প্রান্তরে প্রান্তরে কুড়িয়ে ফিরি ধূলিকনা
ক'দিন ধরে সামহোয়ার ইন অস্থির। বিভিন্ন রথী মহারথীদের আবির্ভাবে কর্তৃপক্ষও দিশেহারা। কোনটা উচিত বা উচিত নয় এর সুরাহা করাও তাঁদের কাছে বেশ জটিল কর্ম বলেই মনে হচ্ছে। অথচ কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয়ে তড়িত সিন্ধান্ত অত্যন্ত প্রয়োজন। কিছু সার্বজনীন ইস্যুতে তাঁদের "হু কেয়ারস" এ্যাটিটুটি পুরো ব্লগ ম্যানেজমেন্টকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
বিশেষতঃ মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি চরম অবমাননা বিষয়টিতে গা ছাড়া ভাবের প্রকাশ অনেককেই দারুনভাবে হতাশ করেছে।
অনেকেই এ প্রসঙ্গে তাঁদের ব্যক্তিগত মতামত ব্যক্ত করেছেন। কোনটা গ্রহণ বা বর্জন হয়েছে সেদিকে না গিয়ে শুধু এটুকু বলা যেতে পারে যে, দেশ, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ইত্যকার বিষয়গুলো অত্যন্ত ¯স্পর্শকাতর এবং এই সকল বিষয় নিয়ে রসিকতা এক অর্বাচীনের পক্ষেই সম্ভব। অথচ কর্তৃপক্ষ অভাবিতভাবে নীরব থেকেছেন। যা মেটেই কাম্য ছিল না।
ব্লগ ছেড়ে যাওয়া নিয়ে অনেকের মতামতের সাথে আমি একমত নই। কেন ছাড়তে হবে ব্লগ? বিভিন্ন মত, আদর্শ, অনাদর্শ(!) সবই সমাজে বিদ্যমান পক্ষগুলোর প্রতিচ্ছবি। বাস্তবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ভিন্ন মত, আদর্শ বা দর্শনের মানুষের সঙ্গে ব্যক্তিক বা সামাজিক মিথস্ক্রিয়া একটি অবশ্যম্ভাবী বিষয়। স্বাধীনতা বিরোধী মানসিকতা সম্পন্ন অফিস সহকর্মি কিংবা বসের সাথে কেউই কাজ করছেন না সমীকরণটি এত সহজ নয়। চরম বাস্তবতা হলো কাজ করতে হয় বা অনেকেই করছি।
হয়ত ঘৃণাভরা একটা দৃষ্টি তাঁদের দিকে সবসময় ছুঁড়ে দিতে চাই এবং এটাই খুব স্বাভাবিক। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যেতে পারে এটাও বুঝতে হবে। সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন অফিস বসও যদি তিরিশ লক্ষ শহীদ নিয়ে হাল্কা রসিকতাপূর্ণ আলাপচারিতায় লিপ্ত হন একমাত্র দুমূর্খের পক্ষেই সম্ভব এটা মাথা পেতে সহ্য করা। এই কথাগুলোর অবতারণা এ কারনে যে আমরা প্রতিনিয়ত এইসব জটিলতার মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছি বা করতে হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে জীবন থেকে পালিয়ে বেড়াতে হবে বা এস্কেপিজমই আমাদের একমাত্র পথ এটা কোন যুক্তি হতে পারে না।
এক সহব্লগারকে ঠিক যেমনটি বলেছিলাম, "শহরের রাস্তার বাঁকে বাঁকে অসংখ্য খোলা ডাস্টবিন আমাদের চোখে পড়ে। আমরা এখনও অতটা সভ্য হয়ে উঠতে পারিনি। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতাও আমাদের রয়েছে। তাই বলে পুরো শহরকে ডাস্টবিন বানানোর প্রক্রিয়াকে নিরুৎসাহিত না করে বরং শহর ছেড়ে চলে যাওয়াকে যুক্তিযুক্ত মনে করার কোন কারণ রয়েছে বলে অমার মনে হয়না। "
আগামি প্রজন্মের জন্য একটা ভয়ংকর সমাজ নিশ্চয়ই কারো কাম্য নয়।
সে কারণেই একটা ইতিহাস সচেতন ও বিজ্ঞান মনস্ক প্রজন্ম বিনির্মাণে যার যার অবস্থান থেকে একটা নির্দিষ্ট অবদান নিশ্চিত করা অতি আবশ্যিক কর্তব্য বলেই আমি মনে করি। এই ক্ষেত্রে ব্লগ থেকে সরে গিয়ে ক্ষতিকর নিয়ামকগুলোর প্রভাব বিস্তৃত করার মাধ্যমে সমাজের অবক্ষয়কেই উৎসাহিত করা হয় না কি? সংশ্লিষ্ট ব্লগারগণ ভেবে দেখবেন নিশ্চয়ই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।