oporbastab@gmail.com
অপর বাস্তব নামে ব্লগের একটা বই প্রকাশিত হয়েছিল, কম বেশী সবাই জানেন। এটা গতবছরের ঘটনা। মানে ২০০৭ এর একুশে বইমেলার ঘটনা। সে বই প্রকাশ করে রাশেদুল হাফিজ তথা ছাপাকলের গচ্ছা গেছে প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা। ভাগ্যিস বই বিক্রি যেন হয় এমন আইটেম সিলেক্ট করার জন্য প্রকাশকদের কোন জোড়জবরদস্তী না থাকায় আমরা সম্পাদকরা মিলে ঠিক করেছিলাম পুরোপুরি একটা ইন্টেলেক্টচুয়াল পাবলিকেশন করতে যা ব্লগের মন্তব্য দেবার অপসনটাও তুলে ধরবে পাঠকদের কাছে।
আমাদের উদ্দেশ্য যদি লাভের অঙ্ক দেখে অপূর্ণ ভাবা হয়, তবে উদ্দেশ্য ব্যর্থই বলা যেত, যদি সেটাই আমরা ভাবতাম। "অপর বাস্তব" বইটি সমসাময়িক এত পরস্পরবিরোধী ও স্পর্শকাতর বিষয়কে তুলে ধরেছিল, যার জন্য আমরা তটস্থ থাকতাম, এবং আতঙ্ক নিয়ে শেষমেষ সেটাকে ডালভাতের মত খেতে থাকলাম। যা হবে হোক, এমন ছিল ভাব।
ডঃ ইউনুস নিয়ে কঠোর সমালোচনা ঐ বইটিতে এমন একটা সময়ে প্রকাশিত হয়েছিল যখন ইউনুসে ভর করেছে পুরো জাতি। ইউনুসের অন্ধ প্রীতির দেখা পাই আমি ও বাকীবিল্লাহ বইটির পান্ডুলিপি নিয়ে বিখ্যাত এক পাবলিশারের কর্ণাধারের কাছে গিয়ে।
বইমেলার স্টলে। উল্লেখ্য, অপরবাস্তবের পুরো লেখা সিলেকশন, সম্পাদনা শুরুই হয়েছিল বইমেলার নয়দিন আগে। বইমেলার সাত আটদিন চলে গেছে, কিন্তু পান্ডুলিপি তখনও প্রেসে যায় নি। একটা কাজই বাকী, তা হচ্ছে একজন পরিবেশকের নাম দেওয়া। মানে বইমেলাতে যার স্টলে বইটি পাওয়া যাবে, সে ঠিকানাটা লিখে দেওয়া, ব্লগে জানানো।
বাকীবিল্লাহ ও আমি পাবলিশার্সটির পয়তাল্লিশোর্ধ বয়সী মালিকের পাশে গিয়ে বসলাম। বাকী পরিচয় দিল কোন এক সূত্রের। তিনি চিনতে পারলেন। তারপরে দেখতে চাইলেন পান্ডুলিপি। ডঃ ইউনুসের পক্ষে বিপক্ষে লেখা দেখে তিনি এসব অদরকারী বলে ইশ্বরবাদ নিয়ে লেখাগুলোতে মনযোগ দিলেন।
পরোক্ষভাবে ইংগিত দিলেন, ডঃ ইউনুস বিতর্ক বাদ দিলে বাকী বইটা ছেপেও দিতে পারেন। অবশ্য ডঃ ইউনুসের প্রশস্তি গাঁথা এক জীবনী বের করেছেন এবং বিশাল পোস্টার লটকে ছিল তার স্টলের যত্রতত্র বিউটি সোপের বিজ্ঞাপনের মত।
আমাদের দরকার ছিল না প্রকাশকের, দরকার ছিল একটা প্রতিষ্ঠিত প্রকাশনা সংস্থার নাম বইতে দেয়া পরিবেশক হিশেবে যার স্টলের ঠিকানা ব্লগ ও শুভাকাঙ্খীদের জানানো যাবে। তাদের হাতে বইটি তুলে ধরার জন্য। কিন্তু ইউনুসের মাইক্রো ক্রেডিট বিরোধী বক্তব্য সম্বলিত লেখা বইয়ের পরিবেশক হবার মত সাহস উক্ত পাবলিশার্সের ছিল না দেখে আমরা আর কথা না বাড়িয়ে, এর পরে স্রেফ ইশ্বরবিষয়ক একটা সংকলিত বই বের করার আশাবাদ প্রাপ্ত হয়ে ফিরে এলাম।
অপরবাস্তবের স্বার্থকতা হচ্ছে, এটা ইতিহাসের পাঠ্য হবে। কিন্তু দ্বিতীয় অপরবাস্তবকে নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা ভিন্ন। এটার উদ্দেশ্য হচ্ছে, ১) ইন্টারনেটের ব্যবহারকারী বাড়ানো, ২) ব্লগার বাড়ানো। আমি মনে করি, ব্লগের বইটি পড়ে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য উৎসাহী হবে এর পঞ্চাশ ভাগ অইন্টারনেট ব্যবহারকারী পাঠক। এবং ইন্টারনেট ব্যবহাকারী যারা এই বইটি পড়বেন প্রতিটি পাঠক ব্লগিং এ আকৃষ্ট হবেন।
আমরা দীঘদিন যাবত, মানে আমি ও বাকীবিল্লাহ, ব্লগে থাকার কারণে ধারণা পোষণ করছি যে ব্লগের একটা এমন প্রকাশনা হওয়া উচিত যেখানে ব্লগ তার সব ধরণের বৈচিত্র নিয়ে হাজির থাকবে। সামহোয়ার যে বাংলা ভাষা ইন্টারনেটে জনপ্রিয় ও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হবার পেছনে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে সেটাকে মাথায় রেখে আমরা সামহোয়ারকে তার আকষর্ণীয় সরূপে বই হিশেবে উপস্থাপন করতে চাই পাঠককূলের কাছে। সেজন্য, এবার সম্পাদনা ও বই প্রকাশের মান উৎকৃষ্ট করার জন্য বাইশজন সম্পাদকের নাম আমি প্রস্তাব করছি। আমি ও বাকীবিল্লাহ বইপ্রকাশের সিদ্ধান্ত নেবার পরে অন্যান্য সম্পাদকদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন, সম্পাদক হিশেবে কাজ করার জন্য অনুরোধ এবং রাজী করিয়েছি। তবে, নওরীন সুলতানা, মাহবুব মোর্শেদ, হোসেইন ও যীশুর সাথে এখনও যোগাযোগ করতে পারিনি ফোন নম্বর হারিয়ে ফেলার জন্য এবং সময়ের অভাবে।
তবে এই পোস্ট প্রকাশ কালিন ও এর পরের মিটিং এর মধ্যে আশা করছি, তাদের মতামত জানাতে পারবো আপনাদের। এই একুশজন সম্পাদকের মধ্যে পাঁচজন মানে আমি, বাকীবিল্লাহ, অন্যমনস্ক শরৎ, রাসেল (........), সাদিক মোহাম্মদ আলম গত অপরবাস্তবে কাজ করেছি। এবার প্রকাশক হিশেবে কারো থাকার প্রয়োজন নাই বলে সব সম্পাদকই প্রকাশক অথবা প্রকাশক অনুল্লিখিত থেকে অথবা সম্পাদকরা বসে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রকাশক নির্বাচন করতে পারবে। তবে রাশেদুল হাফিজের মত গ্রেট লস যেন কারো না হয় সে বিবেচনা মাথায় রেখে অর্থনৈতিক সমস্ত দায়িত্ব আমি ও বাকীবিল্লাহ মাথায় নিয়েছি। আমরা স্পন্সর সংগ্রহ করবো।
আশার কথা হচ্ছে অলরেডি আমাকে, বাকীবিল্লাহ ও অন্যআননকে একাধিক প্রতিষ্ঠান এ্যাড দেবার কথা দিয়েছে। আরো স্পন্সর সংগৃহীত হবে আশা করছি, যত বেশী স্পন্সর পাওয়া যাবে তত কলেবরে বইটি সমৃদ্ধ হবে এবং তত বেশী ব্লগারদের লেখা প্রকাশিত হবার সুযোগ তৈরী হবে। এই মহাযজ্ঞ আঞ্জাম দেবার জন্য যে বাইশ জন সম্পাদককে আমাদের বিবেচনায় উপযোগী মনে হয়েছে, তারা হলেন এ্যালফেবেটিক্যালী -
১. অমি রহমান পিয়াল
২. অন্ধকার
৩. অন্যআনন
৪. অন্যমনস্ক শর ৎ
৫. অরূপ রাহী
৬. উদাসী স্বপ্ন
৭. কৌশিক আহমেদ
৮. জামাল ভাস্কর
৯. নাজিম উদদীন
১০. নওরীন সুলতানা
১১. বাকীবিল্লাহ
১২. মাহবুব মোর্শেদ
১৩. মুজিব মেহদী
১৪. মনের কথা
১৫. যীশু
১৬. রাগ ইমন
১৭. রাশেদুল হাফিজ
১৮. রাসেল (......)
১৯. শওকত মাসুম
২০. সাদিক মোহাম্মদ আলম
২১. সৃজন
২২. হোসেইন
কাজ হবে ভেরি সিম্পল। শুক্রবার মানে ২০০৭ সালের নভেম্বরের দুই তারিখ এই বাইশজন কালপুরুষদার বাসায় বসতে পারি। কালপুরুষদা তার বাসার ছাদে ব্যবস্থা করে দেবেন নিশ্চিত করেছেন।
মনোরম সন্ধ্যা দেখার সাথে সাথে আলোচনাকে সরস করার জন্য খাদ্য-কুপন সিস্টেম করা হয়েছে। এ বাবদ খরচ হতে পারে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ টাকা। উপস্থিতির পরে টাকা সংগ্রহ ও খাদ্য আনার জন্য কালপুরুষের সেক্রেটারী রেডি থাকবে।
অমি রহমান পিয়াল, অন্যআনন, অন্যমনস্ক শর ৎ, জামাল ভাস্কর, নওরীন সুলতানা, বাকীবিল্লাহ, রাগ ইমন, রাসেল (......), সৃজন, মাহবুব মোর্শেদ এরা সবাই বাসা চেনে। বাকী থাকে যারা তাদের নামের সাথে ব্রাকেটে যিনি বাসার এড্রেসখানি পৌঁছে দিতে পারেন তার নাম দিয়ে দিলাম।
রাশেদুল হাফিজ (কৌশিক), শওকত মাসুম (কৌশিক), অন্ধকার (কৌশিক), অরূপ রাহী (কৌশিক), উদাসী স্বপ্ন (রাগ ইমন), মুজিব মেহেদী (কৌশিক ওভার ম্যাসেঞ্জার), যীশু (বাকীবিল্লাহ), হোসেইন (কৌশিক, মেইল করে দেব)। মিটিং শুরু হবে সন্ধ্য ৬টায়। শেষ করতে হবে আটটায়। (সময় এ জন্য নির্ধারিত করে দেয়া জরুরী মনে করছি, যেন সবাই আগেভাগে সিডিউল করে নিতে পারেন এবং পুরো ছুটির দিনটার সুখ নিদ্রা নষ্ট না হয়)। অতিথি হিশেবে আমি ব্রাত্য রাইসু ও মানস চৌধুরীকে (মানস চৌধুরী ব্লগার নন, আমি তাকে নেমন্ত্রন্য ফোনে করবো) আহবান জানাচ্ছি।
এছাড়া সামহোয়ারের রাশিদ, লাভলু, জানা, সামিহা বা দেবরাকে অথবা সবাইকে অতিথি হিশেবে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এই দুইঘন্টায় আমরা আলাপ করবো যা যা নিয়ে (এই বিষয়গুলোও আলোচনার একটা সূত্র দেবার জন্য, পরিবর্তিত এবং অন্য বিষয় সংযোজিত হতে পারে) তার একটা প্রস্তাব দিচ্ছি -
১. সম্পাদকের মাস নির্বাচনঃ সামহোয়ারের শুরু থেকে মানে ডিসেম্বর ২০০৫ থেকে ডিসেম্বর ২০০৭ পর্যন্ত মোট পচিশ মাসের জন্য একুশ জন সম্পাদক। চারজনের দুইমাস করে নিলেই হবে। এই প্রাথমিক বাছাইয়ের জন্য যে মাসের দায়িত্ব যে সম্পাদক গ্রহণ করবেন, তাকে সহযোগিতা করবেন অন্যান্য ব্লগাররা। তাদের লেখার সংশোধন, কপিরাইট বা অন্য কোন অনাখাঙ্খিত বিষয় চলে আসলে সেগুলো তারা দেখবেন।
যেহেতু ওপেন বাছাই হবে সুতরাং নিদৃষ্ট মাসের নিদৃষ্ট সম্পাদক, ধরুন জানুয়ারী মাসের জন্য অন্ধকার, ঐ প্রাথমিক নির্বাচিত লেখাগুলো থেকে ক্যাটাগরি তৈরী করবেন। অর্থাৎ নির্বাচিত লেখা নির্ধারণ করে দেবে ক্যাটাগরি। শুক্রবারের মিটিং এ আলাপ হতে পারে কে কোন মাসের দায়িত্ব নিতে চান। অথবা আমার এই প্রস্তাব সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে নতুন কোন আইডিয়া নিয়ে উক্ত মিটিং আলোচিত ও গৃহীত হতে পারে।
২. প্রাথমিক বাছাইয়ের সময় সীমাঃ এই কাজের জন্য প্রয়োজন একটা সময় নির্ধারণ করা।
আমি নভেম্বর মাসের বিশ তারিখ পর্যন্ত এ কাজের সময় সীমা ভাবছি। তবে এ বিষয়ে আমার প্রস্তাব সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করেও নতুন কোন আইডিয়া আলোচিত ও গৃহীত হতে পারে।
৩. দ্বিতীয় বাছাইয়ের দিন সময় ও ভেনুঃ প্রাথমিক বাছাইয়ের পরে ক্যাটাগরি বানানো ও এক একটা ক্যাটাগরির জন্য একাধিক সম্পাদক মিলে একটা সম্পাদকীয় কমিটি করে সেই ক্যাটাগরির লেখা থেকে চুড়ান্ত বাছাইয়ের জন্য দ্বিতীয় এর মিটিং এর দরকার হবে। শুক্রবারের অব্যবহিত পরের দিনগুলোতে এই মিটিং টা হওয়া বাঞ্ছনীয়।
আপাতত কাজের ফিরিস্তি এই পর্যন্ত।
এখন শুক্রবার এই মিটিং যারা যারা অংশ নিতে পারবেন না বলে আগে ভাগেই আমি নিশ্চিত হতে পারছি তারা হলেন, নাজিম উদদীন (ইউএসএ), মনের কথা (ইন্ডিয়া), সাদিক মোহাম্মদ আলম (ইউএসএ)। বাকীরা সন্ধ্যা ছ'টাতে কোথায় আসবেন, কখন আসবেন এবং কে কে আসবেন জানাতে পারেন। যিনি আসতে পারবেন না তিনি মেইলে, ফোনের মাধ্যেম তার মতামত জানাতে পারেন।
এই পোস্টটি আমি কৌশিক আহমেদ লিখেছি, বাকীবিল্লাহ অপরবাস্তবের নিক থেকে প্রকাশ করেছে। মিটিং এর সময়, এজেন্ডা, বই প্রকাশের আইডিয়া সবকিছুই বাইশজন সম্পাদকের মতামতের উপরে নির্ভরশীল।
আমি কেবল শুরু করার জন্য কিছু প্রস্তাব পেশ করলাম। সম্পাদকরা রাজী থাকলে বলেন আলহামদুলিল্লাহ, দেখা হবে কালপুরুষের বাসায় শুক্রবার সন্ধ্যা ছ’টায়।
লেখকঃ কৌশিক আহমেদ , সহযোগী লেখকঃ বাকীবিল্লাহ
পহেলা নভেম্বর ২০০৭
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।