স্মৃতিচারণ ও এলোমেলো ভাবনা। বেশিরভাগই জগাখিচুড়ি।
হঠাৎ মনে পড়ে গেল। কলেজে পড়ি তখন। আমাদের ইংরেজি ম্যাডাম ছিলেন খুবই একরোখা টাইপের, বদরাগী ও মাথাগরম প্রজাতির মানুষ।
মহা খাটাশ কিসিমের মহিলা। তবে পড়াতেন মনে হয় ভাল। গল্পের এক লাইন মোটামুটি ৫ মিনিট ধরে প্যান প্যান করে যেতেন। খুবই বিরক্তিকর বিষয়। আরে বাবা একটা জিনিস নিয়ে এত ঘ্যানঘ্যানানির কি দরকার আছে।
ইংরেজি ভাষায় লেখা আছে, বাংলায় অনুবাদ করে দিলেই তো মামলা চুকে যায়। লেবু কচলে তিতা বানানোর দরকারটা কি?
আমি কখনই ম্যাডামের ক্লাসে মনোযোগ দিতে পারতাম না। ক্লান্ত দৃষ্টি খালি চলে যেত বাইরে। অলস দুপুরের ক্লান্ত প্রকৃতি বা গোলাপের ঝাড় বা মাঠের কোনায় মেশিন দিয়ে মালির ঘাসকাটা দেখতে ভালো লাগত। ক্লাস কোথায় যাচ্ছে মনে থাকত না।
ধরা পড়তাম প্রায়ই। ম্যাডাম রেগে ফায়ার হয়ে যেতেন। বার বার জিজ্ঞাসা করতেন বাইরে কি দেখছি? আরে মুসিবত যত বলি কিছু না, উনি তত টেম্পার লুজ করেন। বিরক্ত হয়ে এক পর্যায়ে বলতে হত, শামসু ভাইয়ের ঘাস কাটা দেখছিলাম। আর সাথে সাথে শুরু হয়ে যেত ম্যাডামের খ্যাঁচ-খ্যাঁচানি।
সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যেত মাঝে মাঝে। প্রথম প্রথম উনি আমাদের সাথে বেশ প্রহসন করতেন। জিজ্ঞাসা করতেন এই অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কিভাবে করা যায়। আমরা চুপ থাকতাম আর উনি তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠতেন। এরকম ফ্যালাসি তৈরি করে একসময় বলতেন "এট লিস্ট ইউ ক্যান সে স্যরি ফর হোয়াট ইউ হ্যাভ ডান"।
এটাই ছিল আমাদের দরকার। এরপর থেকে কিছু হলেই আমরা সবার আগে বলে উঠতাম "স্যরি ম্যাডাম"। ম্যাডাম চুপ হয়ে যেতেন। বেশ মজাতেই ছিলাম কিছুদিন। এরপর স্যরি বললেই ম্যাডাম খেঁকিয়ে উঠা শুরু করতেন।
বলতেন "স্যরি ডাজ নট কভার এভরিথিং"। বড়ই যন্ত্রণায় কেটেছে কলেজের বাকি দিনগুলো।
তবে একটা লাভ হয়েছিল আমার ম্যাডামের ক্লাসে একই প্যাঁচাল বার বার শুনতে শুনতে অনেক কবিতার লাইন মুখস্হ হয়ে গিয়েছিল, তাই পরীক্ষার খাতায় বমি করতে তেমন সমস্যা হত না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।