আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

(RJ) আরজে সমাচার...!!!

গান বাঁধার চেষ্টা করি আর ঘুরে বেড়াই... ভুত এফএম ব্যাপারটা তেমন ভয়ঙ্কর না হলেও আমার জন্য ভীতিকর হইয়া দেখা দিয়াছে । সেখানেও রাসেল নামে একজন আরজে বিদ্যমান । যথারীতি তিনি অনেক পপুলার । আউলা হইল নাম বিভ্রাট । হঠাৎ কোন সুন্দরী বা সুন্দর (মানে নর) ফোন করিয়া জিজ্ঞেস করে আমি রাসেল কিনা ।

এরপর আমি আরজে রাসেল কিনা । এরপর আর কিছু জিজ্ঞেস না করিয়াই গুলির চেয়ে একটু বেশি স্পীডে কথা বলতে থাকে । বেশ কিছু গুলি আমার কানের পাশ দিয়ে চলে যাওয়ার পর আমি বুঝতে পারি ইহা সেই রাসেল ভাইয়ের ফোন এই রাসেলের নহে । তো সেই রাসেল মনে করিয়া যাহারাই ফোন করিয়াছি তাদের আমি অত্যন্ত আন্তরিক ভাবে বলিয়াছি ভাই আমি সেই আরজে রাসেল নই । আমিও একই কাজ করিয়া থাকি ।

তবে উনি অনেক গুণী, জনপ্রিয় একজন মানুষ । আমি ক্ষুদ্র সাধারন একজন মানুষ । একটা অনলাইন রেডিও তে একটু আধটু কাজ করি । কে শুনে কার কথা । ওগুলো নাকি আমার বিনয় ।

তাহারা তাহাদের কথা বলিয়াই যাইতে থাকে । যদি এইটুকু বুঝানোর অসাধ্য সাধন করিয়া ফেলি যে আমি সে নই তখন খুবই আন্তরিক গলায় জিজ্ঞেস করে ভাইয়া ঐ রাসেল ভাইয়ের নাম্বারটা একটু দেয়া যাবে ? আমি তাকে ময়মনসিংহের বাসায় হুংকার দিয়ে যদি বলি যে ভাই উনার নাম্বার নাই তবুও লাভ হইবেনা । চেষ্টা আগেও বিফলে গেছে । একবার বললাম আপু কারো নাম্বার তার অনুমতি ছাড়া অন্য কে দেয়াটা অপরাধ । মেয়ে বলল, ভাইয়া সুন্দরী একটা মেয়ের জন্য একটু অপরাধ করা যায় ।

আমি তাহার কথা মত তাহার জন্যই তাহার সাথেই একটু অপরাধ করিতে পারিতাম । কিন্তু করিলাম না । বলিলাম আপনার ভয়েস শুনিয়া আমি অনুমান করিবার চেষ্টা করিতেছি যে আপনি কতটা সুন্দরী । আপনি আমাকে কাল ফোন দিন । এরপর নাম্বারটা ''শিকারি'' লিখে সেভ করে রাখলাম ।

বেশির ভাগ সময় মোবাইল নাম্বার সংরক্ষন করিতে হয় ফোন না ধরিবার জন্য । এসব ক্ষেত্রে কাউকে বিশ্বাস করানোর চেয়ে নিজের নাম বদলে রাখা সহজ । কয়েকবার তো বহুল স্মার্ট কয়েকটা সুন্দরী ললনার হৃদয় আমার ফোনের মধ্যেই ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেল । নিজেকে অনেক অপরাধী মনে হচ্ছিল । এক ছেলে টানা একমাস ফোন করেছে ।

শেষে তাকে আমার রেডিও লিঙ্ক দিয়ে আমার শো শুনিয়ে আমার ফেসবুক দেখিয়ে আমি সেই রাসেল না এই রাসেল বলে তার কাছে নিজেকে প্রমান করতে সমর্থ হয়েছি । শুকুর আলহামদুলিল্লাহ । তো শেষ পযর্ন্ত এমন কয়েকজন আমার অতি বিনয় এবং ভদ্রতা এবং আরও কিছু মানবিক গুন দেখিয়া আমার ভক্তে পরিণত হইয়াছে । আমি তাহাদের এখনও ধিক্কার দিয়ে মনে করাইয়া দেই তোমরা আমার সিনিয়র এবং আমার চেয়ে অনেক বড় একজন মানুষের ভক্ত হইতে আসিয়া এই কি ভুল সম্পাদন করিয়াছ । তারা এরপরও আমাকে ছাড়িয়া যাই নাই ,অতঃপর ধরিয়া নিলাম সেই ভাইয়াকে পায়নাই তাই যায় নাই।

ছোট রেডিও ছোট মানুষ ছোট কাজ এবং যথেষ্ট পরিমানে অযোগ্য হওয়ার পরেও সেই রাসেল ভাইয়ের কারণ ছাড়াও অসংখ্য মজার দুখের সুখের স্মৃতি, প্রাপ্তি সমাপ্তির হাজারো চিত্র বিচিত্র ঘটনা ঘটিয়া গেছে এই কাজকারবারের জীবনে । যারা রেডিওতে অনেকদিন থেকে কাজ করে । তারা দুই তিনজন এক সাথে হলে এখনও দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া যে কথাটি বলে তাহা হইল ‘’রেডিওর সেই দিন আর নাই’’ । ঘটনা সত্ম ঘটনা সত্য । যে সময় প্রথম আরজে হিসেবে কাজ শুরু করি তখন পযর্ন্ত সুদিন বা দুর্দিন জানিনে তবে আরজে দেখিলে বা কারো সম্মুখে রেডিওতে কাজ করি বলিলে চোখ বড় বড় করিয়া ভিন গ্রহের প্রাণীদের মত করিয়াই দেখিত ।

মানে আরজে নিয়ে ভয়ানক এক টানা হেঁচড়া কাড়াকাড়ি অবস্থা ছিল । এরপর এমন দিনও দেখিয়াছি আরজে পরিচয় দিতে ভয়,লজ্জা,শঙ্কা সহ আরও অনেক কিছু ভাবিতে হইয়াছে । ইহা এমন এক কাজ না চাইলেও ভালবাসার সাথে মাঝে মাঝেই ঘৃণা মিক্সড হইয়া যায় । অতএব শুধু একটা পাইবার উপায় নাই । পাইলে দুইটাই পাইতে হইবে না হইলে রসগোল্লা ।

আরেকটা ঘটনা বলিয়া শেষ করিব । তখন আরজে নিয়ে মানুষের মাথা কিছুটা এলোমেলো । আমি ভদ্র মানুষ সারারাত জাগি দিনের বেলা ঘুমাই । আমার অফিস শুরু হয় দুপুরে লাঞ্চিত হইবার পর থেকে । কোন একটা ইভেন্টে নিয়ে খুব ব্যাস্ত আর কঠিন সময় কাটিয়ে ঘুমাতে গেছি প্রায় তিনদিন পরে তাও ভোর রাত ৩ টার দিকে ।

সাড়ে ৩ টার দিকে মধুর সুরে মোবাইল রিংটোন বেজে উঠল । এখানে বলে রাখি আমি তখন সেই পরিমান অকাজের সাথে জড়িত তাই চাইলেও মোবাইল নিরব করিয়া রাখিবার উপায় ছিলনা । প্রিয় গানের রিংটোনে রিং শুনিয়ে মনে হইল কানে কেউ গরম শিসা ঢালিয়া দিয়াছে । প্রয়োজনীয় ভাবিয়াই রিসিভ করিলাম । ইহার পর যাহা ঘটিল সেটা অন্য সময় হলে হয়ত হতোনা ।

সুন্দরী ললনা কল্পনায় দেখিয়া হালকা চালে আমিও হয়ত গদগদ হয়ে অথবা নিদেন পক্ষে ভদ্র করিয়া কিছু একটা বলিতাম । কিন্তু এত ক্লান্তি নিয়া যখন এত সাধনার পর নিদ্রাদেবীর কোলে মাথা ঠেকাইয়াছি ঠিক তখনই এরকম অনিষ্ঠে বিরক্তির মাত্রা রিক্টার স্কেল অতিক্রম করিয়া রাস্তা অব্দি চলিয়া গেল । মতামত জানাইতে সমালোচনা করিতে অথবা প্রেম ভালবাসা যাহাই নিবেদন করুক অন্তত অপরিচিত কাউকে প্রথম ফোন করিবার কোন সুস্থ সময় রাত ৩ টা নয় । এক সুমিষ্ট কণ্ঠ আমাকে শুধাইলো । হ্যালো , আমি মনে মনে কহিলাম আর কত হেলিব রীতিমত শুতিয়াই আছি আমি ।

প্রশ্নঃ আপনিই কি রেডিও সার্কেলের আরজে রাসেল ? এই মধুর আনকমন এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন শুনিয়া আমার সকল বাঁধ ভাঙ্গিয়া গেল । আমি আবেগে আপ্লুত হইয়া দুঃখ কষ্ট এবং কান্না চাপিয়া পিউর অসহায় মানব শিশুর মত বলিলাম । হ ! আমিই সেই অপরাধী, আমারে মাফ কইরা দেওন যায়না আফা ??!!! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২৭ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।