যা চাই তা ভুল করে চাই, যা পাই তা চাইনা....
অনলাইন ব্যাংকিং আপনার আর্থিক লেনদেনকে অনেক সহজ করে দেয়। আপনি আপনার ব্যাংকের ওয়েবসাইটে গিয়ে লগইন করবেন ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজগুলো অফিসে বা ঘরে বসেই সারতে পারবেন। এতে আপনার সময় বাঁচবে ও ঝামেলা কমে যাবে। ছিনতাইয়ের মতো ঘটনাও এড়ানো যায় সহজেই। আপনি স্ট্যানডিং অর্ডারগুলো সেটআপ করতে পারবেন, ব্যাবসায়িক লেনদেনের জন্য অন্য লোকের একাউন্টে টাকা পাঠাতে পারবেন, চেকবুকে অর্ডার করতে পারবেন।
এমনকি সাধারণ লেনদেনের বাইরেও কিছু বাড়তি সুবিধা দিয়ে থাকে অনলাইন ব্যাংকগুলো। এইজন্যই অনলাইন ব্যাংকগুলো সারা পৃথিবীতে এত জনপ্রিয়। বিশ্বজুড়ে ক্রিমিনালদের আক্রমনের প্রধান লক্ষ্যবস্তও এটি। আমরা আজকে কিছু প্রধান ক্রিমিনাল এ্যাটাক ও কিভাবে প্রতিহত করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করব।
১. ফিসিং পদ্ধতি- আপনার ব্যাংকে ক্রিমিনালদের একাউন্ট থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে কিন্তু এরা আপনাকে এই মর্মে ব্যাংক থেকে চিঠি পাঠাবে যেন আপনার একাউন্টের নিরাপত্তার জন্য জরুরী আপনার ব্যাংকিং ডিটেইলস আপডেট করা প্রয়োজন।
এরা আপনাকে ভয় দেখিয়ে কাজ উদ্ধার করতে চাবে। ডিটেইল তথ্য হাতে পাওয়ে মাত্র এরা আপনার সব টাকা উঠিয়ে নিয়ে যাবে।
২. ডিটেইল আপডেট করার জন্য মেইল আসবে তাতে আপনার ব্যাংকের ঠিকানার মতো কাছাকাছি ঠিকানা দেয়া থাকবে। যেমন - http://www.theweebank.com হল আপনার ব্যাংক এড্রেস কিন্তু ওরা কাছাকাছি এড্রেস পাঠাবে যেটি দেখতে হুবহু একই রকম http://www.thevveebank.com। এখানে w' র পরিবর্তে দুটো ভি বসানো আছে যা হঠাৎ করে চোখে পড়বে না।
৩. থার্ডপার্টি কোন সফটওয়্যার পিসির কন্ট্রোল নিয়ে নিতে পারে।
৪. ভাইরাস, স্পাম, স্পাইওয়্যার প্রভৃতি পিসির ক্ষতি করতে পারে।
৫. কম্পিউটার হ্যাক হতে পারে।
৬. ফ্রেমিং - কনফিডেনসিয়াল একসেস কোড চুরি করার এটা আরেক উপায়। এটা ইউজারকে ভুল সারভারে রিডাইরেক্ট করে দেয়।
আপনার পিসির হস্ট ফাইল থেকে ডোমেইন নাম চুরি করতে পারে এরা, বা ডোমেইনের নাম রেজ্যুলুশন আছে এমন ডিএনএস সার্ভারে ম্যানিপুলেট করতে পারে।
কাস্টমার রা যখন অনলাইনে নিয়মিত তাদের ব্যালেন্স চেক করেন, নেটে থাকেন তখন সর্বোচ্চ নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। নিরাপদ অনলাইন ব্যাংকিংয়ের জন্য কি করবেন:
১. সিকিউরিটি সফটওয়্যার ইন্সটল করুন ও নিয়মিত আপডেট করে পিসি স্ক্যান করুন। পার্সোনাল ফায়ারওয়াল আপনার পিসিকে অধিক সুরক্ষিত রাখবে। ভাল এন্টিভাইরাস, এন্টস্পাইওয়্যার ব্যবহার করুন।
২. সেনসিটিভ ডাটা কোথাও পাঠাতে হলে প্রোটেক্ট করে পাঠান। আপনার পিন নাম্বার ও দরকারী তথ্য তখনই দিবেন যখন আপনি নিশ্চত যে আপনি ব্যাংকের নিরাপদ ও সুরক্ষিত পেজে আছেন। সেইসাথে ইন্টারনেটে ব্যাংকের ঠিকানাটা ভালভাবে চেক করে নিন।
৩. কার সাথে যোগাযোগ করছেন নিশ্চিত হয়ে নেবেন কোন লেনদেন করার আগে। ব্যাংকের ঠিকানা এড্রেসবারে ভালমতো বানান চেক করে নিন।
ব্রাউজার প্রেরিত সিকিউরিটি তথ্য যেমন সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশন চেক করুন। ইন্টারনেট সাইটের নাম ও সিকিউরিটি সার্টিফিকেটে দেয়া নাম একই আছে কিনা যাচাই করে নিন। বিশ্বস্ত সার্টিফিকেশন অথরিটি সম্পর্কে ব্যাংকে খোঁজ খবর নিন। যে কোন ধরনের ফিসিং বা পাসওয়ার্ড ফিসিং পরিহার করুন। ফ্রেমিং পরিহার করুন।
আপডেটেড এন্টিভাইরাস ও ফায়ারওয়াল আপনাকে এই কাজে সাহায্য করবে। তাই ফায়ারওয়াল, পপআপ ব্লকার ও স্পাইওয়্যার ডিটেকটর ইন্স্টল ও ব্যাবহার করতে হবে।
৪. সেনসিটিভ ডাটা ও একসেস মিডিয়া সম্পর্কে সচেতন থাকুন। অবান্ছিত একসেস থেকে পিন, চিপকার্ড প্রোটেক্ট করুন। অনলাইন মানি সার্ভিস বা শপিং করার সময় সতর্ক থাকুন এধরনের ডাটার ব্যাপারে।
আপনার হার্ডড্রাইভে পিন নাম্বার, একসেস কোড বা ক্রেডিট কার্ড নাম্বার সংরক্ষণ করবেন না। শুধুমাত্র ব্যাংকের সাথে লানদেনের সময় পিন, একসেস কোড ইউজ করুন। আপনার একাউন্ট লেনদেনের সময় কোন কারনে ব্লক হয়ে গেলে ব্যাংকে তাড়াতাড়ি জানান।
৫. সবসময় সেফ, সিকিউর ও শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যাবহার করুন। ভাল পাসওয়ার্ড ৬ থেকে ৮ কেরেক্টারের হয় ও অক্ষর আর নাম্বারের কম্বিনেশন হয় যাতে সহজে কেউ আন্দাজ করতে না পারে।
৬. ইমেইল ফিল্টার ব্যাবহার করতে হবে স্পাম ব্লক করার জন্য।
৭. না বুঝে কোন সফটওয়্যার বা ইমেইল এটাচমেন্ট ডাউনলোড করা যাবেনা।
৮. আপটুডেট প্রোগ্রাম ভার্সন ব্যবহার করুন। সফটওয়্যার ম্যানুফেকচাররা বাগ ফিক্সিং ও প্যাচেস তৈরী করে নিরাপত্তার জন্য। এগুলো ঠিকমতো ও নিয়মিত ইন্সটল করুন।
৯. আপনার পিসিতে নিয়মিত সিকিউরিটি চেক রান করুন।
১০. ব্রাউজারের সিকিউরিটি সেটিংস এক্টিভেট করুন।
১১. আপনার বর্তমান একাউন্ট টি বাজে বা ভুল লেনদেনের জন্য ইউজ করবেন না।
কিভাবে জরুরী অবস্হা মোকাবেলা করবেন সেটা জেনে নিন:
*কোনরকম সন্দেহ হলে অনলাইন শপিং, ব্যাংকিং ও অন্যান্য বিষয় যেগুলোতে ইউজারনেম, পাসওয়ার্ড ও অন্যান্য সেনসিটিভ তথ্য দিতে হয় সব বন্ধ করে দিন।
*সিকিউরিটি সফটওয়্যার আপডেট করে কম্পিউটার স্কেন করুন।
অপ্রয়োজনীয় ফাইল মুছে দিন। তারপর পিসি রিস্টার্ট করুন।
*সত্যি বড় ধরনের কোন ঝামেলা হয়ে গেলে এক্সপার্ট কারো সাহায্য নিতে হবে ডাটা পুনরুদ্ধারের জন্য।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।