প্রবাসীদের প্রয়াস
আইয়ুব আহমেদ দুলাল
নীলিম করকা
(১)
পুরানো ঢাকার রাস্তায় এতো জ্যাম সিহাব রিক্সায় বসে থেকে থেকে বিরক্ত হয়ে গেছে। কিছুক্ষন পর পর রিক্সা একটু এগিয়ে যায় আবার দাঁড়িয়ে থাকে অনেক সময় ধরে। পাশেই একটি ঘোড়ার গাড়ী। পুরানো ঢাকার ঐতিহ্য ঐ ঘোড়ার গাড়ী। তবে বর্তমানে রাস্তায় গুটিকয়েক দেখা যায়।
ঘোড়াগুলোও পুরানো। জরাজীর্ন, রোগাক্রান্ত। সিহাব দেখল ঘোড়ার গাড়ীতে চলমান দুইটি ঘোড়ার মধ্যে একটি হাড্ডিসার, আরেকটি মোটামুটি নাদুস-নুদুস ও পরিচ্ছন্ন। পিছনে এক গুচ্ছ লেজ, বেশ ভালই দেখাচ্ছিল।
‘ বাহ্, ঘোড়াটার লেজতো বেশ সুন্দর ! - সিহাব বলল।
‘ হ ভাই, এমন সুন্দর ঘোড়া পুরান ঢাহায় অহন আর নজরে পড়ে না। যেইগুলো আছে হেইগুলো দ্যাখ্লে মনে অয় সোমালিয়াত্তন আইছে। - রিক্সাচালক বলল।
সিহাবের খুব হাসি পেল।
‘ তুমি আবার সোমালিয়া চেনো নাকি ?
‘ চিনুম না ক্যান ? ঐ দ্যাশে অহন দুর্ভিক্ষ ছলতিছে, টিভিতে দেহিছি।
অভাবী মানুষগুলাইন কত কষ্টে আছে! দেখ্লে মনে অয় হ্যারা পিথিবীর বাইরে অন্য কোনহানে বাস করে।
‘ কেন, তোমার এমন মনে হয় কেন ?
‘ হুনেন ভাই, পিথিবীতে থাকলে তো কেউ না কেউ তাগরে দেখ্তো।
‘ অবশ্যই দেখে, কেউ না কেউ তো দ্যাখে।
‘ দ্যাহে না ভাই, দ্যাহে না, বুঝাই যায়। এই দুন্যেত কেউ কারোরে দেহে না।
সবাই যার যার ধান্দায় থাহে।
‘ কে বলল তোমাকে ? মানুষইতো মানুষের জন্যে।
‘ ভাই, ঐ কথাগুলাইন আম্নেগ বইয়ের ভিত্তে রাহেন। মানুষ যদি মাইনষের লাইগাই অইতো তাইলে বুশ খান্কির পোলায় সাদ্দামের গোয়ায় বাঁশ না দিয়া ঐ অভাবী মানুষগুলার মাথার উপর বাঁশের মাছা’তো বানাইয়া দিবার পারে। পারে না কন্ ?
‘ হ্যা পারে।
কিন্তু মাঁচায় থাকলে হবে, খাওয়া লাগবে না ? খাবার দেবে কে ?
‘ ক্যা, ব্লেয়ার ছোদানীর পোলায় কী করবো ? হ্যায় দিতে পারবো না ?
রিক্সাচালকের কথা শুনে অবাক হল সিহাব। একজন খেটে খাওয়া লোক। রিক্সাচালনা যার পেশা। সারাদিন সে ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে সংসারের ব্যয়ভাব যোগান দেয়। তার চিন্তাধারা রিক্সা আর সংসার এই দুইয়ের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকার কথা।
তারওতো সংসারে অভাব কম নয়। অথচ তার চিন্তাশক্তি ছড়িয়ে গেছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। একেই বলে মনুষ্যত্ব। প্রকৃত অর্থে যাদের থাকা উচিত তাদের নেই কেন? এটা সকলেরই প্রশ্ন। রিক্সাওলার অকপট প্রকাশ ভঙ্গিতে সিহাব তখনো মিটিমিটি হাসছিল।
জ্যাম একটু হাল্কা হওয়া মাত্র আইল্যান্ড থেকে একসারি সরে গিয়ে দুই তিনটা রিক্সা ওভারটেক করে এগিয়ে গেল ঐ ঘোড়ার পাড়ীটি। ফলে সিহাব ঐ গাড়ী থেকে আরো দুইতিনটা রিক্সার পিছনে পড়ে গেল।
এক পর্যায়ে যানজটের মধ্যে রিক্সার ফাঁক দিয়ে ঐ পরিচ্ছন্ন ঘোড়াটির লেজ তার নজরে পড়ল। তার কাছে বেশ ভালই লাগছিল। যানযট পুনরায় কিছুটা হাল্কা হলে রিক্সাচালক সুযোগ বুঝে ফাঁকফোকড় পেরিয়ে চার-পাঁটটা রিক্সা পিছনে ফেলে সামনে চলে গেল।
সিহাব ব্যাপারটা বেশ এন্জয় করল। পিকুলিয়র টাইপের রিক্সাচালক। ভালমন্দ নানান কথা তার মুখে শোভা পাচ্ছিল। হঠাৎ সে পিছন ফিরে সিহাবের দিকে তাকিয়ে বলল- ‘ভাই, এই দ্যাহেন ঘোড়ার লেজ।
সিহাব ফিরে তাকাল।
লক্ষ্য করল ঐ ঘোড়ার লেজের দিকে। কিন্তু হায়! তাকিয়ে দেখে ওটা ঘোড়া নয়, একজন রূপসী রমনী। তার চুলগুলো ঐ ঘোড়ার লেজের মতই। পার্থক্য করা কঠিন। খুব আপসোস হল।
মনে প্রশ্ন জাগলো- কেন মেয়েরা নিজেদের চুলগুলোকে রাঙিয়ে ঘোড়ার লেজের মত করে ফেলে। কেমন দেখায়! রাঙানো ঐ চুলগুলোকে কী রঙে প্রকাশ করা যায়! বাংলায় বললে বাদামী আর ইংরেজীতে ব্রাউন, মেহেদী কালারও বলা যায়, তবে গোবরে কালার বললে পারফেক্ট হয়। যেভাবেই বলা হোক না কেন, আসলে কেমন দেখায় ? মেহেদী লাগিয়ে চুলের প্রকৃত রংটাকে পরিবর্তন করে ফেলে। সে ক্ষেত্রে সাদা চুলটাকে ভাল মানায়, বিশেষ করে বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের পাকা চুল।
মুসলমানদের জন্যে মেহেদী ব্যবহার করা একটা উত্তম কাজ।
তবে শরীরের বিশেষ কয়েকটি স্থানে, যেখানে ব্যবহার করলে আদব কায়দা ও পবিত্রতা ঠিক থাকবে। হয়ত কোথাও লেখা নেই, তবুও সুন্নত বললে বোধহয় ভুল হবে না এবং ওয়াজে হুজুরদের মুখে সুন্নত হিসাবেই বলতে শুনেছি। কারণ নবী করিম (সঃ) দাঁড়িতে ও চুলে মেহেদী ব্যবহার করেছিলেন। সেই হিসাবে আমরাও ব্যবহার করতে পারি। তবে কালো চুলে বা কালো দাঁড়িতে ব্যবহার করলে তেমন একটা বুঝা যায় না।
সাদা হলেই ভাল দেখায়। কিন্তু আমাদের দেশের বর্তমান যুগের মেয়েরা পবিত্রতা রক্ষা করে মেহেদী ব্যবহার করেনা। তারা ব্যবহার করে ওয়েষ্টার্ন ষ্টাইল হিসাবে নিজেকে উপস্থাপন করার জন্যে। অর্থাৎ আধুনিক হওয়ার অপচেষ্টা মাত্র। তাই তারা চুলে, হাতে, এমনকি পায়েও মেহেদী ব্যবহার করে থাকে।
মুলতঃ পায়ে মেহেদী ব্যবহার করা মোটেই উচিত নয়। এটা কমনসেন্সের বিষয়। যা নবী করিম (সঃ) এর দাঁড়িতে শোভা পেয়েছিল, তা কীভাবে মুসলিম উম্মার পায়ে স্থান পায় বোধগম্য নয়।
শোনা যায়, প্রকৃতির অবদান কালো চুলে যদি মেহেদীর রঙটা ফুটে না ওঠে তাহলে বিউটি পারলারে ব্যবহৃত হয় ¯িপরিট জাতীয় এক ধরনের কেমিক্যাল। যা চুলে লাগানো মাত্রই ধোঁয়া উঠে এবং সঙ্গে সঙ্গে ওয়াশ করে ফেলে।
অর্থাৎ চুলের প্রকৃত কালারটাকে পুঁড়িয়ে ফেলা হয়। তারপর ব্যবহার করে এক ধরনের রঙ। সেই রঙ দিয়েই সাজে বিভিন্ন স্টাইলে। পরনের পোশাক যদি হয় লাল তাহলে মেচিং করে চুলের রঙটা করা হয় লালসে। যদি নীল হয় তাহলে চুলের রঙ নীলসে করা হয়।
ব্রাউন কালার সব পোশাকের সঙ্গেই চালিয়ে নিতে হয়, কিছুই করার থাকে না। কারণ ওটা ফিক্সড কালার। সেক্ষেত্রে প্রকৃত রঙ কালো আর থাকে না।
পশ্চিমা দেশের মেয়েদের চুল বাদামী, চেহারা সাদা। মানে- ত্বক লালসে কিংবা দুধে আলতা অথবা সাদাও বলা যায়।
প্রকৃতিগতভাবেই এর উৎপত্তি। তাদের পোশাক-আশাক কৃষ্টি-কালসার সেই রকম। বাদামী চুল ও খোলামেলা পোশাক তাদেরই মানায়। বাঙালী মেয়েরা যদি কৃত্রিম ভাবে ঐ বেস ধারন করে তাহলে কতটুকু মানানসই হয়, একটু বিবেক খরচা করলেই বোঝা যায়। তাছাড়া ফর্সা মেয়েরা যদি চুল লালসে বানাতে পাটা-পুতার সহায়তা নিয়ে সাজুগুজু করে তাহলে মোটামুটি ভালই দেখায়।
কিন্তু পাইকারী হারে যদি সবাই ঐ বেস গ্রহন করে বা অফর্সা ত্বকের মেয়েরাও যদি ঐ বেস নেয় তাহলে কেমন দেখায় ? মূলতঃ অনিজিনালের কোন বিকল্প নেই। সেক্ষেত্রে নিগ্রোরাই নিশ্চিন্ত।
বড় বিচিত্র আমাদের দেশের নারীরা। তারা স্বাধীনতা চায়। পশ্চিমা দেশের পোশাকে সুন্দরী প্রতিযোগীতায় অংশ নেয়।
এ কেমন সুন্দরী ? যে যত খোলামেলা ও স্বল্প পোশাক পরিধান করে উম্মুক্ত মঞ্চে নিজের দেহকে প্রদর্শন করবে সেইই নাকি সুন্দরী। সব অবিচার মেনে নিচ্ছি আমরা। অথচ এই নারীদের মর্যাদা অনেক। সব ধর্মই নারীকে মর্যাদার আসন দিয়েছে। একজন নারীই হচ্ছেন মা, বোন, প্রেমিকা, স্ত্রী অথবা মেয়ে।
মেয়েরা হচ্ছে পুরুষের অঙ্গ থেকে তৈরী। তাদের স্থান পুরুষের হৃদয়ে, হৃদপিন্ড জুড়ে। হৃদয়ের ঐ সিংহাসনটা একজন নারীর জন্যে নির্মিত। নারী হচ্ছে পুরুষের প্রেরণা। একজন পুরুষের জীবনে কোন বিশেষ নারীর আবির্ভাব না ঘটলেও একজন মায়ের আবির্ভাবতো ঘটেই।
কারণ তিনিও একজন নারী। মায়ের প্রেরনাই প্রথম। সুতরাং নারী ছাড়া পুরুষ অচল। তাইতো যুগে যুগে এই পৃথিবী জুড়ে কবি, সাহিত্যিকরা যতটুকুই অবদান রেখে গেছেন তার সবটুকুই ঐ নারী বা মেয়েদের নিয়ে। অথচ ক’জন নারী আছেন যারা পুরুষদের নিয়ে কাব্য বা সাহিত্যচর্চা করেছেন ? হ্যা করেছেন, তবে সেটা পুরুষ প্রজাতি থেকে মুক্তি চেয়ে, স্বাধীনতা চেয়ে।
অথচ তারা একটুও অনুভব করেন না যে, একজন পুরুষের যেমন নারী প্রয়োজন তেমনি নারীর জন্যও পুরুষ প্রয়োজন। একজন পুরুষ ব্যতিত কোন নারী নারীই নয়। পুরুষ আছে বলেই নারীদের এতো মূল্যায়ন। পুরুষ আছে বলেই নারীরা তাকে ভালবাসার লোভ দেখিয়ে ভেড়া বানিয়ে মজা নেওয়ার সুযোগ পায়। যেন কিচ্ছু বোঝে না।
ঘুরে ফিরে সিহাবের ঐ একই আপসোস। মেয়েদের চুল কেন ঘোড়ার লেজের মতো ? কালোর মাঝে খারাবী কোথায় ? এক সময় এই চুলকেই কালো করার জন্যে মেয়েরা সাধনা করতো। চুলের যতেœ বিভোর থাকতো। লম্বা ঘন কালো চুলের জন্য বান্ধবীদের মাঝে প্রতিযোগীতা শুরু হয়ে যেতো। লম্বা চুলো বান্ধবীকে দেখলে অন্য বান্ধবীরা হিংসা করতো।
ঘন কালো কেশের নিমিত্তে প্রচার মাধ্যমগুলোতে বেশী বেশী বিজ্ঞাপন প্রচার হত। বিভিন্ন ধরনের প্রসেস ও তেলের বিজ্ঞাপন দেওয়া হত। সেসব বিজ্ঞাপনে মেয়েদের জন্যে লোভনীয় বিষয় ছিল ‘ঘন কালো কেশ’। সেই কেশ নিয়েই শিল্পীরা গেয়েছেন বিভিন্ন গান- মেঘ কালো আঁধার কালো, আর যে কলঙ্ক কালো------ তার চেয়ে কালো কন্যা তোমার মাথার চুল--- / তোমার কাজল কেশ ছড়ালে বলে এই রাত এতো মধুর --- / কবি লিখেছেন- চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা --- ইত্যাদি। কিন্তু বর্তমানে মেয়েদের মান্কি কালার চুল নিয়ে কী লিখবেন বা কী গাইবেন বিশেষজ্ঞ শিল্পী, কবি, সাহিত্যিকরাই ভাল জানেন।
তবে নুতন করে কালো কেশ নিয়ে যদি কাব্য করা হয় তাহলে বর্তমানের সাথে তার তেমন মিল খুঁজে পাওয়া যাবেনা। ফলে বিষয়টা হাস্যকর হয়ে যাবে। তবে বাঙালী মেয়েরা যতই মডার্ন হতে চাক্ না কেন- তা সবসময়ই বেমানান দেখাবে। কারণ বাঙালী নারীরা চিরকালই বার’হাত কাপড় আর ঘন কালো কেশেই মানানসই।
(২)
অফিস থেকে বেরিয়ে রিক্সার জন্যে দাঁড়িয়ে ছিল সিহাব।
একটি রিক্সাও যেতে রাজী হয়নি। বাবুবাজার থেকে ইসলামপুরের রাস্তাটি পুরোপুরি জ্যাম। ফাঁকফোকড় দিয়ে একটি মানবদেহ এগিয়ে যাবে সেই অবস্থাও নেই। রাস্তার পাশে শ্রমিকেরা কাপড়ের গাইট যত্রতত্রভাবে রেখেছে। রিক্সা-ভ্যান অথবা পিক-আপ ভ্যানে উঠানামা করছে।
মাটির সাথে লাগোয়া ঠেলাগাড়ী তো আছেই। যাও একটু আধটু ফাঁকফোকড় রয়েছে তাতে রিক্সা ডুকিয়ে বানিয়ে রেখেছে ফাকাক্কা বাঁধ। কোন রকমে জ্যাম অতিক্রম করে সিহাব পাটুয়াটুলী হয়ে সদরঘাট মোড়ে গিয়ে দাঁড়াল। সেখানে গিয়েও গন্তব্যে পৌছার মত কোন যানবাহন পায়নি। গাড়ীর আওয়াজ আর রিক্সার টুংটাং শব্দে রীতিমত অতিষ্ট।
ধুলোবালিতো আছেই। সিহাব নাকে রুমাল দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিছুক্ষন পর পর টেম্পো আসলেও জায়গামত পৌঁছার আগেই ফুল হয়ে যায়। হঠাৎ সিহাবের লক্ষ্য স্থির হয়ে গেল। চেনা চেনা মনে হল মহিলাকে।
‘ খালাম্মা স্লামালিকুম, কেমন আছেন ?
‘ ভাল। কিন্তু ----
‘ চিনতে পারেন নি ! আমি সিহাব, গোপীবাগ আপনাদের বাসার কাছে--।
‘ ও হ্যাঁ, চিনতে পেরেছি। কেমন আছ বাবা ?
‘ জ্বি ভাল। এটা কে, স্বর্না নাহ্ ?
‘ হ্যাঁ।
‘ ওয়াও, বড় হয়ে গেছো ! কেমন আছ ?
‘ জ্বি ভাইয়া, ভাল আছি। আপনি কেমন আছেন ?
ওরা খিলগাঁও যাবে। সিহাবের গন্তব্য গোপীবাগ। কিন্তু যাওয়ার মত কোন বাহন ছিলনা। স্বর্নাদের বাসা আগে গোপীবাগেই ছিল।
ঠিক সিহাবদের পাশের ফ্ল্যাটে। প্রয়োজনের তাগিদে তারা বাসা পরিবর্তন করে চলে গেল খিলগাঁও তালতলা। অনেকদিন পর দেখা হল।
এবার সিহাব পড়ল আরেক ঝামেলায়। এতসময় ধরে একটা রিক্সাই পায়নি।
এখন খুঁজছে দুইটা।
‘ খালাম্মা, কোথা থেকে এলেন ?
‘ বুলবুল ললিতকলা একাডেমী থেকে।
‘ ও, স্বর্না এখনো গান শিখছে ? ভাল, খুব ভাল। ধরে রাখতে পারলে একদিন কাজে লাগবে। এতো ধৈর্য্যইবা কয়জনের আছে।
চালিয়ে যাও। ছেড়ো না, একদিন ইন্শাল্লাহ সফল হবে।
‘ তুমি কোন ক্লাসে পড় ?
‘ নাইনে।
‘ ভেরী গুড।
স্বর্না সিহাবের অনেক জুনিয়র।
চোখের সামনেই বড় হয়েছে। কিন্তু বয়ঃসন্ধি ও বয়ঃবৃদ্ধির সাথে সাথে ওর চেহারা, চাহনী, গড়ন সব কিছুর মাঝে একটা পরিবর্তন এসেছে। যা খুবই আকর্ষনীয় এবং নজর কাড়ার মত। কিন্তু সেই একই অবস্থা। চুলগুলো রাঙা।
একদম গোবরে কালার।
হঠাৎ গুলিস্থানের দিক থেকে একটা ট্যাম্পো এলো। একদম খালি। সিহাব বুঝে উঠার আগেই স্বর্না ও তার মা লাফিয়ে উঠে গেল। সিহাবকে একটু যুদ্ধ করেই উঠতে হয়েছে, কারণ ততক্ষনে যাত্রীদের গুতাগুতি শুরু হয়ে গেছে।
ট্যাম্পো প্রায় ঘন্টাখানিক লাগিয়ে গুলিস্থান এসে পৌছাল। তারপর ওরা একটি রিক্সায় করে খিলগাঁও চলে গেল। যাওয়ার সময় সিহাবকে বাসার লোকেশন দিয়ে গেল।
সিহাব নিজেও গান গাইতো। তার টিচার ছিলেন ওস্তাদ আকতার সাদমানী।
কিন্তু সেকথা তাদের বলেনি। সিহাব রিক্সায় চড়ে গোপীবাগের দিকে যেতে লাগল। হঠাৎ স্বর্নার ডাগর ডাগর চোখ এবং গালে টোল পড়া হাসি নজরে ভেসে উঠল। তার মনে পড়ল সেই গানটি যা সে গেয়েছিল তারই বান্ধবী, অর্থাৎ সিহাবের ছোট বোনের জম্মদিনে। তখন সে পড়তো ক্লাস সিক্সে- ‘আমার গানের মালা আমি করবো কারে দান’।
স্বর্না যখন গান গাইছিল তখন সিহাব মাথাটা এগিয়ে দিল। সবাই হেসে উঠল। পরে হাসির জন্যে স্বর্না আর গাইতেই পারেনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।