mahbub-sumon.com
বেশ অনেকদিন পর লিখতে বসছি। আজকাল কি যে হয়েছে আমার, নিজেই সেটা বুঝতে পারি না। লেখকরা অনেক সময় বলে থাকেন " লেখা আসছে না ", ক্রিকেটাররা বলে " ফর্ম নাই " । আমি লেখকও নই, ক্রিকেটারও নই ; একজন সাধারন ব্লগার মাত্র । আজকাল একদমই লিখতে ইচ্ছে হয় না।
এটাকি অলসতা ? মনেতো হয় না। ব্যস্ত দিন শেষ করে যখন বাসায় এসে কিছুই করতে ইচ্ছে হয় না। নিত্যকার অভ্যাস বসত সন্ধ্যায় পিসির সামনে বসি, বন্ধুদের সাথে আন্তর্জালিক আলাপ চারিতায় মেতে উঠি, একটু আধটু আন্তর্জালিক জগতে ঘোরাফেরা করে পিসি বন্ধ করে ঘুমুতে যাই। সকালে উঠে সেই নিত্যকার জীবন। আমার এক বিলাত প্রবাসী বন্ধু বলে এ জীবনকে বলে ' ব্লাডি ডগি লাইফ '।
এই ব্যস্ততা - এই ফুসরত, এভাবেই চলছে জীবন। সকালে উঠে কাজ, সন্ধ্যায় ফায়ার প্লেসের পাশে বসে আয়াস করে এক কাপ চা, একটু রাত করে টিভিতে অলিম্পিক দেখা; জীবনটা যেনো একটা লুপের মাঝে আটকে পড়া। কম্পাইল করেছি , ডিবাগ করেছি, টেস্টিংও শেষ কিন্তু জীবন নামের সিস্টেমটাকে বাগে আনতে পারছি না। হয়তো জীবন নামক উপন্যাসের প্রথম পাতা পড়া শেষ করেছি, হয়তো মৃত্যুর আগ মুহুর্তে উপন্যাসের শেষ পাতায়ও পৌঁছুতে যখন পারবো , কিন্তু তখন মনে হবে জীবনের কিছুই দেখা হলো না, অনেক কিছুই পাওয়া হলো না। আমার মা বলেন, অল্পতে সন্তুস্ট হতে পারলে নাকি জীবনে সুখি হওয়া যায়।
কথাটি সুখ হবে না শান্তি হবে ? কি সব লিখছি সেটা নিজেই বুঝতে পারছি না। আজ কাল জীবন ও জীবনের অর্থ নিয়ে আবঝাব ভাবছি নিজের মনেই।
অবশেষ সরকারের খাতায় শীতকুমারের নাম কাটা যাচ্ছে বলে ! আর মাত্র দু সপ্তাহ। বসন্তকুমার আসছে। কিন্তু ঠান্ডা কমার কোনো লক্ষন নেই।
গত রাতেও মনে হয় মাইনাসে ছিলো, আজ ঠান্ডা একটু আধটু কমলেও রুম হিটার চালিয়ে ঘরে বসে থাকা ছাড়া উপায় নেই। মাঝে সাজে বিড়ি টানার জন্য বাহিরে যেতে হলেও কখন ঘরে ফেরত আসবো সেটার জন্য মনের স্টপওয়াচটা পাগলের মতো দৌড়ুতে থাকে।
বড্ড অলস হয়ে যাচ্ছি আজ কাল। প্রতি সকালে নিত্য অভ্যাস মতো খবরের কাগজে চোখ বুলালেও আশাবাদী হবার মতো কিছু পাই না। দেশ যেমন ছিলো সেরকই থাকছে, অনেক ক্ষেত্রে পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে।
যা ভেবেছিলাম সেটাই হচ্ছে; ভদ্রবেশী চোরগুলো এক এক করে বের হয়ে আসছে। দাবার গুটির চাল চালছে কিছু ভাঁড়, দেশ গোল্লায় গেলে যাক এমনই এক ভাব। আমরা ম্যাংগো জনতা দেখছি এবং অসহায় হয়েই দেখছি। রাজনীতির খবর গুলো পড়লে মনে হয় পর্ন পড়ছি। রাবিশ।
কদিন আগে কুয়েত থেকে এক কাপড়ে ফেরত আসা বাংলাদেশী ভাইদের খবর পড়ে মনটা প্রচন্ড খারাপ হয়ে যাচ্ছিলো। রক্তমাখা শরীরে লোকগুলোর কান্নামাখা অসহায় চেহারা দেখে রাগে-ক্ষোভে-কস্টে চিৎকার করে অনেককিছুই বলতে ইচ্ছে হচ্ছিলো, কিন্তু পারিনি। পত্রিকার পাতায় যখন পড়ি, দূতাবাসের কর্মচারী-কর্মকর্তাদের নির্লিপ্ত আচরন তখন ইচ্ছে হয় সেই বরাহ নন্দনদের পশ্চাত দেশে কষে লাথি মেরে বলি " কুত্তাকি আওরাত, তোগো বেতনতো আমগো ট্যাক্সের টাকা থেইকাই আসে, সেইটা কি ভুইলা যাস ? হারামখোরের দল "। কিন্তু সামনে যখন হাইকমিশনের অমুক-তমুক আমলা আসে তখন হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলি " ভাই কেমন আছেন ? "
নলেজ ম্যানেজম্যান্ট সিস্টেম নিয়ে বিশাল একটা রিপোর্ট লিখতে হবে, সেটাও ধরা হচ্ছে না। অথচ এক গাদা বই এনে বাসায় স্তুপ করে রেখেছি।
প্রতিদিনই ভাবী শুরু করবো কিন্তু শুরু করা আর হয়ে উঠে না। মনে মনে একটা খসরা দাঁড় করিয়েছি, সেটাকে একটু ঘসা মাজা করতে হবে। কিন্তু করা হয়ে উঠছে না। কাম অন মাইট, কাম অন।
আদার ব্যাপরির জাহাজের খবর রাখার মতো আন্তর্জাতিক ব্যপার নিয়েও মাথা ঘামাচ্ছি! রাশিয়া-জর্জিয়া যুদ্ধ দেখছি।
হয়তো যুদ্ধের পেছনে কারন হিসেবে অনেক কিছু বের করে ফেলা যাবে কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে এটাকে রাশিয়ার জন্য একটি টেস্ট কেস হিসেবে দেখছি। পরাশক্তি হিসেবে পুনারায় দাঁড়াবার জন্য পেশী শক্তি দেখাবার একটি সুযোগ। দর্শকরা কি প্রতিক্রিয়া দেখায় সেটা দেখার একরকম উদগ্র নোংরা আগ্রহ। কিন্তু খেলাতো সবে শুরু। সামনে অনেক কিছুই দেখতে হবে।
মানুষ শান্তি চায় কিন্তু শান্তিতে থাকতে পায় না। শিল-পাটায় যুদ্ধ , মাঝ খানে অসহায় মানুষগুলোর কস্ট।
এলিফ্যান্ট রোডের মল্লিকার গলির মুখে মুন্সির দোকানের কথা মনে পড়ছে, একসময় অনেক বাকি খেয়েছি মুন্সির দোকানে। সেদিন মানুকায় কফি শপে কাজ করা ইটালিয়ান লোকটিকে দেখে মনে হচ্ছিলো মুন্সিও যেনো বসে আছে। ওইতো মুন্সি।
ঢাকায় গেলে মুন্সির খোঁজে যেতে হবে। আচ্ছা মুন্সি কি আমাকে চিনতে পারবে? সময়তো কম হলো না ! এক নয় দুই নয় , এগারোটি বছর। সময় কিভাবে চলে যায়। মনে হয় এইতো সেদিন।
আচ্ছা মাসকট প্লাজার পেছনে এনাম ভাই কি এখনো হাসি মুখে চা বানান ?
বাসার খুব কাছেই মানুকা ওভাল।
অজি উচ্চারনে ' মানেকা ওভাল '। কথায় আছে না মক্কার লোক হজ্ব পায় না। বাসার এতো কাছে মানুকা ওভাল কিন্তু খেলা দেখতে একবারো সেখানে যাওয়া হয়নি। গত কমাস আগে ভারত-শ্রীলংকা ক্রিকেট হলো, যাওয়া হয়নি। কিছু দিন আগে ছিলো সিডনী সোয়ানের সাথে ওয়েস্টার্ন বুলডগের ফুটি ম্যাচ ,যাওয়া হয়নি।
আমি অবশ্য ফুটি বা রাগবি কোনোটাই ঠিকমতো বুঝতে পারি না। তবে রাগবিটা একটু ভালো লাগে। বেশ মারদাঙা খেলা। মারদাঙায় আবার আমার বিশেষ দূর্বলতা আছে।
পড়াশোনা করার অভ্যাসটো মরে যাচ্ছে।
সামনের সপ্তাহ থেকে লাইব্রেরীর দিকে হাঁটা দিতে হবে আবারো। শুনেছি আমার প্রিয় অরুন্ধতীর একটা বই এসেছে। বইটা পড়তে হবে। সাথে কিছু ফিকশন হলে মন্দ হয় না। বাবা এসব বইকে বলতেন আউট বই, আউট বই পড়লে নাকি পড়াশোনা নস্ট হয়।
কিন্তু সেই বাবাই আমার জন্য আউট বই কিনে আনতেন। আমার নিজের নামে পারিবারীক লাইব্রেরীও করা হয়েছিলো। আবার সেই আউট বইয়ের জগতে ফেরত যেতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।