যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা এই কৃতিত্ব দেখিয়েছেন।
সম্প্রতি নেচার সাময়িকীতে এই আবিষ্কারের খবর প্রকাশ করা হয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
বানরের ওই ভাইরাসটির নাম এসআইভি (সিমিয়ান ইম্যুনোডিফেসিয়েন্সি ভাইরাস)। এসআইভি আক্রান্ত বানরের শরীরে নতুন আবিষ্কৃত টিকাটি প্রয়োগ করে দেখা গেছে তারা এসআইভি সংক্রমণ থেকে মুক্ত হতে পেরেছে।
১৬টি বানরের শরীরে টিকাটি প্রয়োগ করে ৯টিকে রোগমুক্ত করা গেছে।
ওধুষটির আবিষ্কারক যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তারা একই পদ্ধতি এইচআইভি আক্রান্ত মানুষের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করে দেখতে চান।
বিজ্ঞানীদের অন্যতম ওরেগন স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিন ও জিন থেরাপি ইন্সটিটিউটের প্রফেসর লুয়িস পিকার বলেছেন, “রোগ মুক্তির দাবি করা সবসময়ই কঠিন, সবসময়ই ভাইরাস রয়ে যাওয়া এমন একটি কোষ থেকে যেতে পারে যা আমরা ধরতে পারিনি। কিন্তু এক্ষেত্রে বলা যায় এই বানরগুলোর শরীরে আর কোনো ভাইরাস নেই। ”
বিজ্ঞানীরা এইচআইভি থেকে একশ’ গুণ বেশি প্রাণসংহারী এসআইভি-ম্যাক২৩৯ কে তাদের গবেষণার জন্য বেছে নেন। এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত বানরা সংক্রমণের দুবছরের মধ্যেই মারা যায়।
তবে কয়েকটি বানরজাতীয় প্রাণীর মধ্যে এই ভাইরাসটিকে প্রতিরোধ করার সক্ষমতা লক্ষ করা যায়।
সাইটোমেগালোভাইরাস (সিএমভি) নামের আরেক ধরনের ভাইরাস ব্যবহার করে টিকাটি তৈরি করা হয়েছে। চর্মরোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাস পরিবারের সদস্য এটি।
সিএমভি’র সংক্রমণ শক্তিকে ব্যবহার করে টিকাটি তৈরি করেন বিজ্ঞানীরা। প্রাণীর শরীরে সিএমভি’র সংক্রমণ শক্তি ছড়িয়ে পড়ার পর এটি রোগ সৃষ্টি না করে এসআইভি’র সঙ্গে লড়াই করার জন্য নিজেকে তৈরি করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার অংশ হয়ে যায়।
“এটি একটি সশস্ত্র বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে, এরা অনির্দিষ্টকাল ধরে সবসময় শরীরের সব টিস্যুতে টহল দেয়,” ব্যাখ্যা করে বলেন প্রফেসর পিকার।
বিজ্ঞানীরা রেসাস ম্যাকাউ বানরের শরীরে টিকাটি প্রয়োগ করে এদের এসআইভি সংক্রমিত করেন। তারা দেখতে পান, প্রথমে সংক্রমণ শুরু হয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ল। কিন্তু এরপরই বানরের শরীর প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করলো। ওই ‘সশস্ত্র বাহিনী’ খুঁজে খুঁজে সব ভাইরাসকে সনাক্ত করে ধ্বংস করে দিল।
টিকা প্রতিরোধে সুস্থ হয়ে ওঠা এসব বানর দেড় থেকে তিন বছর ধরে ভাইরাসমুক্ত অবস্থায় দিব্যি বেঁচে আছে। তবে বানর দলের অর্ধেকের মধ্যে টিকাটি কাজ করলো আর বাকী অর্ধেকে কেন করলো না, এটি বের করতে এখন নতুন গবেষণা শুরু করেছেন এই বিজ্ঞানীরা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।