আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেউ কি শকুন্তলার পুরো কাহিনীটা জানেন?

আমি যতটুকু জানি সেটুকু শেয়ার করতে পছন্দ করি। সেজন্য এই ব্লগ খুললাম।

ভাগ্যক্রমে আমি ইন্টারে পড়ার সময় আমার বাংলা শিক্ষকের কাছে শকুন্তলার পুরো কাহিনীটা শুনতে পেরেছিলাম। পুরোটা মনে নেই, যতটুকু মনে আছে বলছি। আপনারা কেউ যদি কাহিনীটা জেনে থাকেন তাহলে দয়া করে কোনো ভুল থাকলে শুধরে দেবেন, কোনো মজার ডিটেইল থাকলে তাও জানান।

কাহিনীটা আমারনোটসে দেব বলে এটা সঠিক হওয়া চাই। তাই সাহায্য চাইছি। বিশ্বামিত্র নামে এক বড় ঋষি ছিল। সে উপাসনা করতে করতে অনেক এগিয়ে যাচ্ছিল। দেবতারা মনে করলো সে তাদেরকেও ছাড়িয়ে যাবে।

তাই দেবতারা মেনকা নামের এক অপ্সরাকে পাঠিয়ে দিয়েছিলো তার মনোযোগ সরানোর জন্য। তারা সফলও হলো। অপ্সরা মেনকার গর্ভে জন্ম নিল শকুন্তলা। শকুন্তলাকে রেখে তারা চলে গেল (আসল কাহিনীতেও নাকি এমন লেখা আছে- ‘চলে গেল’)। একটা শকুন্ত বা ভাসপাখি তাকে লালন পালন করতে লাগলো।

শকুন্তলা শকুন্ত পাখির পাখনার আশ্রয়ে বড় হতে থাকে। একসময় মহামুনি কণ্ব শকুন্তলাকে শকুন্তের কাছে দেখতে পান। তিনি শকুন্তলার দায়িত্ব নেন এবং শকুন্ত তাকে রক্ষা করেছিল বলে তার নাম দেন শকুন্তলা। শকুন্তলা কণ্বের আশ্রমে বড় হতে থাকে। একদিন দুষ্মন্ত (দুশন্তো) নামে এক রাজা হরিণশিকারে বনে আসেন।

কিন্তু ঘটনাক্রমে তিনি কণ্বের আশ্রমে যান। তবে কণ্ব আশ্রমের বাইরে ছিলেন। ঘটনাতো তোমরা বইয়েই পড়েছো। কণ্বের আশ্রমে দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে দেখলো, শকুন্তলাকে তার পছন্দ হলো, তাদের বিয়ে হলো এবং শকুন্তলা গর্ভবতী হলো। কণ্ব একসময় ফিরে এলেন, ফিরে এসে শকুন্তলা ও দুষ্মন্তের কথা জানতে পারলেন।

প্রথমে তিনি মেনে নিতে পারেন নি, কিন্তু পরে মেনে নিয়েছিলেন। মাঝে এক ঘটনা ঘটলো। শকুন্তলার কাছে দুর্বাসা নামে এক ঋষি পানি চেয়েছিলো। দুর্বাসা ঋষি কথায় কথায় অভিশাপ দিতো। শকুন্তলা রাজা দুষ্মন্তকে নিয়ে ব্যস্ত ছিল, তাই পানি দিতে দেরি হয়েছিলো।

তাই দুর্বাসা ঋষি শকুন্তলাকে অভিশাপ দিলো- তুই যার জন্য আমাকে পানি দিতে দেরি করলি সে তোকে কখোনোই চিনতে পারবে না। পরে তিনি অভিশাপটি পুনর্বিবেচনা করেন, এবং যে অভিজ্ঞান (প্রমাণ) হিসেবে কিছু দেখালে সেই লোক শকুন্তলাকে চিনতে পারবে। রাজা দুষ্মন্ত খবর পেলেন তার রাজ্যে তাকে প্রয়োজন। সে শকুন্তলাকে একটি আংটি দিয়ে বললো আমার রাজ্যে এটা নিয়ে গেলে তোমাকে আমি চিনবো। রাজা চলে যায়।

শকুন্তলা একটি ছেলে শিশুর জন্ম দিলো। তার নাম ছিল ভরত (বানানটা ঠিকই আছে, ভারত কিংবা ভর্তা নয়)। কয়েকবছর পর আর থাকতে না পেরে ভরতকে নিয়ে শকুন্তলা রাজা দুষ্মন্তের সঙ্গে দেখা করতে গেল। শকুন্তলা ও ভরত নৌকা দিয়ে যাচ্ছিল। শকুন্তলা পানি খেতে গিয়ে তার হাত থেকে আংটিটা খুলে পানিতে পড়ে যায়।

শকুন্তলা দুষ্মন্তের কাছে যান। তাকে সব ঘটনা বলেন কিন্তু দুষ্মন্ত সব কথাই ভুলে গেছেন। বাধ্য হয়ে শকুন্তলা প্রাসাদ থেকে বের হয়ে আসেন। সেই রাজ্যেই এক পরিবারে আশ্রয় নেন। শকুন্তলার আংটিটা একটা মাছ গিলে ফেলেছিল।

সেই মাছটা এক জেলে ধরে ফেলে। যখন সে পেটের ভিতর আংটিটা পায় তাতে দেখে যে এটার মধ্যে দুষ্মন্তের নাম লেখা আছে, তখন সে আংটিটা দুষ্মন্তের কাছে নিয়ে গেল। তবুও রাজা দুষ্মন্ত মনে করতে পারলো না। পরে সে একটি দৈববাণী (অদৃশ্য দেবতার কথা) শুনতে পেলেন- আংটিটা শকুন্তলার এবং সে তোমার স্ত্রী। পরে তিনি শকুন্তলাকে খুঁজে বের করেন এবং তাকে স্বীকার করে নেন।

একসময় ভরত বড় হয়। তাকে দায়িত্ব অর্পণ করে দিয়ে রাজা শেষ জীবন ধর্মকর্মে কাটিয়ে দেন।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।