আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘আমি কোনো মোল্লার ফাঁসি চাই না’

সৃষ্টি‌শীল একাত্তরে যারা গণহত্যা চালিয়েছিল, করেছিল মানবতাবিরোধী অবরাধ, আমাদের মা-বোনদের ইজ্জত লুটে নিয়েছিল--তাদের ফাঁসির দাবিতে জ্বলে উঠেছে আগুন। এ আগুন তারুণ্যের। আর তা দাও দাও ছড়িয়ে পড়ছে দিকে দিকে। এ আগুন ছড়িয়ে যাবে সবখানে। যাচ্ছেই তো।

শাহবাগ থেকে দোয়েল চত্বর, সেখানে থেকে সিলেট, ময়মনসিংহ, আমার প্রাণের নেত্রকোনায়--সারা বাংলায়। ১৯৭১-এ এই দেশকে স্বাধীন করার সেই যুদ্ধে অংশগ্রহণের সুযোগ আমরা পাইনি। আমাদের অনেকের তখন জন্মই হয়নি। কিন্তু এবার সুযোগ এসেছে, চেতনাযুদ্ধে অংশ নেওয়ার। সেইসব হিংস্র নরপশুদের রুখে দাঁড়াবার।

দেশটাকে আবারও আশ্বস্ত করবার যে, ‘আমরা তোমার শান্তি প্রিয় শান্ত ছেলে। তবু শত্রু এলে অস্ত্র হাতে ধরতে জানি, তোমার ভয় নেই মা আমরা প্রতিবাদ করতে জানি। ’ অনেককে বলতে শুনি, ‘জামায়াত-শিবির খুবই সংগঠিত। ’ গত কয়েক দিন তাদের তাণ্ডব লক্ষ করেছি। পুলিশ মেরেছে ওরা।

বাসে আগুন দিয়েছে। ত্রাস ছড়িয়েছে। ওরা যে সংগঠিত, কথাটার প্রমাণ দিয়েছে। কিন্তু এরা কি পাক-হানাদারের চেয়েও সংগঠিত, প্রশিক্ষিত কোনো বাহিনী? যে নিরীহ মানুষটি কয়েক ফোঁটা রক্ত দেখে ভয়ে কুঁকড়ে যেতেন, একদিন তিনিই হয়তো বন্দুক কাঁধে যুদ্ধে গিয়েছিলেন। হায়েনাদের মোকাবিলা করেছিলেন।

নিজের বুক থেকে টগবগে খুন ঝরিয়েছিলেন। আমার তারুণ্য যেন সেই রক্তের দাম দেয়। ‘দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা, কারও দানে পাওয়া নয়। ’ এই গান গাইছিলেন, ফকির আলমগীর। আর তা শতকণ্ঠে কোরাস হয়ে ছড়িয়ে পড়ছিল, গতকাল দুপুরে শাহবাগ মোড়ে।

আর থেকে থেকে উঠছিল স্লোগান, ‘ক তে কাদের মোল্লা, তুই রাজাকার তুই রাজাকার। ’ আমার রক্ত তখন টগবগ করে ফুটছিল। মনের ভেতর আশার আলো ছুটছিল। তারুণ্যের শক্তি জেগেছে আজ। যে শক্তি অফুরাণ।

ভয় নেই আর। জ্বলছে আগুন। আর আগুনের এই শিখা দেখে যেভাবে লেজ গুটিয়ে পালায় বনের জন্তু-জানোয়াররা, ওরা এভাবেই পালিয়ে যাবে। পালিয়ে গেছে। আজ কেউ যদি বলেন, ‘আমি কোনো মোল্লার ফাঁসি চাই না।

’ বলব আমি, না চাও। এই পৃথিবীর অনেক মানুষই তো কোনো অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চায় না। অনেক দেশে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় না। আমিও পারতপক্ষে কারও ফাঁসি চাই না। কিন্তু আজ এখানে ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি।

ওই গণহত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা যে গণহত্যায় জড়িত ছিল, একজন কবিকে, সুন্দরের স্রষ্টাকে হত্যা করেছিল, ধর্ষণে জড়িত ছিল, ট্রাইব্যুনাল এসবের প্রমাণ পেয়েছে। তাহলে তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হবে না কেন? ফাঁসির রুজ্জুতে ওকে ঝোলাতেই হবে। তা নাহলে, একদিন ক্ষমতার পট বদলালে, আবার কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে। বীরদর্পে কারাগার থেকে বেরিয়ে এসে আবার সে হুংকার দেবে।

এজন্য দর্প তার চূর্ণ করে দাও, ফাঁসি দাও। দিতেই হবে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।