www.cameraman-blog.com/
হাসিনাকে হত্যার চক্রান্ত করছে হরকাতুল জিহাদ: সিএনএন-আইবিএন
Sat, Dec 20th, 2008 3:50 pm BdST
মূল লিংক : Click This Link
ঢাকা, ডিসেম্বর ২০ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে তৎপর হরকাতুল জিহাদের ছয় আত্মঘাতী জঙ্গি। ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএন-আইবিএন শনিবার এক প্রতিবেদনে একথা জানিয়েছে।
ভারতের কয়েকটি গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএন-আইবিএন তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, "বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ-আল-ইসলাম বা (হুজি)। "
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হাসিনাকে সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছে যে, হুজির ছয় আত্মঘাতী সদস্যকে আওয়ামী লীগ নেত্রীকে হত্যার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। "
স্বরাষ্ট্র সচিব মো. আব্দুল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সন্ধ্যায় এ ব্যাপারে বলেন, "শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে হরকাতুল জিহাদের ছয় আত্মঘাতী জঙ্গি তৎপর এ সংবাদ ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএন-আইবিএন প্রচার করার পর আমরা সতর্কতামূলক যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।
"
তবে কোন ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন তা 'কৌশলগত কারণে' প্রকাশ করবেন না বলে জানান তিনি।
এদিকে এ ব্যাপারে ভারতীয় হাইকমিশনের মুখপাত্র দীপক মিত্তালের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানান, মোবাইলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ব্রেকিং নিউজ পেয়েই তিনি বিষয়টি অবহিত হয়েছেন।
দীপক মিত্তাল বলেন, "এ বিষয়ে আমাদের কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য নেই। "
কিছু দিন আগে আওয়ামী লীগের মুখপাত্র সৈয়দ আশরাফ সাংবাদিকদের জানান, তাদের নেত্রী হাসিনার জীবন ঝুঁকির মধ্যে আছে বলে তাদের কাছে খবর আছে। তবে খবরের উৎস প্রকাশ করেননি আশরাফ।
একইদিন তিনি তাদের নেত্রীর সর্বোচ্চ নিরাপত্তার দাবি জানান।
আওয়ামী লীগের দাবির পর সরকার শেখ হাসিনা এবং বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার জন্য এসএসএফ মোতায়েন করে।
সিএনএন-আইবিএন বলছে, "হুজির ছয় সদস্যের আত্মঘাতী দলটি এহতেশাম নামের পাকিস্তানের বিশেষ বাহিনীর এক সাবেক কর্মকর্তার কাছ থেকে গত দুই মাস সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। "
প্রশিক্ষণ শেষে ছয় জঙ্গিকে হুজি প্রধান ইমতিয়াজ কুদ্দুস ব্যক্তিগতভাবে দিক-নির্দেশনা দেয় বলেও সিএনএন-আইবিএন তাদের প্রতিবেদনে দাবি করেছে।
হাসিনা অতীতে বেশ কয়েকবার হত্যা প্রচেষ্টা থেকে রেহাই পেয়েছেন।
২০০৪ সালের আগস্টে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় তাকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।
এ ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচেন হাসিনা। এঘটনায় ২৪ জন নিহত এবং তিনশ' জন আহত হয়।
এর আগে ২০০০ সালে হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার নিজ জেলা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তাকে হত্যার চেষ্টা চালায় হুজি। হুজি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বর্তমানে কারাবন্দী মুফতি আব্দুল হান্নানের বাড়ি কোটালীপাড়াতেই।
সেসময় কোটালীপাড়ায় একটি রাজনৈতিক সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার জন্য হেলিকপ্টারে করে একটি মাঠে নামার কথা ছিল হাসিনার। প্রধানমন্ত্রী ওই মাঠে নামার আগে সেখান থেকে ৮০ কেজি ওজনের আরডিএক্স বিস্ফোরক উদ্ধার হওয়ার পর সমাবেশ বাতিল করা হয়।
সিএনএন-আইবিএন বলছে, "হাসিনা সার্বক্ষণিক বিপদের মধ্যেই আছেন। "
নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন স¤প্রতি আসন্ন নির্বাচন নিয়ে নাশকতার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন গণমাধ্যমকে। অবশ্য, পুলিশ ও র্যাব প্রধান নির্বাচন নিয়ে বড় ধরনের কোনো নাশকতার আশঙ্কা নাকচ করে দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন প্রথমে জানিয়েছিল, ২৯ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনের জন্য ২৪ ডিসেম্বর থেকে সেনা মোতায়েন করা হবে।
এরই মধ্যে সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ ২০ ডিসেম্বর সেনা মোতায়েনের কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কার কথা তুলে ধরে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে সেনা মোতায়নের কথা বলেন। ১৮ ডিসেম্বর থেকে সেনারা ব্যারাক থেকে গন্তব্যে রওনা হয়।
এর আগে ১৭ ডিসেম্বর দেশ থেকে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হয়।
বর্তমানে ৪০ হাজারের বেশি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মাঠে রয়েছে।
স¤প্রতি নীলফামারী এবং সিলেট থেকে আরেকটি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ বা জেএমবির ২০ জনের বেশি সদস্যকে আটক করে নিরাপত্তা বাহিনী।
আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের "ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ফ্রন্ট" (আইআইএফ) এর সহায়তায় ১৯৯২ সালে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ বা 'হুজি-বি' প্রতিষ্ঠিত হয় বলে কথিত আছে।
ওই বছরের ৩০ এপ্রিল রাজধানী ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে হুজির কয়েকজন নেতা সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশকে একটি ইসলামিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করার দাবি জানান।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক প্রতিবেদনে হুজির সঙ্গে আল-কায়েদার পাশাপাশি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক ইসলামি ঐক্য জোটেরও সম্পর্ক থাকার কথাও বলা আছে।
বিশ্বের সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের করা তালিকায় হুজি'র নাম আছে।
জঙ্গি সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা মুফতি আব্দুল হান্নান ২০০০ সালে হাসিনাকে হত্যা প্রচেষ্টা মামলার চার্জশিটভূক্ত আসামী।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হাসিনার বাবা ও বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবর রহমানকে ধানমণ্ডির বাসভবনে সপরিবারে হত্যা করে একদল সেনা কর্মকর্তা। সে সময় হাসিনা ও তার বোন রেহনা দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।
১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি সাবেক সামরিক শাসক এইচএম এরশাদের আমলে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের লালদিঘী ময়দানে পুলিশের গুলিবর্ষণের কবলে পড়েন শেখ হাসিনা।
ওই ঘটনায় হাসিনা রক্ষা পেলেও প্রাণ হারায় ২৪ জনের বেশি মানুষ।
পরের বছর আগস্ট মাসে রাজধাননী ঢাকায় হাসিনার ধানমণ্ডির বাসভবনে গুলিবর্ষণ করে অজ্ঞাত পরিচয় একদল বন্দুকধারী।
হাসিনাকে এর আগে ১৯৮৩, ১৯৮৪ এবং ১৯৮৬ সালেও বেশ কয়েকবার হত্যার চেষ্টা করা হয় বলে তার দল অভিযোগ করে আসছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।