আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কপি পেস্ট আর টেবিল মেইড সাংবাদিকতার নমুনা...



গেলো দু-দিন যাবত এই ব্লগে তিন চাকা নামের একটি গানের প্রতিযোগিতা নিয়া বেশ লেখালেখি চলছে। খুবই ভালো। এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ তাতে কোন সন্দেহ নাই। আমার মতে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করা ক্লোজ আপমার্কা তারকা বাছাই নিয়ে পুরো দেশ যখন হুমড়ি খেয়ে পড়েছে তখন দেশের সাধারণ শ্রেণীর মানুষদের নিয়ে এই আয়োজনও অবশ্যই ভালো। তাদেরকেই বা বঞ্চিত করা কেন? তাদেরও তো সাধ হয়... এই আয়োজনে অবশ্য আরেকটি ব্যাপার প্রমাণিত হয়, তা হলো বাঙালি বরাবরই হুজুগের জাতি।

এই আয়োজন প্রসঙ্গে স্বভাবতই দেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রোনিক মিডিয়া কিছুটা কাভারেজ দিবে এটাই বাস্তব। সংবাদপত্র, সাংবাদিকতা শব্দগুলোর সাথে যখন থেকে পরিচিতি লাভ করি তখন জানতাম, সাংবাদিকতা হলো অনুসন্ধানী, বিশ্লেষণধর্মী ও নির্ভরযোগ্য তথ্যের উপর দাঁড় করানো একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু অতীব দুঃখের সঙ্গে আজকের পত্রিকাগুলো বা চ্যানেলগুলোর নিউজ ট্রিটমেন্ট দেখলে মাঝে মাঝে লজ্জায় মাথা হেট হয়ে আসে। তথ্য বিভ্রাট বর্তমানে আমাদের সাংবাদিকতায় অহরহ একটি ব্যাপার। তাই সংখ্যাতাত্ত্বিক বিভ্রান্তি পত্রিকা বা চ্যানেলের নিউজে কোন ব্যাপারই না।

সেটা হোক কোথাও কোন আহত-নিহতের সংখ্যা, খেলার স্কোরসহ বিচিত্র বিষয়। *ফিরে আসি তিন চাকা প্রসঙ্গে। প্রথম আলোয় নিউজ ছাপা হলো এই তিন চাকার আয়োজনটি করেছে, আয়োজন শিশিরবিন্দু নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এই ভুল নিয়ে কোন মাথাব্যাথা নেই দেশের প্রধান দৈনিক নামধারী প্রথম আলোর। ভাবখানা এমন একবার নিউজ ছাপছি তাতেই তারা ধন্য... আবার সংশোধনী ক্যান।

কয়েকদিন আগে এই পত্রিকার একটি রিপোর্ট দেইখ্যা মনে হইছিলো রিপোর্টারকে ডাইক্যা আইন্যা তার দুই গালে দুইটা চড় বসাইয়া দেই। সম্প্রতি সেলিম আলদীন পাঠশালা নামের একটি পাঠচক্র গঠিত হয়। এই পাঠচক্রের উদ্দেশ্য সেলিম আল দীন চর্চাসহ বিশ্ব সাহিত্যের নানান বিষয় নিয়ে পঠন-পাঠন ও চর্চা। তো, প্রথম আলোচনা সভার নিউজটি প্রথম আলো ছাপল ঠিকই। সেলিম আল দীন বলে কথা...প্রথম সভাটি হয় আজিজ মার্কেটের বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্টার মিলনায়তনে।

পরের দিন নিউজ ছাপা হলো ঐ ফিল্ম সেন্টারের আয়োজনে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার মানে রিপোর্টার অফিসে বইস্যা নিশ্চয়ই ফোনে ফোনে তার কর্মটি সম্পাদন করিয়াছেন। যাই হোক আসি তিন চাকা প্রসঙ্গে। *দৈনিক যুগান্তর একটি সম্পাদকীয় স্টাইলে রিপোর্ট করলো প্রশংসাসূচক। রিপোর্ট দেখলে যে কেই বুঝবেন একটি টেবিলমেইড লেখা।

কারণ প্রথম আলোতে ভুল হওয়া সেই একই আয়োজকদের নাম। অর্থাৎ, আয়োজন শিশিরবিন্দু। নির্লজ্জ একটি কাজ। মানে প্রথম আলো থেকে কপি পেস্ট। ভাবটা এমন লেখকদের এতো সময় কই যে তারা আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলবেন? দুই কলাম লিখলাম এতেই তো আয়োজকরা ধন্য... আমাদের সময়ও একটি রিপোর্ট লিখল।

তবে, ভাগ্য ভালো তারা আয়োজকের নাম লিখল ঠিকই। কিন্তু তারা একটি ছবি ছাপলো যা প্রথম আলোর সৌজন্যে। অর্থাৎ প্রথম আলোর কপি পেস্ট... বুঝতে আর বাকী থাকে না, কী কারণে প্রথম আলো এই দেশের সেরা দৈনিক বলে নিজেদের এতো ঢোল পিটায়... যেই বনে বাঘ নেই সেই বনের বানরও নাকি বাঘের মতো দাবড়াইয়া বেড়ায়...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।