যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
হাফপ্যন্ট পরা বয়স আমার ছিল প্রলম্বিত। লুংগি ঠিকমত পরতে না পারায় মেট্রিক পর্যন্ত হাফপ্যান্ট পরেছি অনায়েসে। দাড়িমোছের রেখা তখনও ওঠেনি। বৃষ্টি হলেই দৌড়ে নামতাম বাসার সামনের মাঠে। উপজেলা পরিষদে যে সরকারী আবাসিক এলাকা থাকতো সেটাকে বলা হতো টুইন কোয়াটার।
প্রচুর খালি জায়গা, দীঘি আর গাছপালা। আমাদের বাসার নাম ছিল প্রভাতী - বৃষ্টির সময় যেই জোরে একটা বজ্রপাত হতো দৌড়ে নামতাম সামনের মাঠে। ঘাসের মাঠে পানি তখন চুপচুপে, কতেক জায়গায় জমেও গেছে, তার মধ্যে শুরু হতো দস্যিপনা। স্কি করে দৌড়ে গিয়ে শুয়ে পড়া। দেখা যেত আমি শুরু করলেই কোয়াটারের সব ছেলেপুলে দৌড়ে নামতো।
তারপরে হঠাৎ হঠাৎ শুরু হতো আবার বজ্রপাত। বিকট আওয়াজ। সব আন্ডাবাচ্চা গিয়ে লুকাতো দোতালার সিড়ির নীচে। কোয়াটারগুলোর দোতালার সিড়ি গুলো থাকতো বাইরে। আগে নীচতলা আর দোতালা মিলে টুইন হতো, পরে দোতালা আলাদা করার জন্য বাইরে দিয়ে সিড়ি করা হয়।
আমি বিদ্যুত চমকে মজা পেতাম। আকাশের দিকে চেয়ে থাকতাম। কখন দেখা যায় আবার ঝলক, আকাশ চিড়ে খন্ড খন্ড হয়ে যাওয়া আলোক বর্তিকা - আর পরক্ষণেই কানে তালা লাগা গর্জন!
উহু, সেই দিনগুলোতে লুটোপুটি হুড়োহুড়ি করে বৃষ্টির মধ্যে নেমে যেতাম দীঘিতে। সমবয়সীরা সবাই মিলে খেলতাম ডুবাডুবী। একজন ডুব দিয়ে লুকাবে, বাকীরা খুঁজবে তাকে।
যে যত নিচে যেতে পারে সে ধরা ছোয়ার বাইরে থাকে। পানির উপরে বৃষ্টি, আর এক গভীর ডুবে পুকুরের একদম নিচে গিয়ে কাদার সাথে মিশে থাকার যে দুর্দান্ত রোমাঞ্চ - এখন ভাবতেই নস্টালজিক হয়ে যাই।
বাইরে বৃষ্টি। ভেনিসিয়ান স্লাইডটা ভেঙে ফেলে বৃষ্টি ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করছে! আহারে সেই হাফপ্যান্ট পরা দিনের বৃষ্টি!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।