আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইচ্ছা-অনিচ্ছার, বহুবেদনার রাজসাক্ষী

mahmud_shawonbg@yahoo.com

পৃথিবীতে এই একটি শব্দ, বৃষ্টি, সশব্দে হেসে ওঠা গান। বৃষ্টি শব্দটার সঙ্গে কারো অভিমান হাত ধরাধরি করে জড়িয়ে আছে আমার অভ্যন্তরে। যদিও বহুবার ভোরে, অভ্যন্তরে, বজ্রাঘাতে চূর্ণ হয়েছে তারা। আবার জেগেছে। যখনই সুযোগ পেয়েছে জেগে ওঠার, জেগেছে স্বমহিমায়।

আসলে বৃষ্টি আমার ইচ্ছা-অনিচ্ছার, বহুবেদনার রাজসাক্ষী। শহরের বৃষ্টি এক রকম আর গ্রামের বৃষ্টি আর এক রকম। গ্রামে আমার কৈশোরের অনেকগুলো দিন কেটেছে। সেই দিনগুলোতে, বৃষ্টি আর বর্ষার স্বার্থপরতায়, চক্রান্তে, বেদনাবহ দিন কেটেছে অনেক। বৃষ্টির দিনে আমাদের গ্রামের লালমাটির পথ হয়ে ওঠে ভীষণ কর্দমাক্ত।

পিচ্ছিল। সেই পথ পেরিয়ে স্কুল-কলেজ জীবন পার করেছি। কিন্তু পথটা আজও সেই পথেই আছে। এখনও বৃষ্টি এলে আগের মতোই আচরণ করে সে। বাবা শহরে ছোট-খাট ব্যবসা করেন।

প্রতিদিন রাত করে বাড়ি ফেরেন বাবা। মনে পড়ে, বৃষ্টির দিনে গ্রামের সেই ছোট্ট পথটা বাবার ফেরার পথকে কত দীর্ঘ করে তুলতো। দীর্ঘ করে তুলতো বাবার জন্য আমাদের তিন ভাই-বোনের অপেক্ষাকেও। মা আমার আলো হাতে কিছুক্ষণ পর পর দরজার দিকে এগিয়ে যেতেন। বুঝতে পারতাম, মা আমাদের মতো বাবার অপেক্ষায় অস্থির সময় পার করছেন।

সারাদিনের ক্লান্তি শেষে, তারচে'ও ক্লান্তিকর পথ পেরিয়ে বাজারের ব্যাগ হাতে বাবা ফিরতেন মলিন মুখে। বাবার করুণ, মলিন মুখ দেখলে নিজেকে পৃথিবীর সব থেকে দুখী মনে হতো। আজও বৃষ্টি নামে আমাদের গ্রামে। গ্রামের সেই পথ অবিকল আগের আচরণ নিয়ে মেতে আছে। বাজারের ব্যাগ হাতে আজও বাবা রাত করে বাড়ি ফেরেন।

কিন্তু বর্তমানে দূরে থাকার কারণে বাবার মলিন মুখ দেখি না। অনুভব করি। তাই পৃথিবীর কোথাও বৃষ্টি নামলে আমার মন খারাপ হয়ে যায়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।