আগের পোস্টেই বলেছিলাম, আজ আমার আকীকা দেয়া হয়েছে । ভাবলাম লিখেই ফেলি ।
গতকাল দুপুর থেকে আমার খালামনি আমার নাম নেটে সার্চ করছিল । বিদ্যুৎ ছিল না । এত গরমের মধ্যেও খালামনি আমার নাম খুঁজছিল ।
সেই দুপুর থেকে বসে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত একটানা খুঁজে তিন পৃষ্ঠা জুড়ে অনেক নামের লিস্ট তৈরি করে ফেলেছিল । আমার খালামনিটা না একটু পাগলাটে স্বভাবের । নয়তো কেউ তিন পৃষ্ঠা নামের লিস্ট তৈরি করে?
আর ওদিকে আমার নানু কোথা থেকে ১৬ টা নাম খুঁজে এনেছিলেন । আমার কয়েকজন নেট মামাও সুন্দর সুন্দর নাম দিয়েছিলেন । এত ব্যস্ততার মধ্যেও উনারা আমার জন্য কষ্ট করেছেন ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ
রাত হল যখন তখন আমার নানু নামের বিশাল লিস্ট দেখে খেই হারিয়ে ফেললেন । নানু বলছিলেন আমার নাম বুশরা রাখতে । বুশরা নামটা আমার নানুর খুব পছন্দ । কিন্তু ওদিকে নানুমনি বললেন, জুরাইনা অথবা নুহা রাখতে । দুজনে কোন সিদ্ধান্তে আসতে না পেরে দায়িত্ব ছেড়ে দিলেন আমার পাগলাটে খালামনিটার ওপর ।
খালামনি বলল, জেরিন রাখবে কিন্তু বাধ সাধলো আমার ছোট খালামনি । ছোট খালামনি বলল, জেরিন নাকি চায়ের নাম!
রাত বাড়তে থাকলো । আমি দেখলাম সবাই কি চিৎকার চেঁচামেচি করছে । এত বড় বড় মানুষ এত চিৎকার চেঁচামেচি করতে পারে! বাপরে! চিৎকার করার কথা আমার... কই আমি তো চিৎকার করে কান্না করি না । আমার কান্নার শব্দ এক রুম থেকে আরেক রুমে শোনাই যায় না ।
রাত সাড়ে ১২ বেজে গেল । কেউ কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারলো না । এদিকে আমার আম্মুও খালামনির ওপর দায়িত্ব ছেড়ে দিল । শেষে সিদ্ধান্ত হল লটারী হবে । ছোট ছোট কাগজে সবার পছন্দের নাম গুলো লিখে লটারী করা হবে এই মুহূর্তে আমার ছোট নানু বলল, মিশাল নামটা নানুর খুব মনে ধরেছে ।
ফিলিস্তিনের হামাসের প্রধান হলেন খালিদ মিশাল । ওদিকে ছোট খালামনি তো আগে থেকেই মিশেল নামটা পছন্দ করছিল । মিশাল নামটা দুইটা ভোট পেয়ে গেল । মিশাল অথবা মিশেল নামটাকে জিততে হলে খালামনির ভোট পেলেই হবে । কারণ খালামনি একাই ৪ টা ভোট দিতে পারবে ।
নানু, নানুমনি, আম্মু আর খালামনির নিজের ভোটটা ।
খালামনি বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলো । আমি শুধু শুয়ে শুয়ে পিট পিট করে তাকাচ্ছিলাম... বড় বড় মানুষেরা এত ছেলেমানুষী করতে পারে না!
শেষে খালামনি সম্মতি দিয়েই দিল । আর কি! হয়ে গেল আমার নামটা । উফফ!! কত সময় যে নিল!
এদিকে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম আমি জানিই না ।
রাত প্রায় দেড়টার সময় আমার নামটা ঠিক করা হয় ।
আজ একদম সকালে আমার আকীকা হল ।
ওহ.. আমার দাদুও এসেছেন । আমার দাদু আমার জন্য কত্ত জামা এনেছেন । সবগুলো জামাই আমার পছন্দ হয়েছে ।
আমার নানুমনি আমাকে একটা করে জামা পরায় আর মিষ্টি করে হাসে তখন আমার কত যে ভাল লাগে...
অনেক রাত হয়ে গেল । রাত হলেই আমার ঘুম কোথায় যেন চলে যায় । ৫ মিনিট পর পর আমি জেগে উঠি । আর একটু কান্না করলেই আম্মু চুপে যেতে বলে ।
আপনারাই বলেন, আমার এ বয়সটা কি কান্না করার বয়স না?
ওহ.. আমার নামের পুরো অর্থটা বলে যায়..
মাহজুবাহ মিশেল এর অর্থ সংরক্ষিত আলো অথবা রহস্যময় আলো ।
এরকমটাই হওয়ার কথা । যদিও আমার খালামনি নিশ্চিত না । তবে এই সাইটে আমার অনেক মামা আছেন । উনারা ভাল বলতে পারবেন ।
সবাইকে আবারো শুভেচ্ছা ।
আমার জন্য দোয়া করবেন ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।