বিকল্প অমৃতের খোঁজে চারপেয়ে জিরাফের মতো গ্রীবা নাচিয়ে
প্রিয়তমা চৌহদ্দি আমার, তোমার আগেই দেখো পৌঁছে গেছি কাঙ্ক্ষিত আনাজের কাছে। দাঁতে চেপে ধরি শস্যের শ্যামল ভগবান বুদ্ধের মতো বিষ্ময়হীন আনন্দজ্ঞানে।
তারপর যখন একটা বিরাট হাতি, তার স্মৃতির ভল্ট থেকে চুরি গেলে দামী অতীত দুঃখ পায়; আমি তাকে আশ্বস্ত করি তবু একদিন শুনি সে
সারারাত কেঁদেছিলো মানুষের মতো, আমাকে সেই কথা বলেছিলো ভরত পাখি, তার ঠোঁটে করে নিয়ে এসেছিলো একটা নীল প্রজাপতি যে কী না মৃত আর সারারাত বসেছিলো বিরাট হাতিটার চোখে আর বলেছিলো ভোরবেলা ছদ্মঊষার মুহূর্তে মারা গিয়েছিলো সে এবং আরো বলেছিলো একটা কালো ময়ূর যে ভালোবাসতো তার ঘোরের নৃত্য আর সে নৃত্যে বৃষ্টি ঝরাতো বিরাট হাতির শুঁড়।
সে বলেছিলো হাতিটা ছিলো জ্ঞানী, তার কাছে দূরদূরান্তের কত জঙ্গলদেশের পশু আর পাখি ছুটে আসতো তাদের সঞ্চিত জীবনের নানান অভিজ্ঞতার কথা, হৃদয়ের আশ্চর্য আবেগের কথা ভল্টে জমা রাখতে। এর বদলে বিরাট হাতি তাদের কাছ থেকে নিতো শুধু এক বছরের আয়ু।
তারা জেনেছিলো বিরাট হাতির আছে স্মৃতিময়তার অদ্ভুত অলৌকিক গুণ। তারা আরো জেনেছিলো বিরাট হাতি কাউকেই এসব কথা বলে না শুধু যখন বছরে একবার ঘনজঙ্গলে কালো ময়ূর নাচ দেখাবে, সেদিন থাকবে পূণিমার চাঁদ আকাশের বাঁ পাশে আর বিরাট হাতি বৃষ্টির মতো ছিটাবে জল অনবরত সূর্য না ওঠা পর্যন্ত।
এই বলে ভরত পাখিটা যাকে আমি কোনদিনও চোখে দেখিনি একটা পাখা ঝাপট দিয়ে উড়ে গেলো, আমি দেখলাম সে উড়ে গেলো অনন্তের দিকে আর একটি একটি করে তার দেহ হতে খসে পড়লো পালক যা বাতাসে উড়ে যেতে যেতে একেকটি ভরত পাখিতে পরিণত হলো। আমি দেখলাম।
এভাবে একসময় অনন্তে বিলীন হয়ে যাওয়া ভরত পাখিটার পালক থেকে জন্মে ওঠা সাত হাজার অবিকল পাখি আমাকে ঘিরে উড়তে লাগলো।
এই সাত হাজার ভরত পাখি আমাকে সাত হাজার গল্পের কথা বলেছিলো। এবং বলেছিলো যে অনন্তে বিলীন হয়ে যাওয়া ভরত পাখিটির এই গল্পগুলি ছিলো বিরাট হাতির ভুলে যাওয়া অতীতের কথা । সম্পূর্ণ স্মৃতিহীনতার আগে, সম্পূর্ণ নিবে যাওয়ার আগে যে রকম জ্বলে ওঠে শিখা তেমনি মনে পড়েছিলো তার স্মৃতিহীন সাত হাজার গল্পের কিছু কিছু যা মৃত প্রজাপতি সম্পূর্ণ নিস্তেজ হবার আগে বলেছিলো ভরত পাখির কানে।
এই বলে সাত হাজার অবিকল ভরত পাখি উড়ে চলে গেলো আমার কাছ থেকে আমাকে গল্পগুলি না শুনিয়েই। শুধু ওরা বলেছিলো বিরাট হাতির ওই গল্পগুলি দূরদূরান্তের পশুপাখির ভল্টে রাখা একান্ত দুঃখের কথা ছিলো, বিয়োগান্ত অতীতের কথা ছিলো।
আমি তখন দাঁতে চেপে ধরি শস্যের শ্যামল। ভগবান বুদ্ধের মতো বিষ্ময়হীন আনন্দজ্ঞানে হাত বাড়াই আরেকটি গল্পের দিকে। ভাবছি এবারের গল্প বিষাদের না হর্ষের,
এই অর্ধমনষ্ক, অপূর্ণাঙ্গ, অদ্ভুত কবিতাটির কিংবা গল্পটির কিংবা টানাগদ্যটির কিংবা অপরিণত রচনাটির সাথে ইলাস্ট্রেশন হিসেবে দেয়া স্কেচটি আমার নিজের আঁকা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।