কল্যাণের কথা বলি, কল্যাণের পথে চলি।
ইসলাম জ়াকাতকে এই দীনের অন্যতম স্তম্ভ বলে ঘোষণা করেছে। ইসলামের নবী বলেছেন, "ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিতঃ এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে 'আল্লাহ্ ছাড়া বন্দেগী ও দাসত্ব পাওয়ার উপযোগী কোন উপাস্য নেই ও মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহ্র বান্দা ও রসূল', নামাজ় প্রতিষ্ঠিত করা, জ়াকাত দান করা, রমজ়ানের রোজ়া পালন করা, ও সাধ্য থাকলে আল্লাহ্র ঘরের হজ্জ করা। " স্বাভাবিক ভাবেই ইসলামের ভিত্তির একটি হলো জ়াকাত। এটা কোন দানের ব্যাপার নয়।
এটা হচ্ছে সমাজের এক শ্রেণীর মানুষের কাছ থেকে অন্য কয়েক শ্রেণীর মানুষের প্রাপ্য।
কারা জ়াকাত পাবে তাও আল্লাহ্ তা'আলা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন (তাঁর কালামের তর্জমা)ঃ "নিশ্চয়ই জ়াকাত দরিদ্র ও অভাবীবের এবং জ়াকাত আদায়ের কাজে নিযুক্ত কর্মচারীদের জন্য; এটা তাদের জন্যও যাদের মন জয় করা দরকার; তাদের জন্য যারা দাসত্বের শৃংখলে আবদ্ধ ও ঋণগ্রস্ত; এছাড়াও আল্লার রাস্তায় এবং মুসাফিরদের জন্য। এটাই আল্লাহ্র নির্ধারিত ব্যবস্থা। আর আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে জ্ঞানী ও প্রজ্ঞাময়।
" (কুর'আন, ৯/৬০)
জ়াকাত মানে কাউকে অনুগ্রহ দান করা বুঝায়না। বরং জ়াকাত গ্রহন করার মাধ্যমে গ্রহীতা সম্পদের অধিকারী মানুষটিকে অনুগ্রহ করেন। এজন্য যার জ়াকাত পাওয়ার হক আছে তাকে জ়াকাতের টাকার হকটা পৌঁছিয়ে দেয়াই মুসলমানদের কর্তব্য। কিন্তু ইসলামী জ়াকাত ব্যবস্থা আমাদের সমাজে প্রচলিত না থাকায় এ সম্পর্কে রয়েছে আমাদের মাঝে নানা ভুল ধারণা। আমাদের দেশের এক শ্রেণীর মানুষ জ়াকাত প্রদানের নামে লোক দেখানোর কিছু কাজ করে গরীব মানুষের ভোগান্তি বাড়ান।
আর এতে করে জ়াকাত সম্পর্কেই তৈরী হয়েছে ভুল ধারণা। এছাড়াও ইসলাম সম্পর্কে জানার প্রতি উন্নাসিকতাও এজন্য দায়ী।
এসবের কারণে যখন ঘূর্ণিঝড় সিডরে আক্রান্তদের জন্য মুসলিম বিশ্ব থেকে জ়াকাত আদায়ের কথা বলা হয়েছে তখন অজ্ঞতায় আক্রান্ত টনটনে বাঙালী আত্মস্মানবোধ জেগে উঠেছে কিছু লোকের। একজন পূরো ব্যাপারটাকে ব্যঙ্গ করে এই ব্লগে পোস্টও দিয়েছেন। এর সাথে সাথে একটা মুসলিম দেশের (১০০ মিলিয়ন ডলার) সাহায্যকেও ব্যঙ্গ করা হয়েছে, যদিও সে দেশটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশী সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
অথচ এজন্য খূশী হওয়ার কথা ছিল আমাদের। কারণ এতদিনে সত্যিকারভাবে ইসলামের জ়াকাত ব্যবস্থা প্রয়োগ করা যাচ্ছিল বলে। জ়াকাতের কাপড় দেয়ার নাম করে লোক হাসানোর যে কাজ করা হয় তার পরিবর্তে জ়াকাতের সত্যিকার প্রয়োগ ঘটানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তাকে অভিনন্দিত করা উচিত আমাদের।
অবশ্য যাদের কাছে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ রয়েছে তাদের কাছ থেকে আমরা ব্যঙ্গ ছাড়া আর কিছুই আশা করতে পারিনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।