jannat0007@gmail.com
বিশ্বের প্রায় সব রোগীই ইনজেকশন নিতে ভয় পায়। শরীরে হুল ফুটিয়ে ওষুধ নেয়াটা খুব একটা স্বস্তিকর নয়, ব্যথা ও অস্বস্তি লাগে। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে বিশেষ ধরনের একটি প্যাচ তৈরি করা হয়েছে, যা অচিরেই ইনজেকশনের সুচের বিকল্প হতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীরাও উপকৃত হবেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডাক্তারের সুচের প্রতি যদি অহেতুক ভয় থাকে আপনার, তবে আপনাকে আশ্বস্ত করার মতো একটি বৈজ্ঞানিক উপায় উদ্ভাবন হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা দেহের চামড়ার জন্য এমন একটি ছোট্ট প্যাচ উদ্ভাবন করেছেন, যার মাধ্যমে ইনজেকশনের সুচের পরিবর্তে বিনা ব্যথায় শরীরে ওষুধ প্রবেশ করানো যাবে।
একটি সুচের ব্যথাদায়ক খোচার পরিবর্তে এ প্যাচ এর মাধ্যমে খুব ছোট ছোট বেশ কিছু সিরিঞ্জের মাধ্যমে চামড়ার উপরিভাগে ইনজেক্ট করা যাবে, যাতে কোনো ব্যথা বা অস্বস্তি পাওয়া যাবে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ কৌশলের মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিন ইনসুলিন নেয়ার কাজ স্বস্তিদায়ক করা যাবে এবং অ্যাজমা ইনহেলারের বিকল্প হিসেবেও এ প্যাচ ব্যবহার করা যাবে। ভবিষ্যতে এর মাধ্যমে রোগীদের শরীরে দিনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগ করা যাবে।
কমপিউটার ইনকজেট প্রিন্টার কাট্রিজের নির্মাণ শৈলীর ওপর ভিত্তি করে এ প্যাচ তৈরি করা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, ওইসব কাট্রিজের যেসব ছোট সরু ছিদ্রপথ (নজেল) ব্যবহার করা হয় কাগজে কালি ফুটিয়ে তোলার জন্য, সেগুলো সংস্কার করে শরীরে ওষুধ প্রয়োগ বা ইনজেকশনের কাজ সারা যায়। হিউলেট প্যাকার্ডের মুখপাত্র চার্লি চ্যাপম্যান বলেছেন, মানব শরীরে বিনা ব্যথায় ওষুধ প্রয়োগের উপায় হিসেবে এ কৌশল উদ্ভাবন করা হয়েছে। গতানুগতিক সিরিঞ্জ ব্যবহারের কারণে রোগীরা যে ব্যথা অনুভব করে, এ প্যাচ ব্যবহার করলে তুলনামূলকভাবে ব্যথা ও অস্বস্তি একবারেই বোধ করবে না রোগীরা।
ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণে অথবা স্মোকারদের নিকোটিন নেয়ার জন্য ইতিমধ্যেই প্যাচ এর ব্যবহার চালু আছে। ওইসব কেমিকাল চামড়ার মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
কিন্তু যেসব ওষুধে বড় ও পানিতে দ্রবণীয় অণু রয়েছে, সেগুলোকে চামড়া ছিদ্র করে শরীরে প্রবেশ করাতে হয়। আর এখন পর্যন্ত সরাসরি চামড়াতে ওইসব ওষুধ প্রয়োগের কৌশল উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়নি।
এক ইঞ্চি দীর্ঘ চারকোণা আকৃতির স্মার্ট নামের এ প্যাচ চামড়ায় এক ধরনের আঠার মাধ্যমে আটক থাকে। এতে ১৫০টি মাইক্রো বা অতি ক্ষুদ্র সিরিঞ্জ থাকে। এছাড়া রোগীর প্রয়োজনীয় ওষুধের জন্য এতে ৪০০টি ছোট সিলিন্ডার আকৃতির আধার রাখা হয়।
এক ইঞ্চি দীর্ঘ চারকোণা আকৃতির স্মার্ট নামের প্যাচ। প্যাডটিতে ৪০০টি সিলিন্ডার আকৃতির আধার আছে। এগুলোতে ওষুধ জমা থাকে। একটি মাইক্রোচিপ ওষুধের সঠিক মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
ওইসব আধার থেকে সুচগুলোতে কি পরিমাণ ওষুধ যায় তা নিয়ন্ত্রণ করে একটি মাইক্রোচিপ।
চ্যাপম্যান বলেছেন, এই অতি ক্ষুদ্র সুচগুলো নির্দিষ্ট হারে প্রতিবার একটি আধার থেকে ওষুধ প্রবেশ করায় শরীরের ভেতর।
উদ্ভাবকরা আশা করছেন, ভবিষ্যতে সবার জন্য বাজারজাত করা যাবে এ বিশেষ প্যাচটি। এ প্যাচ সেন্সর বা উপলব্ধি কৌশলের মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীর শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা কম বুঝতে পারলে ইনসুলিন সরবরাহ করতে পারবে বলে জানিয়েছেন উদ্ভাবকরা।
আর যেসব রোগীকে দিনে কয়েক ধরনের ওষুধ গ্রহণ করতে হয়, তাদের ওষুধ গ্রহণের সময় নিয়ে ভাবতে হবে না, মাইক্রোচিপ সে কাজটি করে দেবে।
এ প্যাচ কয়েকদিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত কাজ করতে পারবে।
আইরিশ মেডিকাল যন্ত্রপাতি উদ্ভাবনকারী কম্পানি ক্রসপন প্যাচ উদ্ভাবন করেছেন। ২০১০ সালের মধ্যে এগুলো সবার হাতের নাগালে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।