সততাই সর্ব উৎকৃষ্ট পন্থা। তোমরা সৎকর্ম ও আল্লাহ্ভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপকাজ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা।
(সুরা আল- মা’ইদাঃ ২)
বর্তমানে আমাদের সমাজে দেখা যায় মানুষজন আল্লাহ্র এই আদেশের ঠিক উল্টোটা করে। সৎকর্ম ও আল্লাহ্ভীতিতে একে অন্যের সাহায্য তো করেই না বরং পাপকাজ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একেবারে রিস্ক নিতেও প্রস্তুত।
ছেলে-মেয়েদেরকে দেখা যায়, তারা একে অন্যকে গান, সিনেমা, অশ্লীল ছবি ইত্যাদি কোথা থেকে ডাউনলোড করতে হবে, কিভাবে ডাউনলোড করা যাবে, কোথায় কিনতে পাওয়া যাবে এই বিষয়ে একে অপরকে সাহায্য করে।
এভাবে তারা খারাপ জিনিসগুলো প্রচার করে। সমাজে খারাপ কাজকে ছড়িয়ে দেয়।
মহান আল্লাহ্ বলেনঃ “যারা পছন্দ করে যে, মানুষের মধ্যে অশ্লীলতা প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে রয়েছে ইহাকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি”। (সুরা আন নুরঃ ১৯)
বিভিন্ন অফিসে এক কলিগ অন্য কলিগকে ঘুষ খেতে সাহায্য করে। বসের হাতে ধরা পড়ার সম্ভবনা থাকলে এক কলিগ অন্য কলিগকে বসের কাছে মিথ্যা কথা বলে বাচিয়ে দেয়।
আমাদের সমাজে দুর্গা পূজার সময়ে একজন অন্যজনকে টেনে নিয়ে যায় পূজা দেখার জন্য। যদি কেউ পূজা দেখায় অনীহা থাকার দরুন বলে “আমি যাব না তোরা যা!, আমার কাছে টাকা নেই,” ইত্যাদি তখন তারা বলে আমি তোকে পথ খরচ দিয়ে নিয়ে যাব।
এভাবে তারা পাপকাজ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করে। এর পিছনে টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে প্রস্তুত। অথচ মূর্তি পূজা হচ্ছে শির্ক। শির্ক হচ্ছে সকল অপরাধের মধ্যে সবচেয়ে বড় অপরাধ।
আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ “নিশ্চয় যে আল্লাহর সাথে শির্ক-এ লিপ্ত হয়, আল্লাহ তার জন্যে জান্নাত হারাম করে দেন।
এবং জাহান্নাম অবধারিত করে দেন। (সুরা আল-মাইদাঃ ৭২)
আর আমাদের সমাজের লোকেরা এত বড় এক পাপকাজ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করে। অথচ রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ কেউ যখন কোন অপরাধ দেখবে তখন সেটা হাত দিয়ে বল প্রয়োগ করে বন্ধ করে দিবে, যদি তাঁর সে ক্ষমতা না থাকে তবে মুখ দিয়ে বলে এর পরিবর্তন করবে, যদি তার এই সাধ্যও না থাকে তবে অন্তরে ঘৃণা করবে। আর এটাই হল দুর্বলতম ঈমানের পরিচয়। (সহীহ মুসলিম, ১ম খন্ড, ঈমান অধ্যায়, অনুচ্ছেদ: অন্যায় কাজে বাধা দেয়া ঈমানের অঙ্গ, হাদিস নং ৮৫)
আর সেই আমাদের সমাজের লোকেরা শির্ক মত বড় অপরাধকে হাত দিয়ে বাধা দেয়া তো দুরের কথা অন্তরেও ঘৃণা করে না।
বরং সে মনে মনে এটাকে পছন্দই করে, উপভোগ করে। সে আবার নিজেকে মুসলিম বলেও দাবী করে।
এভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বর্তমান সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষ পাপকাজ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করে চলেছে।
সৎ কাজের জন্য কেউ কাউকে সাহায্য করে না। যদি কোন লোক সৎ থাকে তাহলে অন্যান্য লোকেরা ঐ সৎ লোকটিকে কোন প্রকার সাহায্য তো করেই না উল্টো তাঁর পেছনে লাগে।
কারন তারা ঐ লোকটির কারনে ঘুষ খেতে পারে না, অসৎ কাজ করতে পারে না। কেউ কারো কাছে ভাল কোন বিষয়ে সাহায্য চাইলে তখন তারা ব্যাস্ততা দেখায়। কাউকে সৎ পথে আহ্বান করলে তখন বলে- “ভাই খুব ব্যাস্ত আছি” । সৎ কাজে তাদের ব্যাস্ততা বেড়ে যায়।
তারা একটুও আল্লাহ্কে ভয় করে না।
তারা আল্লাহ্র আয়াতকে অগ্রাহ্য করে।
পবিত্র কুরআনে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ বলেনঃ “এতে সন্দেহ নেই যে, আমার আয়াত সমুহকে যারা অগ্রাহ্য করবে, আমি তাদেরকে দোযখের আগুনে নিক্ষেপ করব। তাদের চামড়াগুলো যখন জ্বলে-পুড়ে যাবে, তখন আবার আমি সেখানে নতুন চামড়া আনায়ন করব, যাতে তারা আযাব পূর্ণভাবে আস্বাদন করতে থাকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, এবং মহাজ্ঞানী। (সুরা আনা নিসাঃ ৫৬) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।