আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জুম্মাবারের চাঁদাবাজী



একটা সময় ছিলো যখন মানুষ ধনী গরিব নির্বিশেষে তীর্থ যাত্রায় যেতো, তাদের আবাসন এবং আহার যোগাতো স্থানীয় ধর্মশালা, মন্দির কিংবা মসজিদ। হজ্জ যাত্রীদের জন্য বিভিন্ন মোকামে স্থানীয় প্রশাসকদের উদ্যোগে অতিথি নিবাস থাকতো- অর্থ্যাৎ একবার আল্লাহর নামে রাস্তায় নেমে পড়লে অন্তত খাওয়া শোয়ার জায়গার অভাব হতো না। ধর্মে নিয়োজিত মানুষের প্রতি প্রায় প্রতিটা দেশের মানুষের আলাদা সম্ভ্রমবোধ আছে। তাই তাদের জন্য বিশেষ কিছু সুবিধা দেওয়া হয়, তবে এই সুযোগ সুবিধা শুধুমাত্র ধর্মে নিয়োজিত মানুষের জন্য। গত ২ বছরে ফুটপাত অবমুক্তকরণ, বস্তি উচ্ছেদ প্রকল্প এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে নিয়মিত বিরতিতে।

ফলে ঢাকার রাস্তায় বেড়েছে ছিন্নমূল মানুষের ভীড়। ঢাকার রাস্তায় সংসার পেতে বসা অসংখ্য মানুষের মাথার উপরে ছাদ নেই। বড় বড় বিপনিবিতানের শেডের নীচে কোনো মতে ঘুমিয়ে থাকা মানুষের নির্দিষ্ট ডেরা নেই, পার্কে আর বিশ্ববিদ্যালয় ভবনের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকে অসংখ্য শিশু। ঢাকা শহর মসজিদের শহর, এখানে আল্লাহর ঘরে তালা মেরে চলে যায় মানুষ, প্রতিটা মসজিদের দরজা বন্ধ থাকে সারা রাত। অথচ এই মসজিদ যদি শুধুমাত্র রাতের বেলায় নিরন্ন ছিন্নমূল মানুষের শোবার জায়গা হতো তবে ঢাকা শহরের রাস্তায় হয়তো কোনো দিনই কোনো মানুষকে উদোম আকাশের নীচে বৃষ্টিতে নির্ঘুম কাটাতে হতো না।

আমাদের ধর্মোন্মত্তা প্রচন্ড, আমাদের জায়গা দখল করে মসজিদ বানানোর আসক্তি প্রচন্ড, কিন্তু আমরা ইচ্ছা করলেই এগুলোকে অন্তত ধর্মীয় দৃষ্টকোণ থেকে দেখলেও মানুষের উপকারে লাগাতে পারতাম। কে কোথায় কার নামে কি বললো,কে কোথায় কার ব্যঙ্গচিত্র আঁকলো এই নিয়ে রক্তগঙ্গা বয়ে যায়, মন্দির লুট হয় বাংলাদেশে, ওলামা, মাশায়েখ ধর্মীয় প্রধানেরা এসব নিয়ে মাঝে মাঝে সরব হয়ে উঠে বিশৃঙ্খলা বাড়িয়ে দেন, অনেকেরই নিজস্ব দলীয় প্রধানের নীতিরীতি মানানোর অন্ধ প্রয়াস আছে, তবে বাংলাদেশের কোনো ধর্মবেত্তা, ধর্মীয় প্রধান এক দিনের জন্যও বললো না, আমাদের মসজিদগুলো নিরন্ন মানুষের একবেলা আহার জোগাবে, আমাদের মসজিদগুলো ছিন্নমূল মানুষদের নিশ্চিত রাতের ঘুম দেবে। যদি মসজিদ এমন উদ্যোগ নেয় তবে এটার জন্য সহৃদয় মানুষের সহায়তার কমতি হবে না, তবে বাস্তবতা এমনই মসজিদ কমিটিতে থাকা মানুষেরা জুম্মা বারের চাঁদার টাকা আত্মস্যাৎ করতে আগ্রহী, মানুষের সেবার সেটা ব্যবহারের আন্তরিকতা তাদের নেই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।