আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'ফুটবলে প্রিমিয়ার লিগ জরুরি'

ফুটবলে পেশাদার লিগ চালুর তিন মৌসুমের মাথায় দেশের নন্দিত সাবেক ফুটবলার দেওয়ান শফিউল আরেফীন টুটুল সাংবাদিকদের এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ লিগ মানায় না। ফুটবলের বৃহত্তর স্বার্থে এ পেশাদার লিগ বন্ধ করা উচিত। তা না হলে জনপ্রিয় এ খেলা অন্ধকারে হারিয়ে যাবে। টুটুলের এ বক্তব্য দেখে তখন ফেডারেশনের অনেকে হেসে বলেছিলেন ক্রিকেটের লোক আবার ফুটবল নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন কেন? বিস্ময় হলেও সত্যি যে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ব্যর্থতার পর অনেকে এখন টুটুলের বক্তব্যের সঙ্গে সুর মেলাচ্ছেন। সাফ ব্যর্থতা নিয়ে এখন চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে।

কেউ খেলোয়াড় কেউবা আবার কোচের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তবে এটা ঠিক এবারে বাংলাদেশ পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে সাফে অংশ নিয়েছিল। বাফুফে কোনো কিছুরই ঘাটতি রাখেনি। তাহলে এমন ভরাডুবি ঘটল কেন? বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলেছেন, শুরুটা ভালো করলেও শেষের দিকে ছেলেরা কেন পেরে উঠছে না তা খুঁজে বের করতে হবে। জাতীয় দলের সাবেক দুই ফুটবলার শেখ মো. আসলাম ও ছাঈদ হাসান কাননও সভাপতির সঙ্গে একমত।

ফুটবল বাঙালির প্রাণের খেলা, তাই আন্তর্জাতিক পর্যায় বিশেষ করে সাফে কেন ব্যর্থ হচ্ছি তা দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে। আসলাম বলেন, ফেডারেশনের কমিটিতে আছি বলে ব্যর্থতা নিয়ে বেশি কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে ফুটবলার হিসেবে আমি কিছু পরামর্শ দিতে পারি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পেশাদার লিগ। এটা ঠিক বর্তমান যুগে প্রফেশনাল লিগ দরকার আছে।

ফিফা বা এএফসি সেদিকটা চিন্তা করে বাংলাদেশে পেশাদার লিগ চালুর নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ লিগ আবার উপযুক্ত নয়। দেশের ফুটবলের মান আগে যে আহামরি ছিল তাও নয়। কিন্তু লক্ষ্য করে দেখবেন পেশাদার লিগ মাঠে গড়ানোর পর ফুটবলে ব্যাপক অধঃপতন শুরু হয়েছে। নতুন কোনো খেলোয়াড় সৃষ্টি হচ্ছে না।

ছয় বছর চলে গেলেও বাংলাদেশে পেশাদার লিগে নিয়মনীতি কিছুই মানা হচ্ছে না। আসলে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় তা সম্ভব নয়। আসলাম বলেন, লিগ খেলছে ১০/১২টি দল, প্রতিটি দলে আবার চার জন করে বিদেশি। নতুন ফুটবলারে সন্ধান যে মিলবে সে সুযোগ কোথায়? ভালোমানের ফুটবলার নেই বলেতো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এত ভরাডুবি। হ্যাঁ, একেকজন খেলোয়াড় অনেক অর্থ পাচ্ছেন।

কিন্তু মান বিচার করলে তাদের পারফরম্যান্স হতাশাজনক। এ অবস্থায় বাফুফের উচিত হবে পুনরায় ঢাকা প্রিমিয়ার ও প্রথম বিভাগ চালু করা। তাই বলে আমি পেশাদার লিগ বন্ধ করতে বলছি না। আগে নিটল টাটা জাতীয় লিগ যে পদ্ধতিতে হতো সেভাবে পেশাদার লিগ চালু করা যেতে পারে। এতে করে এএফসি কোনো আপত্তি জানাবে বলে মনে হয় না।

তাছাড়া ঢাকার বাইরের লিগগুলো নিয়মিত করা উচিত। এতে হুট করে ফুটবলে যে পরিবর্তন ঘটবে তা বলব না। প্রিমিয়ার লিগ শুরু হলে দেখবেন নতুন ফুটবলারের আত্দপ্রকাশ ঘটবে।

আসলাম বলেন, সালাউদ্দিন ভাই এবার কম চেষ্টা করেননি। কিন্তু ভালোমানের খেলোয়াড় ছিল না বলে দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতি করার পরও কোনো লাভ হয়নি।

এখন পুনরায় প্রিমিয়ার বা প্রথম বিভাগ লিগ চালু করলে দেখবেন দুর্দশা কেটে গেছে।

ছাঈদ হাসান কানন বলেন, সিদ্ধান্ত ছিল দুই মৌসুম পেশাদার লিগ চালুর পর পুনরায় প্রিমিয়ার ও প্রথম বিভাগ লিগ মাঠে নামানো হবে। অথচ সেই সিদ্ধান্তের কোনো প্রতিফলন দেখছি না। বাফুফের চিন্তা করা উচিত পেশাদার লিগে মাত্র ১০/১১টি দল অংশগ্রহণ করে। অতীতে যেমন ছিল নিটল টাটা লিগ।

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ছিল নতুন ফুটবলার সন্ধানে প্রধান ঠিকানা। বাস্তবে দেখুন এই লিগ বন্ধের পর নতুন কোনো ফুটবলারের সন্ধান মিলছে না। ভালোমানের খেলোয়াড় নেই, অথচ আনা হচ্ছে ভালোমানের বিদেশি কোচ। এতে যা হওয়ার তাই হয়েছে।

কানন বলেন, এখন ফুটবলে যে অবস্থা তাতে হুট করে উন্নয়ন সম্ভব নয়।

অদূর ভবিষ্যতে যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেই পরিকল্পনা নিতে হবে। পেশাদারের পাশাপাশি ঢাকা প্রিমিয়ার অন্য জেলাতে লিগ চালু করাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। পেশাদার লিগকে গুরুত্ব দিয়ে এগুলে ফুটবলে মঙ্গলকর কিছু হবে বলে মনে হয় না।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.