আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১১ জানুয়ারি যা ঘটেছিল মেজর জেনারেল রেজাকুল হায়দার চৌধুরীকে সেনা পন্সধান করার পদক্ষেপ নিয়েছিল বিএনপি



ঢাকা থেকে বিশেষ প্রতিনিধি : বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালনায় ক্ষমতার পট পরিবর্তনে অস্খির রাজনীতি দায়ী নাকি সীমাহীন দুর্নীতি এর প্রধান কারণ, এ নিয়ে তর্কযুদ্ধ অনেকেই করছেন। বর্তমান সরকার ব্যবস্খা কায়েমে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতাকে অনেকে কারণ হিসাবে চিহ্নিত করছেন। সচেতন ব্যক্তিরা জানেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ডক্টর ফখরুদ্দীন আহমেদের তত্ত্ববধায়ক সরকারের আসীন হওয়ার নেপথ্যে কাজ করেছে সেনাবাহিনী। কিন্তু কেন সেনাবাহিনী গত ১১ই জানুয়ারী হঠাৎ করে নতুন তত্ত্ববধায়ক সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে ডক্টর ইয়াজউদ্দিনের বিতর্কিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দিয়েছিল, তা অনেকের অজানা। সেদিন প্রেসিডেন্ট ডক্টর ইয়াজউদ্দিন আহমেদ বর্তমান সেনা প্রধানকে অপসারণ করে তৎকালীন ডিজিএফআই-এর ডিজি মেজর জেনারেল রেজাকুল হায়দার চৌধুরীকে সেনা প্রধান করার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।

এবং প্রেসিডেন্ট তা করতে যাচ্ছিলেন হাওয়া ভবানের ইঙ্গিতে (বলা যায় নির্দেশে)। এ খবর আকস্মিকভাবে জেনে গিয়েছিলেন সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদ। বুদ্ধিমান এই সেনা প্রধান কালক্ষেপণ করেননি। তিনি নিয়েছিলেন তড়িৎ উদ্যোগ। ফলে হাওয়া ভবনের সাজানো খেলা সফল হয়নি সেদিন।

আর এর মধ্য দিয়ে ব্যর্থ হয়ে যায় হাওয়া ভবনের ষড়যন্ত্র। দেরীতে হলেও সেদিনের শ্বাসরুদ্ধকর ঘটনার কথা ঢাকার সচেতন মহল জানছে। তবে এ নিয়ে কেউ প্রকাশ্যে কোন কথা বলছেন না। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, ১১ই জানুয়ারী সেনা প্রধান জানতে পারেন তাকে আজ অপসারণ করা হচ্ছে। তার স্খলে সেনাপ্রধানের দায়িত্বভার দেয়া হচ্ছে মেজর জেনারেল রেজাকুল হায়দার চৌধুরীকে।

ফাইল তৈরি। কিছুক্ষণের মধ্যে ফাইলে স্বাক্ষর করবেন প্রেসিডেন্ট। সেনা প্রধানকে এ খবর টেলিফোনে জানিয়ে দেন প্রেসিডেন্টের এডিসি (তার বিশ্বস্খ সেনা কর্মকর্তা) মেজর হুমায়ুন। সেনাপ্রধান তখন মেজর হুমায়ুনকে ফাইলটি এক ঘন্টার জন্য আটকে রাখতে বলেন। ঐ সেনা কর্মকর্তা বাথরুমে গিয়ে বসে থাকেন।

এ সময়ে সেনা প্রধান পর্যায়ক্রমে ৯ জন জেনারেল, বিমান ও নৌ বাহিনীর প্রধান এবং ৯ ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মাসুদের সঙ্গে টেলিফোনে এ ঘটনা জানান। মেজর জেনারেল মাসুদ সাঈদ ইস্কান্দারের ভায়রা হলেও সেনা প্রধান মঈন ইউ আহমেদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুও। রেজাকুল হায়দার চৌধুরীকে সেনাপ্রধান করার ব্যাপারে সকলে দ্বিমত পোষণ করেন এবং হাওয়া ভবনের ইঙ্গিতে প্রেসিডেন্টের এই অন্যায় পদক্ষেপের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্খা গ্রহণের সিদ্ধান্ত তারা নেন তাৎক্ষণিকভাবে। এরপর সেনাপ্রধান ডিএমপি্থর কমিশনারকে ফোন করে ফার্মগেট থেকে হোটেল সোনার গাঁ্থর সামনের রাস্তায় যানজট সৃষ্টি করতে বলেন। এখানে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট।

এই যানজটে আটকে যান মেজর জেনারেল রেজাকুল হায়দার চৌধুরীর গাড়ি। সেনাপ্রধান, তিনবাহিনীর প্রধান এবং মেজর জেনারেল মাসুদ ভিন্ন পথে রওনা হন বঙ্গভনের দিকে। বঙ্গভবনে প্রথমে পৌঁছান মেজর জেনারেল মাসুদ। তিনি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করে জরুরি মিটিংএর কথা বলেন। তিনি প্রেসিডেন্টের সামনে প্রায় ১৫ মিনিট বসে থাকেন এবং প্রেসিডেন্টের প্রেস উপদেষ্টা মোখলেসুর রহমান চৌধুরীকে অন্যরুমে চলে যেতে বলেন।

কিন্তু প্রেসিডেন্ট এর আপত্তি জানান। মোখলেসুর রহমান চৌধুরী জানতে চান জরুরি মিটিং কেন। এক সময় সেনাপ্রধান অন্য দুই বাহিনীর প্রধানকে সঙ্গে করে (১৭টি গাড়ির বহর নিয়ে) বঙ্গভবনের প্রবেশ করেন। সেনাপ্রধান প্রেসিডেন্টের কাছে সম্ভাব্য নতুন সেনা প্রধানের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চান। এ সময় মেজর হুমায়ুন প্রেসিডেন্টের সামনে ঐ ফাইলটি নিয়ে আসলে তা প্রেসিডেন্টের সামনে ছিঁড়ে ফেলা হয়।

এরপর দেশের সার্বিক নাজুক পরিস্খিতির ব্যাখ্যা করে সেনা প্রধান প্রেসিডেন্টকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ এবং জাতির উদ্দেশ্যে তার ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে ভাষণ দেবার অনুরোধ জানান। এ সময় মোখলেসুর রহমান চৌধুরী প্রেসিডেন্টের ভাষণ দেখে দেবার ইচ্ছা ব্যক্ত করলে তিনি নাজেহাল হন। প্রেসিডেন্টের ভাষণ লিখেন মেধাবী, চৌকুস ও ব্রিলিয়ান্ট মেজর হিসাবে সেনাবাহিনীতে পরিচিত এবং সমাদৃত মেজর রেজা। প্রেসিডেন্ট প্রকৃত অবস্খা বুঝতে পেরে সেনা কর্মকর্তাদের কথামত কাজ করেন। সেদিন তিনবাহিনীর কর্মকর্তারা খবর না পেলে এবং তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে না পারলে হয়তো দেশে অন্য পরিস্খিতি বিরাজ করতো।

যা বিএনপি্থর অনুকূলে থাকতো। সূত্রগুলো জানিয়েছে, মেজর জেনারেল রেজাকুল হায়দার চৌধুরত্ম সঙ্গে তারেক জিয়ার গভীর সখ্যতা ছিল। বিদেশ ভ্রমণে তিনি তারেক জিয়ার সফর সঙ্গী হয়েছিলেন। এ ঘটনা নজীরবিহীন। বর্তমান সেনাপ্রধানকে (চাকরির বয়স থাকলেও) বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান এবং মেজর জেনারেল মাসুদকে (জ্যৈষ্ঠতার প্রশ্নে) লংঘন করে সেদিন মেজর জেনারেল রেজাকুল হায়দার চৌধুরীকে সেনাপ্রধান নিয়োগ করতে চেয়েছিল বিএনপি।

কিন্তু এই প্রচেষ্টা বিএনপির জন্য বুমেরাং হয়ে যায়। Source: Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।