আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১২ ই রবীউল আউয়াল, সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ বিরোধীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দাঁতভাঙ্গা জবাব-১

ধর্মব্যবসায়ী, আশাদ্দুদ দরজার জাহিল উলামায়ে সূ’রা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং টিভি চ্যানেলে বলেছে, ‘মীলাদুন নবী’ শব্দের শরয়ী কোন ভিত্তি নেই, তাই এটি পরিত্যাজ্য। নাঊযুবিল্লাহ! এর জাওয়াব হলো- উক্ত উলামায়ে সূ’রা তাদের বক্তব্যে ‘ঈদ’ শব্দটি বাদ দিয়ে শুধু ‘মীলাদুন নবী’ শব্দ ব্যবহার করে প্রমাণ করেছে যে, তারা খোদ ইবলিসেরই একান্ত অনুসারী। কারণ নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যমীনে আগমন উপলক্ষে কেবল ইবলিস ও তার চেলারাই নাখুশি বা নারাজী প্রকাশ করেছিল। অথচ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- উনার আগমন উপলক্ষে স্বয়ং আল্লাহ পাক- উনার নির্দেশে খুশি প্রকাশ করেছিলেন ফেরেশতাকুল, জান্নাতের অধিবাসীগণ এবং বনের পশু-পাখিরা পর্যন্ত। খুশি প্রকাশ করে উনারা ছানা-ছিফত বর্ণনা করেছিলেন এবং পাঠ করেছিলেন ছলাত-সালাম।

সুবহানাল্লাহ! অতএব, মুসলমানগণ শুধু ‘মীলাদুন নবী’ নয় বরং উনারা ‘ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ পরিভাষা ব্যবহার করে থাকেন। মূলত ‘ঈদ’ অর্থ হচ্ছে খুশি বা আনন্দ প্রকাশ করা। আর ‘মীলাদ’ ও ‘নবী’ দুটি শব্দ একত্রে মিলে ‘মীলাদুন নবী’ বলা হয়। ‘মীলাদ’-এর তিনটি শব্দ রয়েছে- ميلادমীলাদ, مولد মাওলিদ ও مولود মাওলূদ। ميلاد‘মীলাদ’ অর্থ জন্মের সময়, مولد ‘মাওলিদ’ অর্থ জন্মের স্থান, مولود ‘মাওলূদ’ অর্থ সদ্যপ্রসূত সন্তান।

আর النبى ‘নবী’ শব্দ দ্বারা নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। অর্থাৎ আভিধানিক বা শাব্দিক অর্থে ميلاد النبى ‘মীলাদুন নবী’ বলতে নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- উনার বিলাদত শরীফকে বুঝানো হয়ে থাকে। আর পারিভাষিক বা ব্যবহারিক অর্থে ميلاد النبى ‘মীলাদুন নবী’ বলতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে উনার ছানা-ছিফত বর্ণনা করা, উনার প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করা, উনার পুতঃপবিত্র জীবনী মুবারকের সামগ্রীক বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করাকে বুঝানো হয়। অতএব, ‘মীলাদুন নবী’ শব্দটি যদিও খাছ কিন্তু মাফহূম বা ভাবার্থ হিসেবে এটি আম বা এর অর্থ ব্যাপক। কেননা, ‘মীলাদুন নবী’-এর উদ্দেশ্য হলো নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- উনার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা উনার আহকাম বা নির্দেশাবলী খাছভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া।

যার মাধ্যমে মানুষ তাদের সৃষ্টি, তাদের সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা সম্পর্কে। অবহিত হয়েছে, আরো অবহিত হয়েছে তাদের সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্পর্কে। অর্থাৎ তারা যদি আল্লাহ তায়ালা’ উনার সেই আহকাম মেনে চলে তাহলে তারা আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- উনাদের মুহব্বত-মা’রিফাত, সন্তুষ্টি-রেযামন্দী লাভ করবে। কাজেই, যেই হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- উনার ওসীলায় সেই আহকাম বা নির্দেশাবলী এই উম্মত লাভ করলো সেই হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- উনার মুবারক আগমন উপলক্ষে উনার স্মরণের জন্য এই উম্মতের উচিত তথা উম্মতের জন্য ফরয খুশি প্রকাশ করা। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন- قل بفضل الله وبرحمته فبذلك فليفرحوا هو خير مما يجمعون অর্থ: হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উম্মাহকে জানিয়ে দিন, আল্লাহ পাক ফযল-করম হিসেবে তাদেরকে যে দ্বীন ইসলাম দিয়েছেন এবং রহমত হিসেবে উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন সেজন্য তারা যেন খুশি প্রকাশ করে।

এই খুশি প্রকাশ করাটা সেসবকিছু থেকে উত্তম যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে। (সূরা ইউনুস-৫৮) এ প্রসঙ্গে বিশ্ব সমাদৃত ও সুপ্রসিদ্ধ ‘আন্ নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে- قال على رضى الله تعالى عنه وكرم الله وجهه من عظم مولد النبى صلى الله عليه وسلم وكان سببا لقرائته لايخرج من الدنيا الا بالايمان ويدخل الجنةبغير حساب. অর্থ: হযরত আলী কররামাল্লাহু ওয়াজহাহু রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, যে ব্যক্তি মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিশেষ মর্যাদা প্রদান করলো এবং তাতে সাধ্য-সামর্থ্য অনুযায়ী খুশি প্রকাশ করলো সে অবশ্যই ঈমানের সাথে দুনিয়া থেকে বিদায় নিবে এবং বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। সুবহানাল্লাহ!(চলবে ইনশাআল্লাহ)  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।