অতীত খুড়ি, খুঁজে ফিরি স্বজাতির গুলিবিদ্ধ করোটি
গণহারে পাঠানোর পর আমার ইনবক্স জাম ফিরতি এসএমএস-এ। সবচেয়ে জটিল প্রতিক্রিয়া জানাইছেন হাসান বিপুল। কক্সবাজার থাইকা লিখ্যা পাঠাইছেন রাজা সুখে আছেন বোঝা যায়, কিন্তু রাণীর খবর কি? সকালে রক্ত নিয়া এক ভেজাল। ও পজিটিভ আমি নিজেও, কিন্তু স্বামীর রক্ত স্ত্রীর জন্য হারাম- এইটা মেডিকেলের কোন কিতাবে লেখা মনে পড়তেছিলো না। কৌশিক পটুয়াখালী, ডট রাসেল স্কুলে, শরৎও ব্লাড দিয়া ফেলছে।
এদিকে ডোনার ছাড়া ওটিতে ঢুকানো হবে না এই ফাপড়। উদ্ধার করলেন ব্লগার এখনও গল্প লিখি এবং টঙ্কেশ্বরী। অনেকবার উত্যক্ত করার পরও শেষ পর্যন্ত তাদের সাহায্য লাগেনি। এর আগে কৌশিকের অনুরোধে শরীফ উত্তরা থেকে প্রায় রওয়ানা দিয়ে ফেলেছেন। থামিয়েছি তাকে।
তারপরও তিনজনের সহমর্মিতা আমাকে ছুয়ে গেছে। প্রাণ থেকে কৃতজ্ঞতা।
রাসেল তার ডিপার্টমেন্টের এক ছোটভাই অর্ককে পাঠিয়ে দিয়েছে। সে চায়ের টেবিলে বসতে না বসতেই আমার মেয়ের শ্বাশুরীর ফোন, জলদি আসো সই লাগবে। সুশান্তর পোস্টে দেখলাম বিদেশে স্বামীদের ওটিতে থাকা এলাউড।
কৌশিকও সুবিধাটা পেযেছেন। কিন্তু আদ-দ্বীনে ডাক্তার হওযার পরও বাইরের কাউকে থিয়েটারে ঢুকতে দেয়া হয় না। তাই সোমা আর রিমা আপা দাঁড়িয়েই রইলেন। আমি আসতে দেরি হচ্ছে (যদিও উধ্বশ্বাসে ছুটছিলাম) দেখে রিমা আপাই সই দিয়ে ছাড়ালেন মেয়েকে। হাতে পুটলি নিয়ে বাড়িয়ে দিলেন আমার দিকে।
টাওযেল মোড়া অপূর্ব ওই মেয়েটাই আমার রাজকন্যা। আমার কেমন লাগছিল? আমার খুব ঘুম আসছিলো। মনে হচ্ছিল ঢলে পড়ে যাব। টানা তিন রাত জাগার ক্লান্তিটা ওই মুহূর্তেই যেন সর্বশক্তিতে টলিয়ে দিতে চাইছিলো আমাকে।
মনের ভিতর শিহরণ আনার সময়টুকুও নেই।
মেয়ের ঠাণ্ডা লেগেছে। ছুটছি সিসিইউতে। সঙ্গে সোমা। ইনজেকশন আনলাম, এটা লাগবে ওটা লাগবে। তার মধ্যেও এসএমএস করছি, ফোন আসছে ফিরতি।
অফিস থেকে খোকন বলল- পিয়াল ভাই আপাতত টপ ওয়ানে আছে নিউজটা, অনুমতি দিলে টপ মোস্ট করে দিই। তাছাড়া গ্রামীন ফোনে ব্রেকিং নিউজ হিসেবে দিতে চাই। তবে মিষ্টি ছাড়া কিছুই হবে না। আমি হে হে করতে করতে কখনো রাস্তার ওপারে, কখনও দোতলায়, কখনও কেবিনে, কখনও ওষূধের দোকানে।
সন্ধ্যায় মেয়েকে একান্তে পেলাম মা সহ।
বউ সুস্থ আছে। আমার মন খারাপ মেয়েটা নানী দাদির গায়ের রঙ পেলেও নাকটা পেয়েছে মায়ের। বউ আরো দারুণ একটা খবর দিলো- রাজকণ্যা হওয়ার পরই যা কেদেছিল। এরপর আশে পাশে এত ট্যা ট্যা ট্যা, কিন্তু সে চুপচাপ। শুধু ছবি তোলার সময়ই যা একটু চোখ খোলে আর মুখ টিপে হাসে মাঝে মাঝে।
দোয়া করবেন ওর জন্য। আনন্দে এর বেশী লিখতেই পারছি না। তার আগে ধন্যবাদ সবাইকে যারা ওর কথা ভেবেছেন, ওকে শুভেচ্ছা দিয়েছেন।
পাদটিকা : রাজকন্যা নামটা ইনস্ট্যান্ট ওখানেই দিয়েছি। বউ মানবে কিনা নিশ্চিত নই, হয়তো বলবে ফকিরের মেয়ের রাজকন্যা নাম একদমই যায় না।
ওকে বোঝাবো আমার ভুবনে আমিই রাজা। আমার মেয়ে অবশ্যই রাজকন্যা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।