আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রকৃত গনতন্ত্র পেতে হলে কিছু লোকের ভোটাধিকার রহিত করতে হবে।

কেএসআমীন ব্লগ

প্রকৃত গনতন্ত্র পেতে হলে আর দেশের সত্যিকারের উন্নয়ন ঘটাতে হলে এদেশে কিছু লোকের ভোটাধিকার রহিত করতে হবে। এদেশে "হাজী সেলিম" আর "হাজী মকবুল"রা কীভাবে সংসদে নির্বাচিত হয়, আর আইন প্রণয়ন(!) করে, তা প্রায় সকলেরই জানা থাকার কথা। এদের সংখ্যাই সংসদে সর্বাধিক। বলতে গেলে ১৪ আনা। তাহলে তো ১৪ আনার স্বার্থেই সংসদ চলবে ও দেশ চলবে, নাকি? অনেকেই মনে করেন যে, জাতি যখন শিক্ষিত হবে, আরও সচেতন হবে, কেবল তখনই হাজী সেলিম'রা আইন প্রণেতা হিসেবে নির্বাচিত হবে না, জনপ্রতিনিধি হবে না, দেশ পরিচালনা করবে না।

কিন্তু আমাদের সে দিন সুদূর পরাহত...। এই জগতে কোন কালেই, কোন দেশে এমনটি হয়নি। যোগ্য সরকারকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তাহলে কি এভাবেই চলবে আমাদের দেশ? সমাধান আমাদের কাছেই রয়েছে। পঞ্চম শ্রেণীতে এসএসসি, এইচএসসি'র মত দেশব্যাপী "নিম্ন মাধ্যমিক" পরীক্ষার আয়োজন করতে হবে।

এই পরীক্ষা পাশ না করলে কেউ হাই-স্কুলে ভর্তি হতে পারবে না। যারা নিম্নমাধ্যমিক উর্তীর্ণ হবে না তারা ভোটার হওয়া সহ বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা হতে বঞ্চিত হবেন। যেমন, পাসপোর্ট করা, ড্রাইভিং লাইসেন্স, সরকারী/বেসরকারী চাকরি ইত্যাদি। একবার ভাবুন, আমাদের দেশ থেকে বকলম মানুষেরা বিদেশে গিয়ে কীভাবে চাকুরি করছে? সে যদি মোটামুটি শিক্ষিত হতো, তবে দেশের মান-সম্মান আরও বৃদ্ধি করতে পারতো, আয় করতে পারতো আরও বেশী বৈদেশিক মুদ্রা। আমাদের ড্রাইভারদের অন্তত ৬০% বকলম।

এই বকলমরা ট্রাফিক আইনেরই বা কী বুঝবে? আমাদের গোড়ায় গলদ আছে এটা আগে সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে। ইচ্ছে করলে নির্বাচন কমিশন আগামী নির্বাচনেই বকলম ভোটারদেরকে বাদ দিতে পারেন। যেহেতু পঞ্চম-শ্রেণী পাশের কোন গ্রহনযোগ্য সার্টিফিকেট পদ্ধতি দেশে চালু নেই, তাই ভোটারদের একটা সহজ ইন্টারভিউ নেয়া যেতে পারে। পত্রিকা পড়া, স্বাক্ষর করা ইত্যাদির মাধ্যমে একজনের পঞ্চম শ্রেণী জ্ঞান সম্পর্কে ধারণা নেয়া যায়। ইন্টারভিউতে সাফল্য লাভ করলেই ভোটার হিসেবে গন্য হবেন।

তা না হলে এটা শুধুমাত্র ঐ ব্যক্তির জাতীয় আইডি হিসেবে গন্য হবে। দেশের শিক্ষিত লোকের শতকরা ৯৫ ভাগই এর পক্ষে থাকবেন বলে আশা রাখি। যারা অশিক্ষিত তারা এর বিরুদ্ধে যেতে পারবে না, কারণ তারাতো এমনিতেই দুর্বল। এই বৃহত্ত জনগোষ্ঠী তখন শিক্ষিত হওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাবে। তবে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলির একটি বড় অংশ এর বিপক্ষে থাকতে পারেন।

এটা অবশ্য নীতিগত বিরুদ্ধাচারণ নয়, বরং স্বার্থগত। গ্রামের নিরীহ গরীব ভোটার অথবা বস্তিবাসীর ভোট যারা অর্থ আর পেশীশক্তির সাহায্যে এতদিন আদায় করেছে, ভোটকেন্দ্র যারা দখল করে নির্বাচন করে, তারা এর বিরুদ্ধে থাকারই কথা। নূন্যতম পঞ্চম-শ্রেণী পাশ করা মানুষদের ভোটার সহ নানাবিধ রাষ্ট্রীয় সুবিধা দিলে দেশে শিক্ষিতের হার দ্রুত বেড়ে যাবে। দেশে ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৫০% কমে যাবে। এতে সরকারের ভোট আয়োজনের খরচও অনেক কমবে।

যোগ্য প্রার্থীরা নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পাবে। অবৈধ অর্থ আর পেশীশক্তির ব্যবহারও ৯০% কমে যাবে। ড. কামালের মত মানুষকে হারুন মোল্লার কাছে পরাজিত হতে হবে না। এটা আমাদের কোন রাজনৈতিক সরকারের পক্ষে প্রায় অসাধ্য। এমনকি ইচ্ছা থাকলেও।

"মাহাথির" মার্কা সরকার দরকার। বর্তমান সরকার আমাদের দুই নেত্রীকে জেলে পুরেছেন। বিভিন্ন শক্তিশালী(!) লোক হয় জেলে নয় পলাতক বিদেশে। এরকম মহাশক্তিধর সরকারই পারে দেশের জন্য কোন 'ব্রেকথ্রু' টাইপের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে। সরকার দেশে প্রাথমিক শিক্ষা বিনামূল্যে ও বাধ্যতামলূক করেছেন।

এটা বাস্তবায়ন করতে হলেও উপরোক্ত সিদ্ধান্ত সরকারকে গ্রহন করতে হয়। দেশের মানুষ সত্ত, যোগ্য ও কঠোর সরকার চায়, দুর্বল ও অযোগ্য সরকার চায় না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।