পর্ব-১
সকালের নাস্তা সেরে,পরনের কাপড়টা মাত্র একটা হাত ঢুকে দিচ্ছেন এমন সময় একটা কল এলো মোবাইলে। মোবাইলটা বাজতেই চলছে,কি বিকট শব্দ রে বাবা,এই phone atten করনা কেন? রান্না ঘর থেকে বাবুলের স্ত্রী কলমীর কন্ঠ এলো। সকালের নাস্তা তৈরী করতে গেলে কলমীর মেজাজটা একটু গরম থাকে। প্রত্যেকটি সকাল বেলা গরম ভাত না খেলে পেট ভরেনা বাবুলের,তাই বাধ্য হয়েই স্বামীর সেবা করতে হয়। বাঙ্গালী মেয়ে স্বামীর সেবাই তাদের সুখ তাই রাখ-টাক করলেও স্বামীর সেবা দানে কোন র্কাপূণতা করেনা কলমী।
শ্বশুর-শ্বাশুরী,স্বামী, আর কোলের ছেলে নিয়েই কলমীর সুখের সংসার। এর মধ্যেই মোবাইলের একটা কল রিসিপ করা হলো না,বাবুল এই রকমই খামখেয়ালীপনা করে। ফোন ধরে আবার কখনও ইচ্ছা করেই চুপ করে বসে থাকে। বাহিরে যাওয়ার জন্য সম্পুর্ন প্রস্তুতি নিয়ে কলমীকে বলল"কই গো আমার ময়না,ভাত নিয়ে এসো !আসতেছি গো একটু ধর্য্য ধরা যায়না বুঝি? রান্না ঘর থেকে কলমীর কন্ঠ এলো। দু'জনা একে অপরকে প্রচন্ড ভালোবাসে,প্রেম করে বিয়ে করলে নাকি সর্ম্পকের ফাটল ধরে কিন্তু বাবুল-কলমীর প্রেমের শেষ পরিনিতি বিয়ে হযেছে গত কয়েক বছর আগে এর মধ্যে একসন্তানের জনক-জনকী হয়েছে ওরা।
কিন্তু সেই কলেজ জীবনের মতই আজও ওদের প্রেম-চাওয়া পাওয়া আছে। মনে হয় জীবন্ত কোন সবুজ পাতা।
ভাতের প্লেট হাতে নিয়ে কলমী ঘরে এলো। বাবুল চেয়ারে বসতেই আবার মোবাইলে কল এলো। মোবাইল রিসিপ করল একটু বিরক্ত হয়েই।
শব্দটা কানে বাঁজে হয়ত এই বিরক্তএ রিসিপ করল। হ্যালো বলতেই ওপ্রান্ত থেকে ভেসে এলো কন্ঠ বলল"বাবুল আমি সবুজ,খুবই খারাপ খবর আছে তাড়া তাড়ি আয় বটতলা বাজারে। ফোনে বলা যাবেনা। "বাবুল খুবই দ্রুত মটর সাইকেলটা ষ্টার্ট দিয়ে বাহির হলেন। কলমী পিছন থেকে বলল''হিরো তুমি কি রাগ করে চলে যাচ্ছো? খেয়ে যাও প্লিজ!এই খেয়ে গেলে কখন আসবে সেইটা তো ঠিক নাই।
সারাদিন রাজনিতি নিয়ে ব্যস্ত থাক,বউ বাচ্চার কথা, তা'তো একবারও মনে থাকেনা। "বাবুল কোন কথার উত্তর না দিয়ে চলে গেলেন। কলমী খুবই মন খারাব করে বলতে লাগল সংসারটা মনে হয় আমার একার একদিন,দুচোখ যেদিকে যায় সেই দিকে চলে যাবো সেই দিনই বুঝবে কত ধানে কত চাল। আবল তাবল বকাবকি করে ছেলেকে খেতে দিলেন।
বাবুল বটতলায় এলো।
থানা সদরে একটি স্থান বটতলা নামে পরিচিত একটু নিরিবিলি জায়গা। সন্টু দাড়িয়ে আছে। বাবুল সন্টুর ঘারে হাত দিয়ে বলল "কি খবর রে ? সালা আমার খাবার সময় পর্যন্ত দিলিনা। বল কি খারাপ খবর?" সন্টু চোখ দুটো উপরে ভাজ করে বলল"নিফাত খুন হয়েছে জানিস? বাবুল বলল "না জানিনা,কি বলছিস?মাথা-মুথা তোর খারাপ হয়েছে নাকি?" না আমার মাথা ঠিক আছে বাবুল এখন কি হবে খুবই দ্রুত কর, নইলে জেলে যেতে হবে। বাবুল সত্যিই এবার আকাশ থেকে পরল!প্রথমে বাবুল মনে করেছিলো সন্টু ওভার ড্রিংস করে আবল-তাবল বলছে,কিন্তু সন্টুর মুখের এক্সপ্রেশন দেখে বুঝতে পারল ঘটনা সত্য।
বাবুল বলল "তুই কোথায় খবর পেলি?" সন্টু বলল "আমার পাড়ার মোড়ে লোকজনের ভিড় দেখে সামনে গেলাম। তারপর গিয়ে দেখলাম সবাই আলাপ করতেছে ভারতের সীমান্তে একটা লাশ পেয়েছে বি এস এফ এবং সেই লাশটা বিডিআর এর হাতে হস্তান্তর করেছে। এপারের লোকজন লাশটি সনাক্ত করেছে, লাশটি নিফাতের। " বাবুল বলল "তুই এখন আড়ালে থাক আমি ব্যাপারটি দেখছি। "সন্টু চলে গেল।
বাবুল চিন্তা করছে কি ভাবে ঘটল ঘটনাটা,কে খুন করল? মনে হয় আমাকে ফাসিয়ে দেওয়ার পায়তারি করছে অন্যকেউ কিন্তু আমি তো মানুষের ক্ষতি করিনাই তাহলে? এই প্রশ্নের উত্তর হয়ত একদিন বাবুল পাবে কিন্তু আজচিরসত্য নিফাত খুনের আসামি বাবুল। যদিও বা এখনও তেমন কিছু নমুনা পাওয়া যায়নাই। কিন্তু গতপরশু নিফাতের সাথে যে ঘটনা ঘটেছে তা তো সবাই জানে। তাহলে কিভাবে আড়াল করবেন বাবুল নিজেকে! সবাই জানে বাবুল নিফাতকে জোড়পুর্বক উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছে। এবং বাবুলের ভয়েই কেউ সাহস করে বাধা দেয়নাই।
সবাই জানে বাবুল রাজনিতি করে। পোলাপান অনেক ওদের সাথে গন্ডগোল
কালের
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।