অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা
সে স্মৃতি জমাতো ভালোবেসে তাই স্মৃতিচিহ্নে ভরে উঠে তার গোপন তোরঙ্গ
আমি বুকের ভিতরে তার মুখচ্ছবি নিয়ে ঘুরি কোথাও সমর্পন করতে পারি না স্মৃতির ভার
দিন যায়, দেয়ালের ক্যালেন্ডার বদলায়
তার পুরোনো স্যুটকেস ভরে যায় খুটিনাটি স্মৃতিআলাপনে
তবু কোনো কোনো মুখ দেখে তার মুখ পড়ে মনে ।
------------------------------------------------------------------------
কবিতা বিষয়ে এখনও অনেক কিছুই অমীমাংসিত রয়ে গেছে- এখনও অনেক সিদ্ধান্ত বাকি রয়ে গেছে- কোনো একটা স্থির সিদ্ধান্তে এখনও পৌঁছাতে পারি নি কবিতা বিষয়ে- তাই বারংবার নিজের সাথে নিজের আলোচনা কবিতা প্রসঙ্গে-
যদিও কবিতার কোনো স্থির পাঁচফোঁড়ন নেই বাজারে- কোনো নিয়ম নির্দিষ্ট করা নেই তাই যখন কাউকে বলি ওর কবিতা হয় না, কিংবা যখন কাউকে বলি তোমার কবিতা হচ্ছে- তোমাকে দিয়ে কবিতা হবে- তখন আসলে আমি নিজে ঠিক কি বলতে চাই?
কবিতা মানুষের অন্তরঙ্গ অনুভবের সারমর্ম বলা যায় এক অর্থে- আর সেখানেই সব গণ্ডগোলের উদ্ভব এমন নয়- বরং যেকোনো ভালো কবিতার শুরুই এখান থেকে- একজন মানুষের নিজস্ব অনুভবের জায়গাটা সার্বজনীন হয়ে উঠাতেই কবিতার স্বার্থকতা-
একটা পর্যায়ে যখন আমি বেশ অপরিপক্ক ছিলাম তখন মনে হতো রুপক আর উপমার চমকে আর চটকে সব বদলে দেওয়া যাবে- অনেক পরিশ্রম করে- ভাবনা করে নির্মাণ করা উপমা আর রূপক হয়তো কিছু সময়ের জন্য কবিতার দুর্বলতা ঢেকে রাখতে পারে - তবে উপমার কিংবা রূপকের অপরিমিত ব্যবহার আদতে কবিতার ক্ষতি করে বেশী- এটা অন্তত আমার অনুভব- তাই যখন অনেক অনেক উজ্জল উপমা কিংবা রূপক মাথার ভেতরে বসে মাথা চুলকায়- আমি এখন যদিও কবিতা লিখি কালেভদ্রে তবে খুব যত্ন করে এসব উপমা আর রুপপককে এড়িয়ে যেতে চাই-
তবে সর্বাংশে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না- কারণ উপমা আর রূপক অনেকটা অদৃশ্য আড়ালের কাজটা করে কবিতায়- আমার ব্যক্তিগত জীবনযাপনের অনুভব আর আমার স্মৃতির ভেতর থেকে সংশ্লেষণের মাধ্যমে এক একটা বিচ্ছিন্ন অনুভবকে আলাদা করে রাখতে সাহায্য করে- রূপকরের আড়ালে আমি আমার ব্যক্তিগত জীবন আর প্রকাশিত জীবনের ভেতরে একটা ন্যুনতম ব্যবধান ধরে রাখতে পারি- এইটুকুর জন্য উপমার প্রয়োনীয়তা অনুভব করলেও এখন উপমা আর রূপককেই কবিতার মূল অনুষঙ্গ ভাবতে পারি না-
আরও গভীরে গিয়ে আমার অনুভবের ভেতরেও কিছু স্পষ্ট নির্বাচনের বিষয় থাকে- এইসব নির্বাচনের কাজটা কখন কিভাবে হয়ে যায় সেটা আমার অজানা- আর অজানা বলেই আমার কাছে যখন কোনো এক অদৃশ্য জায়গা থেকে একটা মাত্র পংক্তি চলে আসে- তখন আমি হয়রান থাকি- ওটাকে যথাযোগ্য ব্যবহারের জন্য নানাবিধ উপায় কল্পনা করতে থাকি- যেমনটা হয়েছে এই বিরহ লেখাটা নিয়ে-
শুধুমাত্র কারো কারো মুখ দেখে তার মুখ মনে পড়ে- এই একটা বিষয়েই আমি নিশ্চিত ছিলাম তবে যখন অবশেষে লিখে নামালাম এটাকে তখন দেখা গেলো অন্যসব পংক্তি আসলে ঠিকভাবে আমার অনুভবটা ব্যখ্যা করতে পারছে না- ওখানে খানিকটা অনুযোগ আর অভিযোগের সুর চলে এসেছে- হয়তো এবার যদি শুধুমাত্র বিরহের অনুভবটাই জানাতে হয় তবে আমি আরও বাড়তি সবগুলো পংক্তি বাদ দিয়ে শুধু লিখতে চাই
----------------------------------------------------------------
অকারণে
কারো কারো মুখ দেখে
তার মুখ পড়ে মনে।
-------------------------------------------------------------------
আমার মনে হয় এইটুকুই আদতে যথেষ্ট বিরহ নামক বোধটা স্পষ্ট করবার জন্য।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।