আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রুবীর অব্যক্ত কথা........বাঁচাতে হবে জনিকে........./ভাস্কর চৌধুরী

সময়... অনাদি... হতে... অনন্তের... পথে...

একটি মৃত্যুর কিছু ব্যাখা এমন হয় ! যেখানে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আরেকটি মৃত্যু অপেক্ষা করে। যে মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে কিছু স্বপ্ন, কিছু প্রত্যাশা, কিছু প্রাপ্তি ভেঙ্গেচুরে এক হয়। হয়তো এর শেষ আছে, আছে সমাপ্তি, কিন্তু মৃত্যুর বিপরীতে মৃত্যু হয় এমন ব্যাখা বা উপাখ্যান কমই আছে। তারপরও উপাখ্যান রচিত হয়....... প্রত্যন্ত গ্রামে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে....যা দেশ-বিদেশ ছাড়িয়ে শেষ সীমানায় গিয়ে পৌঁছে। আবার অনেক ঘটনাই সবার অন্তরালে থেকে যায়।

কেউ জানলেও অনেকেই জানেনা। বাস্তব বোধ আর নির্মমতার চারিপার্শ্বে কিছু কথা, কিছু ঘটনা চোখে ভেসে উঠে। সবাই জানে, তাক লেগে যায়...........! গত ৩ নভেম্বর রাতে জনিরা জলে উঠুক প্রতিশোধের আগুনে Click This Link শিরোনামে একটি পোস্ট দিয়েছিলাম ব্লগে। আমার পোস্ট দেওয়ার পর থেকে অসংখ্য ফোন পেয়েছি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ব্লগারদের কাছ থেকে। তাদের আবেগ, সহানুভূতি, সহমর্মীতা, মর্মস্পর্শীতা সব দিয়ে আমার লেখার দ্বার ঘুরে গেছেন।

তাদের ভাষ্যের প্রকাশে আমিও আমার কিছু অব্যক্ত কথা বলেছি। লেখাটি পড়ে ব্লগার শেখ রহিম একটি মৃত্যুর জন্য আরেকটি মৃত্যুর অপেক্ষা Click This Link শিরোনামে একটি কবিতা , ব্লগার মানবী আপু ডিসপোজেবল মানবীদের কথা- আরেকটি ছবি, আরেকবার ভুলে যাবার পালা!!! Click This Link শিরোনামে একটি মর্মস্পর্শী ও বেদনাদায়ক পোস্ট দেন। পরে ব্লগার লালদরজা আল্লাহর দোহাই এই বাচ্চাটাকে আমাদের বাঁচাতে হবে Click This Link ব্লগার কৌশিক মৃত মায়ের পাশে ৮ মাসের জনি? একমাত্র খাবার চায়ে চুবানো মুড়ি? Click This Link শিরোনামে এবং ব্লগার আরিফ জেবতিক ভাই মৃত্যুঞ্জয়ী শিশুটিকে কোলে তুলে নিতেই হবে আমাদের Click This Link একটি পোস্ট দেন। এছাড়াও ব্লগার ঝুমী সার্বিকভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। নিহত রুবীর রেখে যাওয়া তিন সন্তানের মধ্যে জনি ও ঝর্ণা আমার লেখায় অনেকের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বলেছিলাম আপডেট জানাবো।

তৎক্ষনিকভাবে কিছু আপডেট দিয়েছিলাম। বিশেষ করে মানবী আপুকে, ফয়সল নোই ভাই, লাল দরজা, কৌশিকসহ অনেক ব্লগারকে বারবার জানিয়েছিলাম শেষ আপডেট। আর ব্লগার শেখ রহিমকে সব সময়ই কাছে পেয়েছি। এই সেই লাঘাটা নদী। যেখানে পড়ে রয়েছিল রুবির লাশ এক নজরে রুবী হত্যাকান্ড........! রুবী হত্যাকান্ডের আজ ২৯ দিন পার হলো।

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার মরিচা গ্রামের গৃহবধু রুবি বেগম হত্যাকান্ডের এক মাস অতিবাহিত হলেও আসামী দেবর কুদ্দুস মিয়ার স্ত্রী মামলার ২নং আসামী খায়রুন বেগমকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। নিহত রুবি বেগমের দেবর কুদ্দুস মিয়াকে পুলিশ দু’দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে সে সহ আরো তিনজন এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত এবং পারিবারিক দ্বন্দ্বের কথা স্বীকার করেছে। সে পুলিশকে আরও গুরুত্বপুর্ন তথ্য দিয়েছে। তার দেয়া তথ্য মতে আসামী ধরতে কু্‌দ্দুসের শশুরবাড়ি মৌলভীরচক গ্রাম ও আরো কয়েকটি গ্রামে অভিযান চালিয়ে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এদিকে মা হারা শিশু জনি পেটের পীড়া সহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে।

কমলগঞ্জ উপজেলার পাশ্ববর্তী রাজনগর উপজেলার মরিচা গ্রামের গৃহবধু রুবি বেগমের হত্যা ঘটনাটি ঘটে গত ৯ অক্টোবর রাতে। রুবি বেগমের বাবার বাড়ি কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের গোপীনগর গ্রামে। ১৫/১৬ বছর পূর্বে রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের মরিচা গ্রামের প্রবাসী মাসুক মিয়ার সাথে রুবির বিয়ে হয়। গৃহবধু রুবি বেগমের কাছে জমি বিক্রী করবে বলে দেবর কুদ্দুস মিয়া ও তার স্ত্রী খায়রুন বেগম ১লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা নেন । কিন্তু পরবর্তীতে জমি রেজিষ্ট্রি করে না দেওয়াতে রুবি বেগমের সাথে তার দেবর ও দেবরের স্ত্রীর প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ হত।

ঘটনার আগের দিন দেবর কুদ্দুস মিয়া রুবি বেগমকে তার উঠানে ফেলে মারধোর করে বলে জানা যায়। পরের দিন গোপীনগর ও মরিচা গ্রামের মধ্যবর্তী লাঘাটা নদীর পাশ থেকে গৃহবধু রুবির লাশ ও পাশে জীবিত শিশু কন্যা জনিকে পুলিশ উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে রুবির বৃদ্ধা মা সিতারা বেগম বাদী হয়ে দেবর কুদ্দুস ও তার স্ত্রী খায়রুন বেগম কে আসামী করে রাজনগর থানায় মামলা করেন। ঐ দিনই মামলার ১নং আসামী কুদ্দুস মিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করে। কিন্তু ঘটনার ২৮ দিন অতিবাহিত হলেও কুদ্দুসের স্ত্রী আসামী খায়রুন বেগমকে পুলিশ এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি।

এদিকে রুবি হত্যা কান্ডের বিচার ও প্রকৃত আসামীদেরকে গ্রেপ্তারের দাবীতে আজ ৫ নভেম্বর দুপুর ১টায় ‘কমলগঞ্জ সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ’ মানববন্দন কর্মসূচি পালন করে। এতে এলাকার শতাধিক মানুষ মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেন। নানি ছাড়া কিছুই বোঝেনা জনি.....এভাবেই মাটিতে শুয়ে থাকে জনি কেমন আছে জনি······ জনির অবস্থা এখন আগের মতই। ডাক্তারের ভাষ্য অনুযায়ী ঠান্ডা , জ্বর ইত্যাদিতে ভূগছে। অসুখের কারণে জনির খাওয়ার মাত্রাটা কমে গেছে।

শিশু জনির অসুস্থতা সম্পর্কে আলাপ কালে তার চিকিৎসক কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ আব্দুল মুকিত জানান, ঘটনার দিন ভোর রাত থেকে লাঘাটা নদীর পাশে খোলা আকাশের নিচে মায়ের লাশের পাশে থাকায় ঠান্ডা লেগে কাশি ও সর্দি জ্বর হয়েছে । তাছাড়া এক বছর বয়সের শিশু মায়ের বুকের দুধ না খাওয়াতে বর্তমানে পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়েছে। তিনি সার্বক্ষনিক সতর্ক দৃষ্টি রেখে তার চিকিৎসা করে যাচ্ছেন। তিনি বলেছিলেন সম্ভবত নিউমোনিয়ার লক্ষন। ওর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন।

ব্লগারদের সুবিধার্থে আমি ডাক্তারের নাম্বার দিয়ে দিলাম-০১৭২০-৫১১২৭৮। দুই নাতনীর পাশে সিতারা বেগম কেমন আছেন রুবীর মা সীতারা বেগম রুবীর মা সিতারা বেগম। কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের গোপীনগর গ্রামে অন্যের আশ্রয়ে জনি ও বড় নাতনি ঝর্ণাকে নিয়ে বড় কষ্টে আছেন বলে জানালেন সিতারা বেগম। তিনি একথায় বাকরুদ্ধ। ঠিকভাবে কথা বলতে পারছিলেন না।

চোখ টলমল করছিলো ·····! যেন কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। আমাদের পেয়ে মেয়ের বিচারের আকুতি এমন ছিল যে, রুবী হত্যার বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদবে না তো? আমাদের নির্বাক ভাষা শ্রোতা হয়ে শোনা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। আছে দু’কলম লেখার। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা ভাষ্য বিজয় দেবনাথ। রাজনগর থানার এস আই।

রুবী হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। তার ভাষ্যে জানা যায়, ঘটনার সাথে জড়িত একজন আসামী ধরেই খালাস । কিন্তু মূল আসামী এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে। যে লোকটিকে ধরা হয়েছে তিনি রুবীর দেবর। নাম কুদ্দুস মিয়া।

তারই স্ত্রী খাইরুন বেগমকে এখনও ধরা হয়নি। সে নাকি পলাতক। পুলিশ আরো জানায়, মামলাটি মামলার গতিতে চলছে। আমরা আসামী ধরার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি। এই হচ্ছে তদন্তকারী কর্মকর্তার ভাষ্য।

তার ভাষ্যের বাণী শুনতে চাইলে তার নাম্বারে কল করতে পারেন। ব্লগারদের সুবিধার্থে তার নাম্বারটি দিয়ে দিলাম-০১৭৩৬-৮৭০৬৬৫। রুবীর পরবাসী স্বামী রুবীর পরবাসী স্বামী মাসুদ মিয়া। রুবী ও মাসুদ মিয়ার বিয়ে হয় প্রায় সাড়ে ১৩ বছর হয়েছে । তিনি দুবাইয়ে আছেন ৭-৮ বছর যাবৎ।

রুবী হত্যাকান্ডের পর তিনি দেশে ফিরেননি। মাসুদ মিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয় তিনি বিষয়টি জেনেছেন । সময় করে তিনি দেশে আসবেন। অপরদিকে রুবীর মা ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, বিষয়টি রুবীর স্বামী হয়তো জানেনা। যতটুকু সম্ভব এই দ্বারে তথ্য দিতে পেরেছি।

সম্ভবহীন কিছু তথ্য থেকে থাকলে আগামীতে দেবো। সবশেষে বলবো যত কিছু বলি আর যত কিছুই করি না কেন ·······বাস্তবে কিছু করতে·····অন্তত জনির জন্য কিছু করতে হবে। না হয় ভূমিকাটি বাস্তবে রূপ নেবে। হয়ে যাবে একটি মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আরেকটি মৃত্যু। আমি চাই না·······আরেকটি মৃত্যু।

জনি বাঁচবে। ওকে বাঁচতে হবে। জনিকে বাঁচাতে হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.