কল্যাণের কথা বলি, কল্যাণের পথে চলি।
আমার মেয়ে সামীহাহ্! দেখতে দেখতে বড় হয়ে যাচ্ছে, মাশা’আল্লাহ্। কদিন বাদে ও ৬ বছর হয়ে যাবে। এই সেদিন সে স্কুলে [প্রি-কিন্ডারগার্টেন] যেতে শুরু করে। আর ২৫ জুন সে কিন্ডারগার্টেন গ্রাজুয়েশন করলো।
আমি তার গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে যেতে পারিনি বলে তার মন খারাপ - অনুষ্ঠানের সময়ে আমার পেশাগত দায়িত্ব থাকায় আমার পক্ষে যাওয়া সম্ভব হয়নি। সে এখন অভিমান করা শিখেছে। সে আরেকটু যখন বড় হবে তখন মান-অভিমানের আরো অনেক ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামাবে, তার প্রয়োজন বাড়বে, চাহিদা বাড়বে, সামাজিক পরিমণ্ডল প্রসারিত হবে, জীবনে নতুন উপলব্দির উদয় ঘটবে। বাহ্যিকভাবে অন্তত বাবা-মায়ের ভুমিকা হয়ে পড়বে অনেকটা গৌণ। তার নিজের সংসার হবে, দায়িত্ব বাড়বে, প্রৌঢ়ত্ব পাড়ি দিয়ে হয়তো বুড়োও হবে।
তারপর বিদায় নেয়ার পালা।
আমাদের সবার জীবনেরই আছে এমন একটা ধারা। এক সময় জন্ম, তারপর শৈশব, কৈশোর, যৌবন, প্রৌঢ়ত্ব ও বৃদ্ধাবস্থা, যা কখনো কখনো শৈশবের চেয়েও করুণ পরিণতির মুখোমুখি করে দেয় ব্যক্তিকে। তারপর আসে বিদায় নেয়ার পালা। অবশ্য সব জীবনই এ ধারাবাহিকতার সবগুলো ধাপ অতিক্রম করার সুযোগ পায়না।
আমাদের কাউকে কাউকে জন্মলগ্নেই, কাউকে শৈশবে, কাউকে কৈশোরে, কাউকে যৌবনেই বিদায়ের পালা পাড়ি দিতে হয়।
জীবন এমনই। জীবনের যিনি স্রষ্টা তিনিই এর শুরু এবং শেষের পরিকল্পনাকারী। এসব তাঁর প্রজ্ঞাধীন। তিনি জীবনের এ চক্র সম্পর্কে বলেছেন, “তাহলে তোমরা জেনে রাখো আমরা তোমাদের সৃষ্টি করেছি ধূলিকণা থেকে, তারপর শুক্রবিন্দু থেকে, তারপর রক্তপিণ্ড থেকে, তারপর গোশতের টুকরা থেকে যা আকৃতি বিশিষ্টও হয় আবার আকৃতি বিহীনও হয়।
এটা আমরা জানাচ্ছি প্রকৃত ব্যাপার সুস্পষ্ট করে বিবৃত করার জন্য। আমরা যে শুক্রকে চাই গর্ভাশয়ে তাকে বিশেষ কিছু সময়ের জন্য স্থিত করে রাখি, তারপর একটা শিশুর আকারে তোমাদের বের করে আনি, (তারপর তোমাদের প্রতিপালন করি) যাতে করে তোমরা পূর্ণ যৌবনে পৌঁছে যাও। আবার কাউকে কাউকে তারপূর্বেই ফিরিয়ে নেয়া হয়। আর কাউকে কাউকে বয়সের এমন হীনতম অবস্থায় পৌঁছানো হয় যাতে সব কিছু জানার পরও আবার সে না জানার পর্যায়ে পৌঁছে যায়”। (সূরা আল-হাজ্জ; ২২/৫)
কেন তিনি জীবন মৃত্যুর অবস্থা সৃষ্টি করেছেন? তিনি বলেছেন, “বরকতময় সে সত্ত্বা যাঁর হাতে রয়েছে সার্বভৌম সাম্রাজ্য, এবং তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু এবং জীবন, যাতে করে তোমাদের মাঝে কারা ভালো কাজ করেছে সে বিষয়ে তিনি তোমাদের পরীক্ষা করতে পারেন”। (সূরা আল-মুল্ক্; ৩০/১-২)
অনাদি কাল থেকেই চলছে জীবন-মরণের এ চক্র। এ থেকে বেরিয়ে যাবার কোন পন্থা কেউ আজো বের করতে পারেনি। তাই জীবনের সার্থকতা শুধু ভাল কাজ করার মাঝেই নিহিত। আসুন আমরা ভালকাজে মনোনিবেশ করে সার্থকতার আশা পোষণ করি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।