যারা উত্তম কে উচ্চকন্ঠে উত্তম বলতে পারে না তারা প্রয়োজনীয় মুহূর্তে শুকরকেও শুকর বলতে পারে না। এবং প্রায়শই আর একটি শুকরে রুপান্তরিত হয়।
আবারো আরেকটি ফাইল, আরেকটি মানুষের জীবন, আমি বুঝতে পারিনা কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল নাকি জীবন? ৩১শে জুলাই থেকে আজ ৬ই সেপ্টেম্বর। দৈনিক দিনকালের ৩১ শে জুলাইয়ের পেপার কাটিং, কিছু জরুরী তথ্য সমেত কয়েকটা কাগজ। একটাতে বোনম্যারো স্টাডি রিপোর্ট, একটাতে কতৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণের কাগজ।
কিন্তু মূলত, পরিস্থিতিগত গল্পটা একই, একজন শিক্ষার্থীর জীবন বাঁচাতে হবে। এই লেখার শিরোনাম অন্য কিছুও হতে পারত, যেমন মনে মনে অনেকদিন ধরে ভাবছিলাম শ্বাশত প্রসঙ্গে লিখব, “কৌশিক বলল বানিজ্য, রাসেল বলল আবেগ....যতই নিষ্ঠুর শোনাক কর্পোরেট নাড়াচ্ছে জীবনের ভরবেগ। “
ব্লগে এবং ব্লগের বাইরে শ্বাশত প্রসঙ্গে তর্ক এবং কুটতর্ক অনেক হয়েছে। কিন্তু সবকিছুর পরও আমি যখন টেলিভিশনে শ্বাশত প্রসঙ্গে কোন কিছু দেখি বা শুনতে পাই তখন ভালো লাগে, আমি অন্যদের চাইতে একটু কাছাকাছি ছিলাম, একটু বেশি কাছাকাছি। আমি করতে পারিনি কিছুই, কিন্তু এমন অনেকে আছেন যারা পেরেছেন যারা করেছেন।
তাদের দেখেই আশা জাগে। বারবার।
এই আশার ভিত্তি মানুষজনই করে দিয়েছেন। আবার নিরাশারও। কিন্তু মূল জায়গার পরিবর্তন হয়নি খুব।
খুব সহসাই এর কোন পরিবর্তনও হবে না। মানুষের জন্যই মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। বারবার যতবার দরকার ততবার। আমি না পারলে আপনি, আপনি না পারলে অন্য কেউ। কেউ এই সময়ে না পারলে অন্য সময়ে।
এই ধরণের কাজের ক্ষেত্রে যতটা নির্মোহ আর পেশাদ্বারী থাকা যায় (তীব্র আবেগ না থাকলে কোনটাই সম্ভব না) ততই মঙ্গল। তাই আমার কোন আকাঙ্খা নেই পূর্বতন পরিস্থিতিতে কে সঠিক বা বেঠিক ছিলেন সেটা বিচার করার। বরং আকাঙ্খা আছে আরেকবার উদ্যমী করে তুলবার মত তথ্য উপাত্ত মানুষজনদের জানানোর। সাধারণত অভিজ্ঞতা মানুষকে ঋদ্ধ করে আবার অভিজ্ঞতা মানুষকে ক্লান্তও করে। কিন্তু ঋদ্ধ ক্লান্তি যাই বলিনা কেন, শ্বাশত প্রসঙ্গে প্রতিটা মানুষের প্রতিটা পদক্ষেপকে আমি সম্মান করি।
কৌশিকের বানিজ্য বা রাসেলের আবেগ (প্রতিনিধিশীল দুটো ধারা অর্থে) আমি যতটুকু তাদের চিনি তা মূলত একসূত্রের, মানুষের জন্য কিছু করার। যেমনটা ব্লগের সকলের ক্ষেত্রেই। এমনটা আমি দেখতে পাই; এমনটাই আমি দেখতে, দেখাতে আর প্রতিষ্ঠা করতে চাই। যদি এতে একজন শ্বাশতর একজন রহিনের কোন কাজে আসে। কিছু করার জন্য এটাই একমাত্র পাটাতন তা আমি মনে করি না, কিন্তু এরজন্য এই পাটাতন বা অন্য পাটাতনের ব্যবহার করব না কেন? তবে আবারো নির্মোহ, পেশাদারী দক্ষতায় কর্ম বন্টন ছাড়া এই ব্যবহার কোন অর্থও বহন করে না।
ফলে বিষয়টা আবার আরেকটি কেস এ যুক্ত হবার নয়। একটা ধারাবাহিক অভ্যাস গড়ে তুলবার। একইসাথে ভীষণ সম্পৃক্ত ও বিযুক্ত থাকার অভ্যাস গড়ে তোলা। বিষয়টা নেতৃত্বেরও কেবল নয় বরং এমন একটি সংস্কৃতি গড়ে তোলা যেটা অংশগ্রহণকারীদের আরো দক্ষ, টু দ্যা পয়েন্ট এবং সংখ্যায় বাড়িয়ে তুলবে। বিষয়টা তাই একজন মানুষকে বাঁচানোর নয়, বিষয়টা মানুষকে বাঁচানোর চেষ্টার অভ্যাস গড়ে তুলবার।
এবার রাইনকে নিয়ে বলি। মো: মোশরেকুল ইসলাম রাইন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালেয়র ৩য় বর্ষের ছাত্র। একুইড লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত। চার ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট। বড় ভাই মোবাইল কোম্পানীতে কর্মরত।
বড় বোন পুলিশের এস আই। আরেক বোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। বাবা অবসর প্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা। চিকিৎসা ব্যায়ে নিশ্চিতভাবেই পারিবারিক পূঁজি ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। আবারো পুরোনো অধ্যায়।
অন্যদের অর্থ সাহায্য লাগবে। কিন্তু এই অধ্যায়ই বা হবে না কেন? বাংলাদেশের কয়টা পরিবারের পারিবারিক পুঁজি কোটি টাকা, যে তারা বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টের জন্য ৬০ লাখ টাকা জোগাড় করে ফেলবে? এরপরও ১০ লাখের মত যোগাড় হয়েছে। বাকীটা বাকীই রয়ে গেছে। এই বাকীটা পূরণ করা দরকার যথাসম্ভব পূরণ করা দরকার।
এর বেশি আর কি বলব? দেশের বড় বড় কুমিরের ব্ল্যাক মানিকে সরকার আত্মীকরণ করে এই ধরণের কাজে ব্যবহার করতে পারত।
কর্পরেটদের আবশ্যিকভাবে একটা ফান্ড থাকা দরকার ছিল। সব চাপ এই ১০- ৩০ হাজারী মধ্যবিত্তের উপর পড়ে, এই ব্লগে দেওনা যাইবো না অন্যটাতে দিতে হইব তারা বেশি ভাল ইত্যাদি বিষয়? এগুলো বাহাসই। উলঙ্গ বাহাস।
আমি বরং অন্যান্য তথ্য আর সাহায্য পাঠানোর/ যোগাযোগের ঠিকানা দেই
মো: মোশরেকুল ইসলাম (রাইন)
পিতা: মোসলেম উদ্দিন আহমেদ
মাতা: লিলি আখতার
গ্রাম: দেওয়ান পাড়া, কলেজ বোর্ডিং রোড
জেলা: জয়পুরহাট
পেশা: ছাত্র, বি.এস.(কৃষি) ৩য় বর্ষ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
গাজীপুর-১৭০৬
একাউন্ট ১
মোশরেকুল ইসলাম (রাইন) চিকিৰসা তহবিল
সঞ্চয়ী হিসাব নং: ৩৪০১৮৯১৪
সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, বশেমুরকৃবি শাখা
বশেমুরকৃবি, গাজীপুর-১৭০৬
একাউন্ট ২
আইএইচএম মুশফিকুর রহমান
সঞ্চয়ী হিসাব নং: ৩৪১৯৪৯৩৮
জনতা ব্যাংক লি.
লোকাল অফিস, মতিঝিল ঢাকা।
যোগাযোগ:
০১৭১৭৭৬৪৪১২
০১৯১২৭৩১৪২৬
০১৫৫৩৫৩৮৭৪০
০১৫৫৮৬৪৯৩৭৪
হাসপাতালের ঠিকানা
কেবিন ব্লক
রুম-৩১৩
৩য় তলা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
প্রয়োজনীয় চিকিৎসা বোন মেরো ট্রান্সপ্লান্ট, ৯৫% ব্লাস্ট।
উপরের এই সবগুলো তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন দ্রাবিড় হাসান খান। তার কাছ থেকেই রাইনের কথা জানতে পারা। দ্রাবিড় নৃবিজ্ঞান জাবি, র ছাত্র। কোন এক অজানা অথবা খুব জানা কারণে দ্রাবিড়ের উপর রাইনের পুরো পরিবার খুব নির্ভর করে ফেলেছে। দ্রাবিড় এই নির্ভরতার দায় এড়াতে পারে না।
আমি দ্রাবিড়ের অনুরোধের দায় এড়াতে পারি না। আমি রাইনকে বা কাউকেই আর একটা ফাইল হিসেবে দেখতে চাই না। আপনারা চান কি?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।