই এখন আর পরিবেশ নষ্ট করে না। পাবলিক টয়লেট ইউজ করে। আজ একটু রাত হয়ে গেছে, তার উপর আশে পাশে কোন পাবলিক টয়লেটও নেই।
তাই অনিচ্ছা সত্বেও অপু ভাই সিদ্ধান্ত নিল ঝোপের আড়ালে পিপি করার, কিন্তু যেইনা সে পিপি করতে যাবে, তখনি গায়েবী আওয়াজ শোনা গেল “অ্যাই অপু.. মডু সাবধান.. মডু সাবধান”। প্রচন্ড ভয় পেয়ে অপু ভাই একটা ঢোক গিলে পাশের পুলিশ ষ্টেশনে ঢুকে পড়লো। পুলিশ ষ্টেশনে ঢুকেই সোজা ভিতরে ঢুকে গেল। যেইনা টয়লেটে ঢুকতে যাবে তখনি এক কনষ্টেবল (হায়দার) তাকে আটকে দিয়ে বললেন,
♦ আপনি কে? কি চান?
অপু ভাই একটা লম্বা হাসি দিয়ে বললেন,
♦ পাশ দিয়েই যাচ্ছিলাম, ভাবলাম বেড়াইয়া যাই
♦ ঐ ছ্যামড়া, বাইচলামী করস? কান-কুন হাতায়া দিমু কইলাম
♦ সাবধান। মুখ সামলে কথা বলবেন চৌধুরী সাহেব.. আমরা গরিব হতে পারি...
♦ কি কইলি?
♦ স্যরি ডায়ালগটা মুখস্থ ছিলো, মুখ ফসকে বেড়িয়ে গেছে, বাই দ্য ওয়ে আমি কিন্তু ঢাকার মেয়রের খুবই ঘণিষ্ঠ।
♦ (স্যালুট মেরে) আগে বলবেন তো স্যার.. আসুন ভেতরে আসুন..
♦ না ইয়ে মানে আমার একটু পিপি করার দরকার..
♦ আসেন তো.. স্যারের কেবিনে ইচপিশাল ভাতরুম আছে (জোর করে টেনে এসআই এর কেবিনে নিয়ে গেল)
মিনিট দশেক পর (অপু ভাই এস আই এর সামনে বসা)
এস আইঃ আপনি মেয়র সাহেবের আত্মীয় জেনে ভাল লাগলো... ইয়ে মানে স্যার আমার একটা আর্জি ছিল মেয়র সাহেবের কাছে..
অপু ভাইঃ বলে ফেলুন.. তিনি নির্বাচনে জিতলে আমিই তো সবকিছু দেখাশোনা করবো।
এস আইঃ মানে?
অপু ভাইঃ মানে আমার এক বন্ধু আছে, সে ঢাকার মেয়র হিসেবে নির্বাচন করতে চাচ্ছে। বলা যায় ঢাকার হবু মেয়র
এস আইঃ ঐ বিপ বিপ বিপ.. মশকরা করস? টুট টুট টুট বিপ বিপ বিপ
অপু ভাইঃ গালি দিচ্ছেন কেন? আপনি একজন সম্মানিত মানুষ আমি একজন লেখক মানুষ...
এস আইঃ আপনি লেখক? কি লেখেন.. দলিল দস্তাবেজ?
অপু ভাইঃ নাহ... আমি একজন ব্লগার
এস আইঃ কোন ব্লগ?
অপু ভাইঃ সামহয়্যার ইন ব্লগ
এস আইঃ কোন নিক?
অপু ভাইঃ অপু তানভীর
এস আইঃ আপনিই নিশিকে নিয়ে গল্প লিখছেন?
অপু ভাইঃ (অত্যন্ত খুশিতে বিগলিত হয়ে) হ্যা হ্যা আমিই লিখি.. আপনি পড়েছেন? আমার ফ্যান বুঝি? দেন কাগজ দেন.. অটোগ্রাফ দিয়ে দিচ্ছি
এস আইঃ তোর অটোগ্রাফের বিপ বিপ বিপ... হায়দার.. এরে হাজতে ঢুকা, আর ডান্ডা রেডি কর.. পাকিস্তানি ডলা দে...
অপু ভাইকে যখন হায়দার ধরে নিয়ে যাচ্ছে.. তখন অপু ভাই হায়দারের দুই হাত ধরে বলল, “ভাই আমি একজন ব্লগার.. আমাকে মাইরেন না” হায়দার মুচকি হেসে বলল, “জানিতো, তুই ব্লগ দিয়া ইন্টারনেট চালাস.. তুই নাস্তিক... আমি আবার হেফাজতে ইসলামী করি”
এক ডোজ পাকিস্তানি ডলার পরে...
এস আইঃ কি ব্যাপার অপু সাহেব.. কিছু বলবেন..
অপু ভাইঃ ভাই ঈমানে কইতেছি.. আমি শুধু পিপি করতে আসছিলাম.. আর কোন মতলব নাই
এস আইঃ পুলিশ ষ্টেশন কি হাগু-মুতু করার জায়গা? বিটলামী করস? সত্যি কইরা ক.. নিশিরে নিয়া আবোল তাবোল কথা লেখচোস ক্যান...
অপু ভাইঃ নিশি আমার কাল্পনিক ভালবাসা.. তাই লেখছি..
এস আইঃ আবারো বিটলামী করতাচস?? কাল্পনিক_ভালোবাসা তো পোলামানুষ.. তুই আমার টিয়াপাখিরে নিয়া উল্টাপাল্টা লিখচস ক্যান?
অপু ভাইঃ টিয়াপাখি আমার...
এস আইঃ (ফটাশ.. চড় মেরে) ঐ বিপ বিপ বিপ.. আমার মেয়ে নিশিরে যে আমি আদর কইরা টিয়াপাখি কই এইটা তুই কেমনে জানলি?
অপু ভাইঃ সত্যি!! আপনার মেয়ের নাম নিশি? দেখতে কেমন? বয়স কত? বয়ফেন্ড আছে?
এস আইঃ হায়দার.. ডান্ডা রেডি কর....
আরেক দফা পাকিস্তানি ডলার পর...
এস আইঃ হায়দার.. ঐশী কেসে এরে ঢুকায় দে...
অপু ভাইঃ স্যার আপনের পাও ধরি.. আমারে মাফ কইরা দেন.. আমি জীবনেও আর কোন মেয়ের দিক তাকামু না.. কোন মেয়েরে নিয়া লেখা দূরে থাক.. কোন মেয়েরে আমার ব্লগে ঢুকতেই দিবো না, সব মেয়েরে কমেন্ট ব্যান কইরা দিমু
এস আইঃ অপু সাহেব.. আমার মেয়েরে নিয়া যেইসব গল্প লিখছেন.. এই আইডিয়া কে দিছে আপনারে?
অপু ভাইঃ কেউ না.. খোদার কসম.. আমি নিজেই লেখছি
এস আইঃ হায়দার..
অপু ভাইঃ কথায় কথায় তারে ডাকেন ক্যান স্যার... ডান্ডা বাইর কইরা দেন আমি নিজেই নিজেরে পাকিস্তানি ডলা দিতাছি।
ক্রিং ক্রিং ক্রিং (এস আই এর ফোন বেজে উঠল)
হ্যা.. হ্যা ঠিকাছে.. নিয়ে আসবো... তুমি খিচুড়ী একটু নরম করবা.. ঠিকাছে.. আমি নিয়ে আসবো.. সাথে ইলিশ ভাজা করো... নিশি কই? কি করে? ঠিকাছে.. আচ্ছা.. রাখলাম
অপু ভাইঃ স্যার নিশি কি করে?
এস আইঃ হায়দার.. যা তো এক কুড়ি রাজহাসের ডিম নিয়া আয়
অপু ভাইঃ স্যার গো স্যার আপনের পাও ধইরা মাফ চাই.. জীবনেও এই মুখে আর নিশির নাম নিবো না.. যদি নেই তাইলে আমি একটা পাভেক্স খান
এস আইঃ হায়দার যা ডিম আন...
অপু ভাইঃ স্যার... মাফ কইরা দেন.. রাজহাসের ডিম!!! ইক্ !!! যদি দেনই তাইলে কোয়েল পাখির ডিম দিয়া শুরু করেন.. কিন্তু রাজহাসের ডিম দিয়া আমারে এমনে শেষ কইরা দিয়েন না।
এস আইঃ আরে ছাগল এই রাজহাসের ডিম তোর লাইগা না.. আমার বউ আর মেয়ের লাইগা
অপু ভাইঃ (টাসকি খাইয়া) আপনে তো অনেক বড় পার্ভাট।
আগে জানতাম পুলিশ আসামীদের ডিম দেয়.. আপনি নিজের বউ বাচ্চারে.... ছিঃ ছিঃ ছিঃ
এস আইঃ বিপ বিপ বিপ টুট টুট টুট...... আমি ডিম কিনতাছি খিচুরী খাওয়ার জন্য.... আর তুই ভাবচস কি না.... দাড়া.. হায়দার....
অপু ভাইঃ ডান্ডা রেডি কর আমিই কয়া দিরাম, এইবার ইট্টু কম পিটায়েন
আরও একদফা পাকিস্তানি ডলার পর..
অপু ভাইঃ স্যার গো স্যার. আমারে মাফ কইরা দেন
এস আইঃ যা মাফ দিলাম.. কিন্তু তোর ছাড়বো না.. ব্লগে আমার নামে কি না কি লিখে দিবি কে জানে..
অপু ভাইঃ লিখবো না.. নিশির কসম..
এস আইঃ কি কইলি?
অপু ভাইঃ ইয়ে মানে ভুল হয়ে গেছে.. আরেকবার যদি কই তাইলে আমি সত্যি পাভেক্স খান
এস আইঃ আচ্ছা যা.. তয় কেউরে ফোন দিয়া আসতে ক.. মুচলেকা দিয়া ছাড়ায়া নিয়া যাক
অপু ভাইঃ স্যার আপনে অনেক ভালো মানুষ.. আপনেরে এত্তগুলো ধইন্যা
অপু ভাই পরিবেশ বন্ধুকে ফোন করলেন মুচলেকার জন্য। প্রায় ৪৫ মিনিট পর অপু ভাইকে মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যান পরিবেশ বন্ধু, সাথে এস আই কে টাটকা একটা কবিতাও শুনিয়ে যান..
“এস আই তুই মহা বোকা
করিয়াছিস ভুল
ধরিয়াছিস নাদান খোকা
যদিও ছেলেটা লুল।
আমি কবি শুধুই ছবি
বজ্রমুষ্টি হাত
হিসাব কিন্তু ফেরত পাবি
দেখে নিব এক হাত।
তোর চাকরি খেয়ে দেব
হবু মেয়র আমি
খোদার কসম বাচবিনা
করস যতই চামচামি
মডু কাপে আমার নামে
ব্লগাররা ভয় পায়
খুইজা দেখ ডানে বামে
কে তোরে বাচায়
থ্রেট দিয়া গেলাম তোরে
জর্দা দিয়া চাবাইয়া পান
একটা কথাই কমু তোরে
মডু সাবধান... মডু সাবধান...”
অপু ভাই, শিক্ষা হইলো তো? আমার পায়জামার ফিতা থাকে না.. তাই না? আবার বিটলামী করলে কিন্তু পরেরবার রাজহাসের ডিম
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।