যা বিশ্বাস করি না, তা লিখতে-বলতে চাই না, পারবোও না। কিন্তু যা বিশ্বাস করি, তা মুখ চেপে ধরলেও বলবো, কলম কেড়ে নিলেও লিখবো, মারলেও বলবো, কাটলেও বলবো, রক্তাক্ত করলেও বলবো। আমার রক্ত বরং ঝরিয়েই দাও, ওদের প্রতিটি বিন্দুর চিৎকার আরও প্রবল শূনতে পাবে।
এই হল খালেদা জিয়ার কান্নাকাটি, দেশটাকে ধ্বংস করে দিতে উনার কোনরুপ দ্বিধা নাই, কিন্তু উনার ক্ষমতায় যাওয়া চাইই চাই।
ক্ষমতায় যাবার প্ল্যানে পুরা কান্নাকাটিটা দেখতে এই লিঙ্কটায় ক্লিক করেন।
অমি রহমান পিয়ালের ব্লগ থেকেই নেয়া, আপনাদের সাথে শেয়ার করলামঃ
ধারনা করি বেগম খালেদা জিয়া ব্যাপক অস্থিরতায় ভুগছেন। ক্ষমতায় যাবার অস্থিরতা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রথম কিস্তির রায় সমাসন্ন। যুদ্ধাপরাধের দায়ে তার ক্ষমতাধর মিত্র জামায়াতে ইসলামীর নেতাদেরই শুধু নয়, গোটা দলটির রাজনৈতিক মৃত্যুও মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে। আইনগতভাবে যখন কোনো দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যুদ্ধাপরাধী বলে অভিযুক্ত হয় তখন তাদের জনসমর্থনে ভাটা পড়তে বাধ্য।
তার প্রভাব ভোটেও পড়বে। এটা বুঝেই বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই তাদের উৎখাতের জন্য একের পর এক ষড়যন্ত্র করে গেছে জামায়াত। বিডিআর থেকে সেনাবাহিনী কিছুই বাদ যায়নি, ছাত্রলীগের গুপ্তচর ঢুকিয়ে গোটা দেশে অরাজকতার নীলনক্সাটাও মাঠে মারা গেছে। এবং পুলিশের উপর ধারাবাহিক হামলাসহ বর্তমান সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রেক্ষাপটে তাদের প্রতি জনসমর্থন শূন্যেরও নীচে।
জামায়াত যদি সফল হতো তাহলে মসনদে তিনিই বসতেন।
হ্যা, এই ষড়যন্ত্রে জামায়াত একা ছিলো না। নেপথ্যে থেকে তাদের পুরো শক্তিতেই সমর্থন দিয়ে গেছে বিএনপি। এবং খালেদা জিয়া কোনো লুকোছাপায় জাননি , নাচতে নেমে ঘোমটা দেননি। ‘নিজামী-মুজাহিদরা যুদ্ধাপরাধী নয়’ এই ঘোষণা দিয়ে দেশব্যাপী রোডমার্চ শুরু করেছিলেন। জামায়াত নেতারাও প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে তাকে তাদের নেত্রী বলে বিবৃতি দিয়েছে (সাংসদ হামিদুর রহমান, সিলেটে, নভেম্বর ২০১১), কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি।
ভবি ভোলেনি।
এবার নিজেই মাঠে নেমেছেন খালেদা জিয়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন টাইমস পত্রিকায় ওপিনিয়ন সেকশানে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন তিনি। মানে বরাবর যা হয় আর কি, তার চিঠিটা লিখে দেওয়া হয়েছে চোস্ত ইংরেজিতে। আর সেটা পড়লেই প্রথমেই যে নামটি মাথায় আসে, তা হলো ঘষেটি বেগম।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার এই খালা তার ছেলেকে নবাবী মসনদে বসাতে হেন ষড়যন্ত্র বাদ দেননি। মীর জাফরের আগে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতার প্রয়াসটা এসেছিলো তার তরফেই। দেশ বিক্রি হয়ে যাক, গোলাম হয়ে যাক দেশবাসী, তাও ছেলেকে নবাব বানাবেনই ঘষেটি বেগম। না, তিনি সফল হননি।
দেখা যাক বেগম জিয়া ‘ZIA: The thankless role in saving democracy in Bangladesh’ শিরোনামে লেখা চিঠিতে কি লিখেছেন নামে কি লেখা হয়েছে হুবহু অনুবাদের মতো সময় নষ্ট করার চেয়ে বরং সারমর্ম দেওয়া যাক।
২০১৩ সাল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কটা টানাপোড়েনের হতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা জানিয়ে শুরু প্রথম অনুচ্ছেদ। সূচনাতেই হাস্যকরভাবে তিনি বাংলাদেশের পরিচয় দিয়েছেন (ভৌগলিক অবস্থান, কবে স্বাধীন হলো)এবং জানাচ্ছেন স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার কাতারে প্রথম দিকে ছিলো যুক্তরাষ্ট্র (২৪ মার্চ, ১৯৭২ সালে ৫৯তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিলো তারা)। বেগম জিয়ার ইঙ্গিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই সরকারের সম্পর্ক খারাপের দিকে মোড় নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপারটা চুপচাপ সহ্য করছে বলে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের দফারফা হয়ে গেছে এবং উঠতি পরাশক্তিগুলোর সঙ্গে বর্তমান সরকারের দহরম-মহরম। বড় বড় অর্থনৈতিক চুক্তি সারা হয়েছে।
মানে সেই একাত্তরের মতো আবার রুশ-ভারতের দালাল হয়ে গেছে বাংলাদেশ।
আমরা আসলেই অবাক হতে ভুলে গেছি। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর এই দেশটাকে লুটেপুটে খেয়েছেন তার স্বামী যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে নিয়ে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে যখন এই সরকার নিশ্চিত করছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি অঙ্গীকার,দায়বদ্ধতা তখন খালেদা জিয়া ওই ষড়যন্ত্রের পথই ধরেছেন। কারণ প্রকাশ্যে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী হতে হলে কিংবা ছেলেকে সে পদ দিতে হলে নির্বাচনে জিতে আসাটা একটু কঠিনই হয়ে গেছে তার জন্য।
অতএব ষড়যন্ত্র ভরসা। এবং এই ষড়যন্ত্রের নাটকে তার পছন্দ হয়েছে ঘষেটি বেগমকে। তার ভূমিকাতেই রূপ দিচ্ছেন তিনি। তবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ঘষেটির চিঠিটা পাওয়া গেলে হয়তো বোঝা যেতো দুজনের মনোভাব কতখানি সমিল।
বেগম জিয়া।
ইতিহাসের চাকা ঘুরে। ভুলের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে নয়, ভুল শোধরাতে। এই দেশ যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্বাধীন হয়েছিলো, সেই চেতনার আলোকেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের মতো এইবারও তার রাজনৈতিক নেতৃত্বে আছে আওয়ামী লীগ। আরেকটা ‘৭৫এর স্বপ্ন দেখা ভুলে যান।
দেশের জনগন আপনার সঙ্গীসাথীদের মতো ঘাস খায় না। বরং ভবিষ্যতে (নির্বাচনতো সামনেই) জনগনকে কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ‘দেশ বিক্রি করে দেবে’ জুজু দেখাবেন না। দালাল বলে গালী দেবেন না। আপনার চিঠির লাইনে লাইনে যে পা চাটা মানসিকতা, যে গোলামীর অভিপ্রায়, যে লোভ ও লিপ্সা, তাতে তীব্র ঘৃণা ছাড়া আর কিছুই পাওনা নেই আপনার। ইতিহাসে আপনার জায়গা নির্ধারিত হয়ে গেছে, আর তাতে নিজেই সই করেছেন আপনি।
স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে দেশশাসনের স্বপ্নটা আপনার দুঃস্বপ্নই রয়ে যাবে।
__________________________________________________
আমার কথাঃ
এদের ডেসপারেশনটা অবাক করার মত। খালেদা জিয়ার কাছে এই দেশ, দেশের উন্নয়নের ফুটো পয়সা মুল্য ও নেই, টার চাই ক্ষমতা, তার দুর্নীতিবাজ পুত্রদের অবাধ দুর্নীতি করার সুযোগ সুবিধা আর চাই এই দেশের সবথেকে ঘৃণ্য মানুষ, দেশ শত্রু যুদ্ধপরাধীদের মুক্তি!
দেশ রশাতলে গেলেও কিচ্ছু আসে যায়না এদের, একবারও তার এই চিন্তাটি হলনা, নিজেদের রাজনীতি ক্ষমতাশীল রাষ্ট্রের কাছে বেঁচে দেওয়া হল এতে। একবারও ভাবলনা দেশের ভাবমূর্তি ও তার নিজের ভাবমূর্তি কে কোথায় নিয়ে নামাল এই চিঠি বা আবেদন বা ভিক্ষা চাওয়া। আচরণ গুলো দেখে শুধু এক ধরনের পেশাজীবীর কথাই আমার মনে আসছে।
যারা নিজের সর্বস্ব দিতে পারে ব্যাবসার জন্যে! আমি শব্দটিকে গালি হিসেবে ব্যাবহার করিনা, তাই বললাম না আচরণেই আপনাদের বুঝে যাবার কথা।
দেশের বুকে এক কালসাপ এর নাম খালেদা জিয়া। যে কিনা রাজনীতি না পারলেও "ম্যানেজের" উপায় ভাল জানেন। আর কিছু বলার নেই। শুধু এক বুক ঘৃণা থাকল এমন মানসিকতার প্রতি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।