ওরে ভয় নাই আর, দুলিয়া উঠিছে হিমালয়-চাপা প্রাচী! গৌরীশিখরে তুহিন ভেদিয়া জাগিছে সব্যসাচী! একদা তারা গুনতে গুনতে ঘুমিয়ে পড়তাম রূপকথা শুনতে শুনতে ।
আজকাল আকাশে খুঁজে বেড়াই তারার দল ।
শূন্য আকাশের দেখা মেলা এখন বড় ভার ।
আকাশ ভরা বড় দালান কোঠা ।
মাঝখানের ফাঁক গলে হয়ত দুএকটা তারার দেখা মেলে ।
যাদের গুনতে গিয়ে এক সময় রাত পোহাত তাদের সংখ্যা যেন এখন নিতান্তই হাতে গোনা ।
তারার দলের সাথে আজ অনেকদিন গল্প হয় না ।
অনেকদিন ।
আজ অনেকদিন ধরে ।
এখন শুধু গল্প হয় নিজের সাথে ।
একাকী।
নিরবে।
কি অদ্ভুত ।
এই তো সেদিনও সন্ধ্যাটা গল্পে আড্ডায় কাটিয়েছিলাম সবার সাথে রেল লাইনে বসে ।
অথচ আজ কেউ পাশে নেই ।
কি অদ্ভুত ! তাই না?
সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্বের সাথে আমাদের কি অদ্ভুত মিল ।
ইট সিমেন্ট আর রডের ব্যস্ত শহর ঢাকা ।
এখানকার তারারাও হয়ত খুব ব্যস্ত । হয়ত দূরে সরে যাচ্ছে খুব দ্রুত একে অপরের কাছ থেকে ।
কিংবা দূষিত পৃথিবীর পাপীদের সামনে আর আসতে চায় না ! লুকিয়ে আছে লজ্জায় ।
তারাদের মতো আমরাও হয়ত একে অপরের কাছ থেকে খুব দূরে সরে যাচ্ছি ।
কিংবা সরে যাচ্ছি মানবিক গুণাবলির কাছ থেকেও যোজন যোজন পথ দূরত্বে ।
দারুণ হতাশ হই যখন সকালে খবরের কাগজ খুলে পড়তে বসি।
আজকাল ধর্ষণ যেন আমাদের একটা দর্শন হয়ে দাঁড়িয়েছে !
কি অবাক কান্ড !!!
তিন বছরের শিশু থেকে সত্তর বছরের বৃদ্ধা ।
বাদ যাচ্ছে না কেউই ।
নিজেকে মানুষ বলতেও কেমন যেন লজ্জা লাগে ।
লজ্জিত হই আজকাল ভীষণ রকম ।
মেয়েদের দেখলেই কেমন যেন একটা অপরাধবোধে ভোগি ।
আমাদের প্রতিবাদও যেন ভাষা হারিয়েছে ।
আচ্ছা আমরা কি সেই বাঙ্গালি ?
যারা কখনো অন্যায় মানতে পারে নি?
হার মানেনি কখনো অত্যাচার আর শোষণের কাছে?
আমরা কি সেই বাঙ্গালি ?
যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে?
যাদের ৩০ লক্ষ মা-ভাই-বোন-বাবার জীবনের আর সম্ভ্রমের বিনিময়ে এসেছে স্বাধীনতা?
আমরা কি সেই বাঙ্গালি ?
লজ্জিত হই আজকাল ভীষণ ।
যখন দেখতে পাই আমি জনতারই একজন ।
বাঙালি জনতার ।
অথচ একদিন এই জনতার জোয়ারই অবাক চোখে দেখেছিল বিশ্ববাসী ।
'৫২,'৬৯, '৭১,'৯০ এ ............ এইতো সেদিন ।
অনেকদিন আগে সেদিন ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।