জন্মোপার থেকে পৃথিবী হয়ে অনন্তে >>> ©www.fazleelahi.com
পূর্বে: @ সীরাতুন্নবী: আরব জাতিসমূহ (১) লিংক: Click This Link
৩) আরবে মোস্তারেবা:
পূর্বপুরুষ: সাইয়্যেদেনা ইবরাহীম 'আলাইহিস্ সালাম। তিনি ইরাকের বিলুপ্ত হওয়া উয শহরের অধিবাসী ছিলেন। দ্বীন প্রচারের জন্য তিনি দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করেন, মিসর সফরকালে ফির'আওন তাঁর স্ত্রী সারা'র প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তাকে দরবারে ডাকে। পরে সারা'র দো'আর প্রেক্ষিতে আল্লাহ্ ফির'আওনকে পরাস্থ করেন ও সারা'কে হেফাযত করেন। ফির'আওন এ পূণ্যশীলা রমনীকে চিনতে পেরে নিজ কন্যা হাজেরাকে সারা'র হাতে তুলে দেন এবং সারা তাকে ইবরাহীম 'আলাইহিস্ সালামের সাথে বিয়ে দেন।
ফিলিস্তীন সফরকালে হাজেরার গর্ভ হতে ইসমাঈল 'আলাইহিস সালামের জন্ম হয়। সারা নিঃসন্তান ছিলেন বলে হাজেরাকে নির্বাসনে পাঠাতে বাধ্য করেন, অবশেষে ইবরাহীম (আঃ) স্ত্রী-সন্তানকে মক্কায় রেখে আসেন। সেখানে কোন বসতি ছিল না, একটা টিলার মত উঁচু হয়ে কা'বার নিশানা ছিল শুধু। যমযমের কাছাকাছি এক বৃক্ষের নিচে তাদের রেখে আসেন। তারপর তাদের পানীয় পুরিয়ে যাওয়ায় আল্লাহর রহমত হিসেবে যমমের সূচনা হয়।
ইয়েমেন থেকে জুরহুমে সানি বা দ্বিতীয় জুরহুম এসে হাজেরার অনুমতিক্রমে মক্কায় বসতি স্থাপন করে।
ইবরাহীম (আঃ) স্ত্রী-পুত্রকে দেখাশোনার জন্য অন্তত চার বার মক্কা সফর করেন-
প্রথম সফর: ইবরাহীম (আঃ)কে আল্লাহ্ স্বপ্নে দেখান যে, তিনি পুত্র ইসমাঈলকে যবেহ করছেন, এটি ছিল একটি নির্দেশ। এতে পিতা-পুত্র উভয়েই রাযী হলেন, প্রস্তুতি নিলেন এবং পিতা পুত্রকে মাটিতে শুইয়ে দিয়ে যবাই করতে উদ্যত হলেন। আল্লাহ্ এ কঠিন পরীক্ষায় ইবরাহীম (আঃ)কে পুরোপুরি উত্তীর্ণ পেলেন এবং তাঁকে দান করলেন কুরবানীর গৌরব।
বাইবেল বলে ইসমাঈল ইসহাকের চেয়ে তের বছরের বড় ছিলেন আর কুরআন কুরবানীর ঘটনা বর্ণনার পর ইসহাকের জন্মের সুসংবাদ দেয়।
তাই ইসমাঈলের যুবক হওয়া পর্যন্ত ইবরাহীম (আঃ) মাত্র একবার মক্কা সফর করেন বলে প্রমাণিত হয়।
দ্বিতীয় সফর: ইসমাঈল যুবক হলেন, জুরহাম গোত্র থেকে আবরী ভাষা শিখলেন, তাদের এক কন্যার সাথে বিবাহে আবদ্ধ হন, এরপর হাজেরার ইন্তেকাল ঘটে। এবারের সফরে ইবরাহীম (আঃ)-এর সাথে পুত্রের সাক্ষাত হয়নি, পুত্রবধু অভাবের কথা জানালে পিতা পুত্রের জন্য বার্তা রেখে গেলেন যে, 'সে যেন ঘরের চৌকাঠ পাল্টে ফেলে'। পিতার বার্তা বুঝতে পেরে ইসমাঈল স্ত্রীকে তালাক দেন এবং পরে জুরহাম গোত্রের সর্দার মাজায ইবনে আমরের কন্যাকে বিয়ে করেন।
তৃতীয় সফর: এবারেও পুত্রের সাথে দেখা হয়নি, পুত্রবধুকে সাংসারিক অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি আল্লাহর প্রশংসা করেন।
পুত্রবধুর মুখে সংকটেও আল্লাহর প্রশংসা শুনে সন্তানের জন্য বার্তা রাখেন যে, 'সে যেন তার ঘরের চৌকাঠ ঠিক রাখে'। এরপর তিনি ফিলিস্তীন ফিরে যান।
চতুর্থ সফর: এবারে এসে দেখেন পুত্র যমযমের কাছে বসে তীর তৈরী করছে, দীর্ঘকাল পর সাক্ষাতে পিতা-পুত্র ভাবাবেগের বিনিময় করলেন। এবারে আল্লাহর নির্দেশে পিতা-পুত্র মিলে মাটি খুঁড়ে দেয়াল তুলে কা'বা ঘর নির্মাণ করেন এবং ইবরাহীম (আঃ) সমগ্র বিশ্বের মানুষকে হজ্জ পালনের আহ্বান জানান।
................................
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।