আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কি তামশা!! সব জামাতিদের কথা বলা আর লেখার ফরম্যাট একই !

নিজেরে হারায়ে খুজি..... bohurupi.mohajon@gmail.com

আমি কয়েকদিন আগে অবাক হয়ে একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলাম যে জামাতিদের কথা বলা, লেখা ইত্যাদির ফরম্যাট প্রায় এক! এর মানে হচ্ছে একজন জামাতির কথা বলা বা লেখার ফরম্যাট এর সাথে আর এক জামাতির কথা বলা বা লেখার ফরম্যাটের অদ্ভুত মিল এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রায় এক । আমি এখানে একজন জামাত নেতার ওয়াজ ও একজন জামাত সমর্থকের লেখা তুলে দিচ্ছি (কৃতজ্ঞতা: নরাধম ও ধানসিঁড়ি)। সাথে তার কিছু বিশ্লেষণ আছে। দেখুন কি অদ্ভুত মিল!! প্রথমেই আমি তাদের কথা বা লেখার একটি বিশেষ ফরম্যাট সম্পর্কে আলোচনা করছি, তাহলে বুঝতে সুবিধা হবে। তারপর আপনারা নিচের লেখা দুটি পড়ে মিল গুলো বের করার চেষ্টা করুন।

জামাতিদের কথা ও লেখার একটি ফরম্যাট: এটা জামাতিদের অনেকগুলোর মধ্যে একটা প্রিয় ফরম্যাট। সম্ভবত ওয়াজ মহফিলে এ ফরম্যাট বেশি ব্যবহৃত হয়, সম্ভবত বলছি কেননা সেসব শোনার দুর্ভাগ্য বা রুচি কখনো আমার হয় নি। এই ফরম্যাটটিতে কোন স্বপ্ন জড়িত থাকে। আমি পয়েন্ট দিয়ে আলোচনা করছি। ১. প্রথমেই স্বপ্নের বর্ণনা শুরু হবে।

কিন্তু প্রথমেই বলা হবে না যে এটা একটা স্বপ্ন। এটি গল্পের মাঝামাঝি এসে বলা হবে। স্বপ্নটি একটি নিদিষ্ট গতিতে-ছন্দে একটি নির্দিষ্ট সময় পযর্ন্ত চলবে। যদি স্বপ্নের শুরুতেই কোন উত্তেজনার পরিস্থিতি থাকে তবে তা বজায় থাকবে, অথবা যদি কোন উত্তেজনা দিয়ে স্বপ্ন না শুরু হয় তবে সে স্বাভাবিক অবস্থাও বজায় থাকবে। ২. বর্ণনা স্বাভাবিক গতিতে চলতে চলতে হঠাৎ একটি পরিবর্তণ ঘটবে, যেটা হবে অপ্রত্যাশিত এবং আকস্মিক।

এখানে শ্রোতা বা পাঠককে চমকে দেবার একটা চেষ্টা করা হয়। ৩. বর্ণনার তৃতীয় পর্যায়ে এসে গল্পের মূল চরিত্রর ঘুম ভেঙে যাবে এবং শ্রোত বা পাঠক বুঝতে পারবে যে আসলে আগের ঘটনা গুলো একটা স্বপ্ন ছিল। এখানে গল্পের মূল চরিত্র স্বপ্নটা নিয়ে বিভ্রান্তির মধ্যে থাকবে এবং এ নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকবে। ৪. এ পর্যায়ে এসে মূল চরিত্র কোন একজন আলেমের কাছে নিজে বা অন্যের মাধ্যমে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানতে চাইবে। ৫. সবশেষে আলেম স্বপ্নের বিষয়বস্তু শুনে তার একটা ব্যাখ্যা দিবেন।

আমার বিশ্লেষণ তো হল! এবার আপনারা নিচের লেখাগুলোর সাথে নিজেরাই মিলিয়ে দেখুন। সাইদির ওয়াজ (কৃতজ্ঞতা: নরাধম): ১. লোকটা দৌড়াচ্ছে। পিছনে এক বাঘ তাড়া করতেছে। লোকটা জীবন হাতে নিয়ে দৌড়াচ্ছে। প্রচন্ড বেগে দৌড়াতে হচ্ছে আর কিছুক্ষণ পরপর পিছনে ফিরে থাকাতে হচ্ছে কখন বাঘটা কাছে চলে আসে আবার।

দৌড়াতে দৌড়াতে একটু দূরে একটা গাছ দেখা গেল। গাছের কাছে আসল। তাড়াতাড়ি গাছে বেয়ে উঠল। উঠে একটা ডালে উঠে বসল। নিচে বাঘটা এসে গাছের নিচে দাড়ি্য়ে আছে।

যে পাশে বাঘ দাড়িয়ে আছে সেপাশ ছাড়া অন্য সবপাশে বিশাল গর্ত। গর্তের মধ্যে বিরাট বিরাট সাপ, বিচ্ছু অন্য ভয়ংকর পোকামকড়। নিচে নামলেই বাঘে ধরবে। গাছ থেকে পড়ে গেলেই সাপে খাবে। এমন সময়ে দেখা গেল একটা সাদা পাখি আরেকটা কাল পাখি যে ঢালে সে বসে আছে সে ঢালে ঠোঁট দিয়ে আঘাত করতেছে আর ঢালটা আস্তে আস্তে কেটে যাচ্ছে।

ঢাল কেটে গেলেই সে গর্তে পড়ে যাবে। মহাভয়ংকর অবস্থা। সে চিন্তা করে কাঁপতেছে প্রচন্ডভাবে। ২. হঠাৎ তার মাথায় একটা কি যেন পড়ল। উপরের দিকে থাকিয়ে দেখে একটা মধুর চাক।

সেখান থেকে ফোঁটা ফোঁটা মধু পড়তেছে। একটু চেখে দেখল সে জিবে নিয়ে। খুব মিষ্টি। সে গাল হা করে মধু খেতে আরম্ভ করল। মধুর চাকের দিকে হা করে মধু খেতে খেতে সে বাঘের কথা, গর্তের কথা, সাপের কথা, পাখির কথা ভুলে গেল।

সে সুমিষ্ট মধুর জগতে হারিয়ে গেল। " ৩. হঠাৎ লোকটার স্বপ্ন ভেংগে গেল। বুঝল এতক্ষণ সব স্বপ্ন ছিল। এরকম অদ্ভুত স্বপ্ন দেখার কারন কি সে বুঝতে চেষ্টা করল। ৪. এক বুজুর্গ লোক ছিলেন এলাকায় যিনি স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতেন।

সকাল উঠেই তার কাছে গেল। ৫. তিনি সব শুনে বললেন "আসলে এটা সব মানুষের জন্যই বাস্তবতা, স্বপ্ন নয়। যে বাঘটাকে দেখলেন সেটা আজরাইলের প্রতিমূর্তী। মৃত্যু যে আমাদের প্রতিমুহুর্ত্যে তাড়া করতেছে সেটাই এটা বুঝাচ্ছে। গর্তটা হল কবর।

কবরের আযাব বুঝাচ্ছে গর্তের মধ্যে সাপ, বিচ্ছু দিয়ে। পাখি দুটা দিন আর রাতকে বুঝাচ্ছে। গাছের ঢালটা হল আমাদের হায়াত। রাতদিন কাটতে কাটতে আমাদের হায়াত ফুরিয়ে যাচ্ছে। যেকোন সময় মৃত্যু হবে আর কবরে যেতে হবে।

মধুটা হচ্ছে দুনিয়ার লোভ, সম্পত্তি, টাকা পয়সা। আর দুনিয়ার লোভে পড়ে আমরা মৃত্যুর কথা, কবরের কথা, হায়াতের কথা সব ভুলে বসে আছি, আছি দুনিয়ের সুখ নেওয়ার তালে। (সূত্র: সাইদী : নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে: নরাধম: ১৫ ই ফেব্রুয়ারি) জামাত সমর্থকের লেখা (কৃতজ্ঞতা: ধানসিঁড়ি): ১. বারো বছরের কিশোরী মাহমুদা বেগম এক্কা দোক্কা খেলার ছলে পা দিয়ে খুঁড়ে খুঁড়ে ছোট্ট একটা গর্ত তৈরী করেন। গর্তটা থেকে পা উঠিয়ে এবার হাতটি রাখলেন। ২. নরম কাদামাটির গর্তে হাতটি ঢুকাতেই শক্ত পাথরের মতো একটা টুকরোর সাথে হাতে ঠোক্কর লাগে।

গর্ত থেকে হাতটি তুলতেই তার চোখ চানাবড়া হয়ে যায়। হাতের তালুতে উঠে আসে জ্বলজ্বলে উজ্জল এক হিরের টুকরো। কিছুতেই দৃষ্টি ফেরানো যায় না অমন হিরে থেকে। মুহূর্তেই চারপাশে লোক জড়ো হয়ে যায়। সবাই অবাক, এতো সুন্দর হিরে পেল কোথায় মেয়েটা।

মুরুব্বীরা সাবধান করে বললো, খুব সাবধানে রাখো হিরেটি বেটি, যত্ন করে রেখো, পাছে আবার কেউ ছিনিয়ে না নেয়। ৩. ভোর রাতে অদ্ভুত সুন্দর এ স্বপ্নে ঘুম টুটে যায় মাহমুদা বেগমের। ঘুম থেকে উঠে বিছানায় বসলেন তিনি। বারবার তাকাচ্ছেন হাতের মুঠির দিকে। একটু আগের স্বপ্নটা তাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে।

এখনো যেন হাতের মুঠোয় রয়েছে হীরের টুকরোটি, হাত খুললেই যেন অদৃশ্য হয়ে যাবে। নামাজের জন্য মা ডাকার আগ পর্যন্ত বিছানায় ঠায় বসে রইলেন হাত মুষ্ঠিবদ্ধ করে। এক অব্যক্ত ভালোলাগা নিয়ে চোখে মুখে স্বপ্নের আবীর মেখে বার বছরের কিশোরী মাহমুদা ছুটে যান বাবা সাইয়্যেদ নাসির উদ্দিন শামসীর কাছে। খুলে বলেন তাকে স্বপ্নের কথা। বাবাও অবাক, মেয়ের অমন স্বপ্নের কথা শুনে।

৪. তিনি কাউকে স্বপ্নের কথা বলতে বারন করে দিলি্ল্লর একজন বড় আলেমের কাছে ছুটে যান। খুলে বলেন মেয়ের স্বপ্নের সবকিছু। ৫. আলেম হেসে বলেন, আপনার মেয়ের এমন এক আলেমে দ্বীনের সাথে নিকাহ হবে যার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়বে সারা বিশ্বময়। (সূত্র: আলোকিত নেতা মওদূদী (রহ : শুভ পরিণয়: ধানসিঁড়ি: ২৩ শে জুলাই, ২০০৬)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।