সংবিধান-ই নাগরিকের শক্তি
বাংলাদেশের বীর বাঙালিরা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা করে জাতীয় স্বাধীনতার জন্য ঐতিহাসিক যুদ্ধের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন। দীর্ঘ সাড়ে তিন দশক পরও আমরা দেশটিকে সমৃদ্ধশালী দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি। জন্মের সময় জনসাধারণ ছিল মাত্র ৭.৫ কোটি। সময়ের আবর্তনে আজ ১৫ কোটির বেশি। বাংলাদেশ ষড়ঋতূর দেশ।
কৃষি ও শিল্প বিপ্লবের মাধ্যমে আভ্যন-রীন সম্পদ বৃদ্ধি না করতে পারলে আমাদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত। সময়ের বিবর্তনে উন্নত বিশ্বের যাবতীয় সুবিধা এখন আমাদের থাকলেও আর্থিক দৈন্যতার জন্য আমরা সকলে ভোগ করতে পারছি না। কারণ, আমরা সময় থেকে অনেক দূরে। মানসিকতা বৃটিশ আমলের। যারা সনদধারী শিক্ষিত তারাও অধিকার ও দায়িত্ব সচেতন নয়।
তাই সমকালীন শিক্ষার অভাবে আমরা একটা বিশৃঙ্খল জাতিতে পরিণত হয়েছি। এজন্যে মানব সূচক উন্নয়নে আমরা ১০০% দূর্নীতিগ্রস্থ দেশ হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছি। যারা রাজনীতি করেন তারা এর দায়ভার একে অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার ব্যর্থ চেষ্টায় ব্যস্ত। সুস্থ রাজনীতি অনুপস্থিত। সুস্থ রাজনীতির জন্য দরকার নাগরিকদের রাজনৈতিক সচেতনতা।
প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় কথিত উচ্চ শিক্ষিতরাই রাজনৈতিক সচেতন মানে অধিকার ও দায়িত্ব সচেতন নন। বাংলাদেশী বাঙালিদের সমকালীন শিক্ষায় শিক্ষিত করে একটি সাহসী ও সমকালীন বাঙালি শিক্ষিত সমাজ গঠনে দরকার বাধ্যতামূলক সবার জন্য সংবিধান শিক্ষা। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে নাগরিক অধিকার ও মৌলিক অধিকার সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা দেয়া আছে। তাই অধিকার ও দায়িত্ব সচেতনার জন্য সংবিধান পাঠের বিকল্প নেই। সংবিধান শিক্ষার অভাবে অনেক উচ্চ শিক্ষিতরাও প্রতিনিয়ত ঠকছেন এবং অধিকার বঞ্চিত হচ্ছেন।
কারন এরা সংবিধান পড়েননি। তাই যিনি সংবিধান জানেননা তিনি ভোটার কিন্তু সু-নাগরিক নন। কারণ সুনাগরিক মানেই তো অধিকার ও দায়িত্ব সচেতন ব্যক্তি। কোন সংগঠন বা সংঘের সদস্যদের ঐ সংগঠন বা সংঘের নিয়ম কানুন জানার জন্য দরকার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্র (সংবিধান) পড়া। সংবিধান জানা ব্যক্তি তার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হতে বা প্রতিনিধি নির্বাচন করতে সঠিক ভূমিকা রাখতে পারেন।
বাংলাদেশও একটি সংগঠন। এই সংগঠনের সদস্য হচ্ছে এদেশের নাগরিকগণ। তাই নাগরিকদের সমকালীন শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে অধিকার ও দায়িত্ব সচেতন হতে সংবিধান পাঠের বিকল্প নেই। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, সংবিধান জানা ব্যক্তিকে বাংলাদেশে কেউ ঠকাতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবেনা বলে আমার বিশ্বাস। একুশ শতকে শিক্ষার সংজ্ঞা হচ্ছে, "সমকালীন যাবতীয় ব্যক্তিগত ও সামাজিক কর্মকান্ডে পারদর্শী ব্যক্তিই শিক্ষিত"।
সনদধারী কথিত শিক্ষিতরা Educated কিন্তু Civilized নয়। সুনাগরিক হতে সংবিধান পাঠের বিকল্প নেই। সংবিধান-ই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন। সংবিধানেই আছে দেশের যাবতীয় তথ্য। সামাজিক নিরাপত্তার জন্য অধিকার ও দায়িত্ব সচেতন হতে সংবিধান পড়ুন, দেশের তথ্য জানুন।
সংবিধান-ই নাগরিকের শক্তি।
মেহ্দী হাসান দোহা
http://www.blsbd.org
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।