সময়, কবিতা, ছোটগল্প, দেশ, দেশাচার
দু'দিন আগে টেলিভিশনে একটা রিপোর্ট দেখে মন খারাপ হয়ে গেল খুব। পৃথিবীতে আমাদের দেশের মতো গরীব দেশগুলোকে ধনী দেশগুলো কতোটা নির্লজ্জ ভাবে শোষন করে, তার চিত্রটা জার্মান টিভিতেই দেখে আবারো টের পেলাম কোন ভুবনে তলিয়ে আছি আমরা।
ইওরোপীয়ান কমিউনিটি তাদের সদস্য দেশগুলোর জেলেদেরকে ভিভিন্ন খাতে নানা ধরণের অনুদান দিয়ে থাকে। তাদের জাহাজ, জাহাজের খুচরা যন্ত্রাংশ, জাল সবকিছুতেই পেছেনই বিরাট একটা অংশ অনুদান হিসেবে থাকে। এতে যে হারে মাছ ধরা হয়, তাতে ইউরোপীয়ান সমুদ্রসীমার এলাকাগুলো মোটামুটি মাছশুন্য হয়ে পড়েছে।
অনুদান যতই দেয়া হোক না কেন, ইউরোপীয়ান খাবার টেবিলে পরিমিত মাছের সাপ্লাই করা দিনে দিনেই কঠিন হয়ে পড়ছে।
সুতরাং নতুন পথ খুজে বের করতে হয়েছে কমিউনিটির হর্তাকর্তাদের বেলজিয়ামের ব্রাসেলসের সুরম্য দালানে বসে বসে। এবার অনুদানের মাধ্যমে আফ্রিকার উপকুলিও দেশগুলোর সমুদ্রসীমার এলাকাগুলোও মাছ ধরার জন্যে ইজারা নিয়ে নেয়া হচ্ছে। এর পেছনে কাজ করছে সেসব দেশগুলোর দারিদ্রতার সুযোগ আর বিভিন্ন রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক চাপ। দামী দামী মাছের সুস্বাদু মেনুতে ভরে উঠছে আবার ইউরোপীয়ান খাবার টেবিল আর রেষ্টুরেন্টগুলো।
একটা আফ্রিকান গরীব জেলে তার ট্রলার নিয়ে ২১ বার গভীর সমুদ্রে গিয়ে যতটা মাছ ধরবে, একজন ইওরোপীয়ান জেলে তার আধুনিক জাহাজ এ যন্ত্রপাতির কল্যানে ধরে আনছে তা একবারেই। জাহাজেই কাটা, সংরক্ষণ ও প্যকিংএর বন্দোবস্ত। প্রায় এক তৃতীয়াংশ মাছ এখানকার খাবার টেবিলের যোগ্য নয় বলে ফেলে দেয়া হয় সমুদ্রে। মাছের ধ্বংসের সাথে সাথে দুষিত হচ্ছে পরিবেশ। স্পেনের বন্দরে পৌছানোর সাথে সাথেই এসব মাছ চালান হয়ে যায় সদস্য দেশগুলো বন্দরে বন্দরে।
ইওরোপীয়ান সংবাদমাধ্যমগুলো এর প্রতিবাদ করলেও তাকে উচ্চকিত প্রতিবাদ বলা যেতে পারে না। নিজের রসনা আর উদরপুর্তির কথা ভাবলে উচ্চকিত হবার কথাও নয়। হয়তো তখনই উচ্চকিত হবেন তারা, যখন আফ্রিকার উপকুলেও ফুরিয়ে আসবে মাছের ভান্ডার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।