(২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আপডেট নিচে দেখুন । সিঙ্গাপুর প্রবাসী আজাদ ভাইয়ের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ তার অভাবনীয় সহায়তার প্রতিশ্রুতির জন্য । আর মাত্র ২ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হবে বলে আমার মনে হয় । )
ভোর ৫.৩০ এ একটা এসএমএস পেলাম, 'দুই চোখে ঘুম নাই । ভাবছি, কেন ফিরে আসলাম জীবন নিয়ে ? বারডেমে মারা গেলেই বোধহয় ভালো হত ।
সামনের মাস থেকে ওষুধ বন্ধ হয়ে যাবে, জানি না কি করব । কোন টাকা নাই । নিজের ওষুধ, মায়ের ওষুধ, বৌয়ের ওষুধ কোত্থেকে আসবে জানি না । আপনারা কেন এত কষ্ট করে আমাকে সুস্থ করলেন ? কোন মানে হয় এতো কষ্ট করার?'
মোহাম্মদ সাব্বির রাহমান, বয়স ৩৪, পেশায় সহকারী শিক্ষক, রাজশাহী মুন্নুজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গুছিয়ে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারেন । তাঁর সাথে কথা বললেই টের পাওয়া যায় তিনি ঠিক আর দশটা সাধারণ মানুষের মত বেঁচে থাকতে চান না ।
ছোট্ট এক কামরার সংসার অথচ ঘরের একদিকের প্রায় পুরো দেয়াল জুড়ে বইয়ের ভাণ্ডার ! দুর্দান্ত সংগ্রহ ! আক্ষরিক অর্থেই মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন, প্রতিদিন বাস করছেন বেঁচে থাকার অনিশ্চয়তা মাথায় নিয়ে তবুও জীবন নিয়ে কত কত স্বপ্ন দেখে চলেছেন । তাঁর ৩ বছরের পরির মত ছোট্ট মেয়েটার দুষ্টুমিতে বিব্রত আবার মুগ্ধও ! এধরনের মানুষকে দয়া দেখানো যায় না । তাঁকে একটু সহায়তা করেছি বলে বিনিময়ে কিছু করার আপ্রাণ চেষ্টা । গত আমের মৌসুমে প্রায় পুরোটা সময় তাঁর অশক্ত শরীর নিয়ে আমাদেরকে সাহায্য করে গেছেন রাসায়নিকমুক্ত ভালো আম সংগ্রহ করবার কাজে । বুঝতে পারছিলাম তিনি তুমুল চেষ্টা করে যাচ্ছেন যেন আমাদের জন্য কিছু করতে পারেন ।
একজন শিক্ষক হয়ে অন্যের অনুগ্রহ হাত পেতে নেওয়ার মানসিকতা তাঁর ছিল না !
সেই সাব্বির ভাই আজকে সকালে এই মেসেজটা পাঠালেন ! ২০১১ সালের অগাস্টে ঢাকার বারডেমে কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়েছিল তাঁর । সেই টাকার প্রায় পুরোটাই এসেছিল এই ব্লগ আর ব্লগের বাইরে কিছু দরদি মানুষের সৌজন্যে । আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক এবং সহব্রগার রোখসানা তাজিন এর এই ব্লগ একজন শিক্ষকের জন্য হাত পাতছি পড়েই সবাই জানতে পারেন সাব্বির ভাইয়ের কথা । তারপর রূঢ় বাস্তবতার বিরুদ্ধে লড়াই আর তাতে জিতে যাওয়ার আখ্যান ।
আমরা অবশ্য জানতাম এই লড়াই এত সহজে শেষ হবে না ।
Post transplant treatment খুবই ব্যয় এবং সময়সাপেক্ষ একটা ব্যাপার । সেখানেও ভাগ্যজোরে পাশে পেয়ে যাই চট্টগ্রামের A. K. Khan Foundation-কে । গত প্রায় এক বছর তাঁরা সাব্বির ভাইকে চিকিৎসা খরচ বাবদ মাসিক ২৫ হাজার টাকা করে দিয়ে এসেছেন। জাতিসঙ্ঘে কর্মরত পপি নাম্নী একজন নিউজিল্যান্ড প্রবাসী চেক-আপ বাবদ ১০ হাজার টাকা পাঠিয়ে গেছেন নিয়মিত । নিজের ও মায়ের প্রতিমাসের ওষুধ খরচের বাকি টাকাটা সাব্বির ভাই তাঁর স্কুলের সামান্য বেতন দিয়ে যেভাবে পেরেছেন চালিয়ে নিয়েছেন ।
আসছে মাস থেকে শেষ হচ্ছে এই পড়ে পাওয়া অনুদানও । এরপর ?
একমাত্র মিরাকলই এখন পারে সাব্বির ভাইকে তাঁর বেঁচে থাকার আশা ফিরিয়ে দিতে ।
মিরাকল কিন্তু হয়, আগেও হয়েছে ! তাজিন আপুর সাথে দেখা হওয়ার আগে সাব্বির ভাই কিন্তু মেনেই নিয়েছিলেন তাঁর জীবন এখন শুধুই মৃত্যুর প্রতীক্ষায় কাটবে ! বারডেমে যখন তাঁকে প্রথম আনা হল ডাক্তার তাঁর প্রথম রিপোর্ট দেখে প্রথমেই বলেছিলেন, এই পেশেন্টের তো বেঁচে থাকার কথা না, it's a miracle ! সাব্বির ভাইয়ের জন্য কিছুতেই কিডনি যোগাড় করা যাচ্ছিল না আমাদের ক্ষুদ্র বাজেটে, অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অবশেষে ডাক্তার সম্মত হয়েছিলেন তাঁর মায়ের কিডনি গ্রহণ করতে । এই এত এত মিরাকল নিয়ে এসে যদি এখন হেরে যাই, সেই ক্ষোভ আর হতাশা তো সাব্বির ভাইয়ের একার না আমাদেরও ! কি দরকার ছিল খামোকা তাঁকে আশার আলো দেখানোর !
এখন আমাদের পরিকল্পনা সাব্বির ভাইকে একটা মোটামুটি স্থায়ী বন্দোবস্ত করে দেবার । একটা ছোট ফার্মেসি, স্কুল থেকে ফিরে যেটার দেখভাল তিনি নিজেই করতে পারবেন ।
দোকানের পজেশান-মালপত্র সব মিলিয়ে এজন্য দরকার ৩-৪ লক্ষ টাকা । কম না জানি, কিন্তু আমরাই তো বছর দেড়েক আগে তাঁর জন্য ১০ লক্ষেরও বেশি টাকা যোগাড় করতে সক্ষম হয়েছিলাম, পেরেছিলাম সব প্রতিকূলতাকে জয় করে তাঁকে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখাতে । আমরা কি পারব না আবার সবাই এক হয়ে শেষ একটা যুদ্ধে সাবির ভাইকে জিতিয়ে দিতে ?
আর কিছু না হোক সাব্বির ভাইয়ের সাথে কথা বলে তাঁকে সাহস যোগান, তাঁর মোবাইল নাম্বার ০১৭১৯৯৩৩০৯৬ । সাব্বির ভাইকে টাকা পাঠাতে পারেন তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টেঃ নামঃ সাব্বির রহমান, সঞ্চয়ী হিসাব নং ১১২২১০৮০০১৪৪১৩, প্রাইম ব্যাংক, রাজশাহী ।
রাজশাহী প্রাইম ব্যাংকের SWIFT code:
PRBLBDDH009
(RAJSHAHI BRANCH)
138/144, SHAHEB BAZAR,
RAJSHAHI
BANGLADESH
আপডেটঃ ০১৭১৯৯৩৩০৯৬ সাব্বির ভাইয়ের এই নাম্বারে এখন বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারেন।
ডাচ-বাংলা ব্যাঙ্কেও অ্যাকাউন্ট খোলা হলঃ
নামঃ সাব্বির রহমান,
অ্যাকাউন্ট নম্বরঃ ১৩৫.১০১.২৬৭৬৮১
২৭ জানুয়ারিঃ সিঙ্গাপুর প্রবাসী আজাদ ভাই ফোন করেছিলেন সাব্বির ভাইকে । তিনি দুয়েকদিনের মধ্যেই ২ লক্ষ টাকা পাঠিয়ে দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন । এর আগে আজাদ ভাইয়ের স্ত্রীর বড় ভাই (রাজশাহীর স্থানীয়) যোগাযোগ করেছিলেন সাব্বির ভাইয়ের সাথে তাদের খবর নেয়ার জন্য । আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ । এখন প্রয়োজন আর ২ লক্ষ টাকা ।
২৬ জানুয়ারিঃ
মোট সংগ্রহঃ ১৪,০৫০ টাকা
একজন বিদেশ ফেরত ভাই অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বিকাশের মাধ্যমে ৩,০৫০ টাকা পাঠিয়েছেন । তাঁর পিতাও অসুস্থ, আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন তাকে সুস্থ করে দেন ।
মিরপুর থেকে এক ভাই বিকাশের মাধ্যমে ৫০০ টাকা পাঠিয়েছেন । রাজশাহীর এক ভাই আজকে হয়তো সাব্বির ভাইয়ের সাথে দেখা করতে যাবেন । আমারও মনে হয় রাজশাহীর স্থানীয় মানুষের পক্ষে সাব্বির ভাইকে মানসিক এবং অর্থনৈতিক সাপোর্ট দেয়াটা সবচেয়ে সহজ ।
২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সাব্বির ভাইয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং বিকাশে ১০,৫০০ টাকা (১০,০০০+৫০০) জমা হয়েছে । এক ভাই ২ লক্ষ টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন, সাব্বির ভাই সেটা পাওয়া মাত্রই আপনাদের জানানো হবে । আমাদের আশা এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা ৪ লক্ষ টাকা সাব্বির ভাইয়ের হাতে পৌঁছে ইতে পারবো । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।